১২ বছরে ‘রকমারি’র পাঠকের কাছে ভরসার নাম হয়ে ওঠার নেপথ্য-কথা
অনলাইনে বই কেনার কথা ভাবলেই সবার আগে যে নামটি সামনে আসে তা হলো রকমারি। বইপড়ুয়াদের কথা ভেবেই ২০১২ সালের আজকের দিনে যাত্রা শুরু করেছিল রকমারি ডটকম। অন্যরকম গ্রুপের অন্যরকম ওয়েব সার্ভিসেস লিমিটেডের নিয়ন্ত্রণাধীন একটি ই-বাণিজ্য সাইট রকমারি দেখতে দেখতে এক যুগে পা দিলো।
একদল বুয়েট তরুণের আপ্রাণ চেষ্টায়
১২ বছর আগে ইন্টারনেট বা অনলাইন থেকে জিনিসপত্র কেনার প্রচলন ছিল না বললেই চলে। বরং অনেকের জন্যই ছিল এটি অবাক করা কিংবা অবাস্তব একটি ব্যাপার। ঠিক সেসময়ই বুয়েটের একদল তরুণের আপ্রাণ চেষ্টায় দেশের প্রথম ই-কমার্স সেবা অনলাইন বইয়ের দোকান রকমারি ডটকমের যাত্রা শুরু হয়।
মোট পাঁচজনের সে দলটিতে ছিলেন মাহমুদুল হাসান সোহাগ, আবুল হাসান লিটন, এহতেশামুল শামস রাকিব, জুবায়ের বিন আমিন ও মো. খায়রুল আনাম। ছাত্রাবস্থাতেই অনেকগুলো প্রজেক্ট নিয়ে কাজ করেছেন বর্তমানে রকমারির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকা মাহমুদুল হাসান সোহাগ। এর আগে তারা তৈরি করেছিলেন অন্যরকম ওয়েব সার্ভিসেস।
২০১১ সালের দিকে ইচ্ছে জাগে অ্যামাজন ডটকমের মতো একটা প্ল্যাটফর্ম তৈরি করতে। সোহাগ জানান, 'ছোটবেলায় যখন বই কিনতে আসতাম নিউমার্কেটে, এত এত বই দেখে লোভ হতো। তাই বই একটা পছন্দের জায়গা। সেই সঙ্গে অনলাইনে বই বিক্রি তুলনামূলক সহজ। শাড়ি-কাপড়ের মতো তা ধরে দেখার কোনো বিষয় নেই।'
বর্তমানে বইয়ের টাইটেল প্রায় ৩ লাখের মতো
এভাবেই বই দিয়েই শুরু হলো রকমারির পথচলা। শুরুতে ছিল প্রায় দশ হাজার বই। যার বেশিরভাগই ফিকশন বা গল্প উপন্যাস। যেগুলো বাজারে অনেকটাই দুষ্প্রাপ্য। প্রথম প্রথম সাত–আট বছর শুধু ফিকশন বা সৃজনশীল বই নিয়েই কাজ করেছে রকমারি। এরপর গত তিন–চার বছরে অ্যাকাডেমিক বইও যুক্ত হয়েছে। বর্তমানে বইয়ের টাইটেল আছে প্রায় তিন লাখের মতো। সেখানে দুষ্প্রাপ্য, দেশি-বিদেশি, বেস্টসেলার, অনুবাদ, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, আত্মউন্নয়নমূলক, ধর্মীয়, অ্যাকাডেমিক সব ধরনের বই মেলে।
পাঠক বা ক্রেতার যেন বই খুঁজতে গিয়ে ঝামেলা পোহাতে না হয় তাই প্রকাশনাভিত্তিক, লেখকভিত্তিক, ক্যাটাগরিভিত্তিক বইগুলো সাজানো আছে রকমারির ওয়েবসাইটে। সে সঙ্গে রয়েছে বেস্টসেলার বা বহুল পঠিত বইগুলোর নাম দেখার সুবিধাও। ৫০টিরও বেশি ক্যাটাগরি ও সহস্রাধিক বিষয়ভিত্তিক ক্যাটাগরি রয়েছে রকমারি ডট কমে। এছাড়া অনলাইন সাইটটিই এমনভাবে বানানোর দিকে জোর দেওয়া হয়েছে, যেন গ্রাহক বা ক্রেতা তার চাহিদা, পছন্দ অনুযায়ীই তার হোমপেজটি দেখতে পান।
