নাক-জিহ্বা কেটে, মুখে রঙ করে স্বেচ্ছায় ‘কালো এলিয়েন’ হলেন যিনি
৩২ বছর বয়সী ফরাসী আলফ্রেড লফরেডো। নাকের সামনের অংশটুকু কেটে ফেলেছেন তিনি, চিরে দু'খন্ডে ভাগ করেছেন নিজের জিহবাকে। দুই চোখে কালো ট্যাটু আর মাথা-মুখ কালো রঙ করেছেন। নিজেকে 'কালো এলিয়েন' এর রূপ দিয়েছেন আলফ্রেড।
শুধু তাই নয়, নিজের সারা শরীর রঙ করেছেন তিনি, ফুঁড়েছেন কপালসহ সারা দেহে। এই সবকিছুই করা যাতে করে সত্যিকারের এলিয়েনের মতো দেখতে লাগে আলফ্রেডকে।
আর এইসব অস্ত্রোপচার, ট্যাটু করাতে তিনি গেছেন স্পেনের বার্সেলোনায়, কেননা ফ্রান্সে এসবের কোন কিছুই বৈধ নয়। বার্সেলোনার ট্যাটু বিশেষজ্ঞ অস্কার মারকুইজ তার এই সার্বিক পরিবর্তন এনে দিয়েছেন। শরীরে এই ধরনের আমূল পরিবর্তনের অস্ত্রোপচারকে বলে 'রাইনোটমি'।
গত সেপ্টেম্বরে এমন রূপে নিজের ছবি ইন্সটাগ্রামে পোস্ট করে লেখেন 'ধন্যবাদ অস্কার মারকুইজকে। তিনি অসাধারণ কাজ করেছেন। আমি এখন মাথা উঁচু করে হাঁটতে পারি। তার সঙ্গে মিলে আমার এই পরিবর্তন এনে আমি খুবই গর্বিত'।
এখানেই থেমে থাকেননি আলফ্রেড। আরও বেশি এলিয়েন সদৃশ হতে কেটে ফেলে দিয়েছেন দুই কানও। এরপর ত্বকে এবড়ো-খেবড়ো ভাব আনতে অস্ত্রোপচার করে চামড়ার নিচে ছোট ছোট ইমপ্ল্যান্ট বসিয়েছেন তিনি।
অথচ এইসমস্ত পরিবর্তন আর অস্ত্রোপচারের আগে কিন্তু বেশ সুদর্শন ছিলেন আলফ্রেড। তবু এমন অদ্ভুত ইচ্ছা হলো কেন তার?
২০১৭ সালে ফরাসী পত্রিকা মিডি লিব্রকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আলফ্রেড জানান, 'ছোটবেলা থেকেই মিউটেশন আর বিবর্তন নিয়ে আমার খুব আগ্রহ। বিষয়টা আমাকে টানে। এরপর আমি যখন নিরাপত্তা রক্ষী হিসেবে কাজ করি, হঠাৎ আমার মনে হলো- আমি যেভাবে চাই ঠিক সেভাবে জীবন কাটাচ্ছি না। তখনই আস্তে আস্তে এভাবে পালটাতে থাকি নিজেকে।
'এরপর ২৪ বছর বয়সে সব ছেড়েছুড়ে দিয়ে আমি চলে যাই অস্ট্রেলিয়ায়। সেখানে গিয়েও বেশ কয়েক মাস আমি উদ্ভ্রান্তের মতো ঘুরতে থাকি। এই অবস্থায় আমাকে কেউ কোন কাজ দিতে চায় নি। এরপর ধীরে ধীরে হ্যালুয়িন পার্টিতে বা বিভিন্ন থিম পার্টিতে ভুতের চরিত্রে কাজ শুরু করি আমি।'
আলফ্রেড বলেন, 'সত্যিকারের আমি আর বাইরের এই রূপের আমিকে নিয়ে পরীক্ষা নীরিক্ষা করতে ভালোই লাগে আমার'।