'একটু পড়ে দেখুন'
কাগজের বইয়ের পাশাপাশি দেশের সবচেয়ে বড় এই অনলাইন গ্রন্থাগারে ১০ হাজারের বেশি ই-বুক রয়েছে। বিনামূল্যে নির্দিষ্ট ই-বুক পড়ার সুযোগের পাশাপাশি ছাপা বইয়ের অর্ধেকের কম খরচে ই-বুক কেনা যায় রকমারিতে। রকমারির ই-বুক গ্রন্থাগারে ফিকশন, নন-ফিকশন, ইসলামি, শিশু-কিশোর, ক্যারিয়ারসহ প্রায় সব ধরনের বই রয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির 'একটু পড়ে দেখুন' সুবিধা কাজে লাগিয়ে ছাপা বই কেনার আদলে ই-বুকের বিভিন্ন অংশ পড়া যায়। শুধু তা-ই নয়, বই সম্পর্কে অন্যদের মতামত জানার সুযোগও মেলে।
তবে রকমারির শীর্ষ বিক্রিত বইগুলোর মধ্যে ধর্মীয় বই, আত্মউন্নয়নমূলক বই, গল্প উপন্যাস এ তিন ধরনের বই বেশি থাকে বলে জানান সোহাগ। ২০১২ সালে যখন শুরু করেন, তখন ছিল ফিকশন বা গল্প উপন্যাসের বই। ২০১৩-তে এসে সে জায়গাটা নিয়ে নেয় কম্পিউটার প্রোগ্রামিং, আর্নিং, ফ্রিল্যান্সিং, আউটসোর্সিংয়ের বই। এ ধারা অব্যাহত থাকে ২০১৪–১৫ অবধি। আবার ২০১৮-এর শীর্ষ বই ছিল নন ফিকশন, ক্যারিয়ার, আত্মউন্নয়নমূলক বই। ২০১৯ সালে এসে এ ধারায় দেখা যায় নবীন লেখক এবং নবীন প্রকাশকদের বইয়ের জয়জয়কার।
'বিজনেসে চেঞ্জ আসতে শুরু করে তখনই'
১০ হাজার বই থেকে প্রায় তিন লাখ বইয়ে পৌঁছাতে কোন সিদ্ধান্তটি সবচেয়ে বেশি ভুমিকা রেখেছে জানতে চাইলে সোহাগ জানান বিভিন্ন জরিপ, ক্যাম্পেইন, নিরীক্ষার কথা। মুখে বা সরাসরি পরামর্শ ছাড়াও নতুন কোনো ধারণাকে কীভাবে গ্রাহকরা নিচ্ছেন, সেগুলো কতটা কার্যকরী হচ্ছে সেসবের জরিপ করা হতো। যেমন, গ্রাহকদের বাছাইয়ের সুবিধার্থে 'লুক ইনসাইড' নামক একটি অপশন ছিল প্রথমে। পরে ডেটা বিশ্লেষণ করে দেখা গেল, তার চেয়ে 'একটু পড়ে দেখুন' লিখলে পাঠকের সাড়া বেড়ে যাচ্ছে। তখন সেটিই রাখা হলো।
মাহমুদুল হাসান জানান, 'শুরুর দিকে এই ডেটা অ্যানাইলাসিস বুঝতাম না। যখন থেকে ডেটা এন্ট্রি করতে শুরু করি, তখন থেকেই রকমারি জাম্প করতে শুরু করে, বিজনেসে চেঞ্জ আসতে শুরু করে। কখন, কোন বই, কী পরিমাণে বিক্রি হচ্ছে, চাহিদা বাড়ছে এ সবকিছুরই ডেটা রাখছি আমরা এখন।'
২০১২ সালে শুরুর সময়ে পুরো বছরে যা অর্ডার হয়েছে, বর্তমানে একদিনে সামান্য কয়েক ঘন্টায় তার চেয়ে বেশি অর্ডার আসে এখন। সোহাগ বলেন, 'আমরা সবসময় প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে পেরেছি। যেমন গতবছরের তুলনায় এ বছর প্রায় ৩৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে আমাদের। এখন আমাদের ব্যবহারকারী ২০–৩০ লাখের মতো। এমনও রেকর্ড আছে একই গ্রাহক বছরে ৮৬ বার অর্ডার দিয়েছেন। যা গড়ে দাঁড়ায় চারদিনে একবার, টাকার পরিমাণে এক লাখ টাকার মতো।'
এছাড়া ভালো সাড়া এসেছিল কো়ভিড-১৯ মহামারির সময়। লকডাউন যখন শিথিল করা শুরু হলো, সে সময়টায় প্রচুর অর্ডার এসেছিল বলে জানান সোহাগ।
প্রত্যন্ত অঞ্চল বা প্রবাস: বই যাচ্ছে
রকমারির আবির্ভাবের অল্প দিনের মধ্যেই দেশের বাণিজ্যিক বই বিপণনের ধারণাই পালটে যায়। বিভাগীয় ও কতিপয় জেলা শহরের বাইরের পাঠকদের হাতে তাদের পছন্দের বই তুলে দেওয়ার এ উদ্যোগ গত প্রায় এক দশকে দেশের প্রকাশনাশিল্পে নতুন দিগন্তের উন্মোচন করেছে। 'হাতিয়া, সন্দ্বীপের মতো প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোতেও বই যেন পৌঁছাতে পারে, সে ব্যবস্থা রেখেছি। একবার একটি মাদরাসা থেকে একটি বই অর্ডার করা হয়েছিল। সেখানে কোনো ডেলিভারি ব্যবস্থা ছিল না। তাদের আগ্রহ দেখে বিশেষ আয়োজনে বইগুলো পাঠিয়েছি আমরা। এভাবেই পুরো বাংলাদেশের প্রতিটা অঞ্চলে যেন বই পৌঁছানো যায় সে চেষ্টা করে যাচ্ছি আমরা,' বলেন প্রধান নির্বাহী সোহাগ।
এছাড়া প্রবাসীদের কথা মাথায় রেখে দেশের বাইরে আরও ৩০টি দেশের বাংলা ভাষাভাষীদের কাছে পৌঁছে যাচ্ছে রকমারির বই। যদিও এতে অনেক সময়ই 'বাজনার চেয়ে খাজনা বেশি' হয়ে পড়ে। অবশ্য প্রবাসী এসব গ্রাহকদের কথা ভেবে উদ্যোক্তা দলটি তৈরি করেছেন মুঠোবই অপশন।
এছাড়া প্রতিষ্ঠার পর থেকেই প্রতিবছর অনলাইনে বইমেলার আয়োজন করছে রকমারি। অমর একুশে গ্রন্থমেলায় অনেক পাঠক ইচ্ছে থাকলেও আসতে পারেন না। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে থাকা এ পাঠকদের বই কেনার ইচ্ছা পূরণ করছে অনলাইন এ বইমেলা। মেলায় প্রকাশিত বই সবার আগে পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করে রকমারি।
ভিন্নরকম অভিজ্ঞতা
বই এবং অনলাইনভিত্তিক হওয়ায় রকমারির পাঠক শ্রেণির মধ্যেও রয়েছে বৈচিত্র্য। বুদ্ধিজীবি, লেখক, সাংবাদিক, ব্যবসায়ী, শিক্ষার্থী, সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে একবারে প্রান্তিক শ্রেণির গ্রাহক আছে তাদের তালিকায়। সেরকম এক অভিজ্ঞতার কথা জানান সোহাগ, 'বই নিয়ে ডেলিভারিম্যান যখন ঠিকানায় গেল, গিয়ে দেখে বইয়ের গ্রাহক একজন ভিখারি। তিনি পথে বসে ভিক্ষা করছেন। আমাদের ঐ ছেলেটা তো অবাক। ভিখারি বই পড়বে? জিজ্ঞেস করে দেখল, সে ভিখারি নিজে পড়তেও জানেননা। বইটি তাকে অন্য একজন পড়ে শোনাবেন। এই ঘটনা খুব ভালো লেগেছিল আমাদের এই ভেবে যে কতদূর বিস্তৃত আমাদের পাঠক!' এছাড়া রিকশাওয়ালা, চায়ের দোকানদার, এরকরম প্রান্তিক শ্রেণির মানুষেরাও রকমারির কল্যাণে বই সংগ্রহ করছেন। এগুলোকে প্রাপ্তি হিসেবে দেখেন সোহাগ।
তবে প্রাপ্তির কথা বলতে গিয়ে একবারের এক দুঃখজনক ঘটনার কথাও মনে পড়ে সোহাগের। সেবার ড. মোহাম্মদ আলী নামক এক ক্রেতা বাছাই করে করে বই কার্টে যোগ করছিলেন। প্রায় সাত হাজার টাকার বই কার্টে যুক্ত করার পর হুট করেই একদিন তিনি মারা যান। এরপর অনেকদিন পর্যন্ত সেই কার্টটি ওভাবেই রেখে দিয়েছিল রকমারি কর্তৃপক্ষ। শেষে সেই সাত হাজার টাকার বইয়ের সঙ্গে আরও আট হাজার টাকার বই যোগ করে কোনো প্রান্তিক পাঠাগারে দান করে রকমারি।
বইয়ের পাশাপাশি অন্য পণ্য
যেহেতু শুরুতে দলটির রোল মডেলই ছিল অ্যামাজন ডটকম, তাই বই দিয়ে শুরু করলেও চিন্তাভাবনা ছিল আস্তে আস্তে পাঁচ–ছয় বছর পর বিভিন্ন আইটেম যুক্ত করার। কিন্তু ব্যবসায়িক সুবিধার্থে বইয়ের পাশাপাশি অন্যান্য পণ্য আনা শুরু করেন তারা আরও পরে। দৈনন্দিন নানা জিনিস যেমন ডিভিডি, ভিডিও টিউটোরিয়াল, ক্রীড়া সামগ্রী, অন্য রকম বিজ্ঞান বাক্স, (বিজ্ঞান পরীক্ষণের কিট), ক্যালকুলেটর, ঘড়ি, পেনড্রাইভ, কম্পিউটারের নানাবিধ যন্ত্রাংশসহ ফ্যাশন পণ্য, খেলাধুলা, মা-সন্তান বা বাচ্চাদের বিভিন্ন সামগ্রী, বিভিন্ন অর্গানিক খাবারও কিনতে পাওয়া যায় রকমারি থেকে। রকমারির ওয়েবসাইটে বর্তমানে বইয়ের পাশাপাশি অন্যান্য পণ্যের সংখ্যা প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ হাজার।
বইয়ের মতো সেসব জায়গাতেও ব্যাপক পরিমাণে সাড়া পাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। বিশেষ করে অর্গানিক খাবারগুলোর চাহিদা বেশ। কারণ হিসেবে সোহাগ 'রকমারি' নামটিকেই কৃতিত্ব দিতে চান, 'আমরা ডেটা পরীক্ষা করে দেখলাম যেটা অন্য অনেক অনলাইন পেজগুলোতে নেই। এর কারণটা হলো 'রকমারি' নাম। এ নামটাই এত ভরসার জায়গা হয়ে গেছে যে এখান থেকে অর্গানিক খাবার কিনতেও ভরসা করছেন গ্রাহকরা।'
আস্থা ও আকাঙ্ক্ষা
রকমারি যখন যাত্রা শুরু করে, তখন ই-কমার্স ধারণাটিই এদেশবাসীর কাছে নতুন। ফলে শুরুর দিকের এক–দুই বছর পার করতে হয়েছে গ্রাহকদের, এবং বিশেষ করে প্রকাশকদের বিশ্বাসযোগ্য হয়ে উঠতে উঠতেই। কয়েকটা প্রকাশন বাদে বেশিরভাগই ভরসা করে উঠতে পারেনি তখন। এই প্রকাশকদের আস্থাভাজন হতেই বেগ পেতে হয়েছিল অনেকটা সময়। রকমারির গেঞ্জি পরে তুষার নামে যে ছেলেটা ঘুরে বেড়াত বাংলাবাজারের প্রকাশকদের দরজায় দরজায়, শেষে তার নামই হয়ে গিয়েছিল রকমারি!
এখন বাতিঘর, প্রথমা, পাঠক সমাবেশ, বইয়ের জাহাজের মতো নানা অনলাইন বুকশপ তৈরি হয়েছে। মাহমুদ হাসান সোহাগ একে নিজের প্রতিদ্বন্দ্বিতা হিসেবে না দেখে বরং বাংলাদেশে বইয়ের বাজার ধীরে ধীরে যে আবার বড় হচ্ছে সেভাবেই ভাবতে পছন্দ করেন। তিনি জানান, 'মার্কেট তো সে-ই লিড করবে যে ভালো সার্ভিস দিতে পারবে। কিন্তু এই যে এতে বইয়ের পাঠক তৈরি হচ্ছে, এটাই তো ভালো লাগার।'
দেশের ই-কমার্সের বাজারে বহুল প্রচলিত এবং আস্থার যে ব্যবস্থাটি তা হলো, ক্যাশ অন ডেলিভারি (সিওডি) ব্যবস্থা। আর এর শুরু হয় রকমারির হাত ধরেই। তার আগে এই সিওডির প্রচলন ছিল না। এমনকি গ্রাহকদের আস্থা অর্জনে শুরুর দিকে কার্ড বা বিকাশের অপশনও রাখা হতো না রকমারির সাইটের ফ্রন্ট পেজে। এখনো মোট বিকিকিনির ৯০ শতাংশই আসে সিওডিতে।
বারো বছর পূর্তিতে রকমারির নতুন প্রয়াস হলো উদ্যোক্তাদের নিয়ে কাজ করা। রকমারির সঙ্গে দশ হাজার প্রকাশক যুক্ত এবং এর বাইরেও চুক্তিভিত্তিক আরও দু–তিন হাজার উদ্যোক্তা আছেন। তাদের নিয়ে বর্তমানে তিন পর্যায়ে একটি প্রকল্পের পরিকল্পনা রয়েছে প্রতিষ্ঠানটির। এসবের মাধ্যমে আগ্রহী উদ্যোক্তাদের নিয়ে বিভিন্ন কর্মশালা করা, তাদের জন্য শিক্ষণকেন্দ্র তৈরি, তাদের অভিজ্ঞতা তুলে ধরা, পরামর্শ অনুষ্ঠান, অর্থায়ন, সঠিক মাধ্যমের সঙ্গে যোগাযোগ, বাজারজাতকরণ এধরনের বিষয় নিয়ে কাজ করবে রকমারি।
ভবিষ্যতে রকমারিকে অ্যামাজনের মতোই আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার ইচ্ছে আছে সোহাগের। বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গেই যেহেতু একটা বাজার তৈরি হয়েছে বাংলাদেশি বইয়ের, তাই সেখানকার মার্কেটে ঢোকার চেষ্টা করছেন তিনি। ইতোমধ্যে কলকাতায় এ নিয়ে প্রক্রিয়াও শুরু করেছে রকমারি।
রকমারি ও অন্যান্য ই-কমার্সের হাত ধরে দেশের ই-কমার্সেরও একটি জোয়ার তৈরি হয়েছে এই এক দশকে। বর্তমানে রকমারির সঙ্গে কাজ করছেন প্রায় সাড়ে তিনশ জন। ফেব্রুয়ারি–মার্চে চাপ থাকলে চুক্তিভিত্তিক আরও কিছু লোক কাজ করেন। তবে প্রতিটা বিভাগের প্রধান হিসেবে যারা আছেন, তারা প্রায় দশ বছরের বেশি সময় ধরে যুক্ত রকমারির সঙ্গে। সোহাগ মনে করেন, রকমারির মূল শক্তিই হলো তার পেছনে দিনরাত পরিশ্রম করা এই কর্মীরা। যারা রকমারিকে নিজের একটি জায়গা ভেবে কাজ করে যাচ্ছেন বাংলাদেশের বই প্রকাশনা ও ব্যবসার একটি সুন্দর ভবিষ্যতের প্রত্যাশায়।