চীনা পুঁজিবাজারমুখী বৈশ্বিক তহবিলগুলোর বিনিয়োগ
চলমান বিশ্ব মহামারি নিয়ন্ত্রণ করতে চীন যখন সফল ঠিক তখনই এর ধাক্কা সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। বিশ্বের সবচেয়ে বড় অর্থনীতির এই দুরাবস্থা দেশটির পুঁজিবাজারকেও নিম্নমুখী করেছে। এর সুবিধা পাচ্ছে দ্বিতীয় বৃহৎ অর্থনীতি চীন। দেশটিতে বিনিয়োগ স্থানান্তর হওয়ার এই প্রবণতা দীর্ঘমেয়াদি রুপ নেওয়ার আশঙ্কা করছেন মার্কিন বাজার কৌশলবিদরাও।
আন্তর্জাতিক বাজারগুলোয় মূলধন প্রবাহ পর্যবেক্ষণ জড়িত প্রতিষ্ঠান ইপিএফআর জানায়, গত মার্চ নাগাদ বৈশ্বিক সম্পদ ব্যবস্থাপক তহবিলগুলো চীনা পুঁজিবাজারে তাদের লগ্নির পরিমাণ বাড়ায়। এই সময়ে প্রায় ৮ শতাধিক সম্পদ ব্যবস্থাপক সংস্থা দেশটির বাজারে দুই লাখ কোটি ডলারের বেশি বিনিয়োগ করেছে।
এব্যাপারে গত এপ্রিলের শেষদিকে দেওয়া এক টেলিফোন সাক্ষাৎকারে ইপিএফআরের প্রধান টোড উইলিস বলেন, যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা বিশ্বে পুঁজিবাজারের অরাজক অবস্থায় এখন চীনের দিকে সম্পদ ব্যবস্থাপকদের বিনিয়োগের আকর্ষণ বেড়েছে। আগামীদিনেও অব্যাহত থাকতে পারে পুঁজির এই সঞ্চালন।
করোনা মহামারিজনিত নানা প্রকার বিধি-নিষেধের মুখে গত মার্চ নাগাদ মার্কিন পুঁজিবাজারে শেয়ারের মূল্যে রেকর্ড দরপতন লক্ষ্য করা যায়। এই সময় তা গত তিন বছরের মধ্যে সবচেয়ে দুর্বল অবস্থানে নেমে আসতেও দেখা গেছে। গ্রাহকদের মুনাফা নিশ্চিত করতে এই পরিস্থিতিই মার্কিন বাজার ছাড়া করেছে সম্পদ ব্যবস্থাপকদের। পক্ষান্তরে তারা বিনিয়োগ করছেন করোনা কাটিয়ে অর্থনীতি সচল করা চীনে।
গত মার্চ নাগাদ যে পরিমাণ বিনিয়োগ তারা চীনে করেছেন তা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ২০ শতাংশ বেশি। একইসঙ্গে তা গত ছয় বছর আগের তুলনায় বেশি ১৭ শতাংশ।
ইপিএফআর জানায়, চীনা কোম্পানি নিবন্ধিত এমন কয়েকটি বাজারে শেয়ার বিক্রির তথ্য বিশ্লেষণের মাধ্যমে তারা আলোচিত সিদ্ধান্তে আসে। সম্পদ ব্যবস্থাপক তহবিলগুলো চীন, স্বশাসিত হংকং, তাইওয়ান, যুক্তরাষ্ট্র এবং সিঙ্গাপুরের পুঁজিবাজারে থেকে চীনা কোম্পানির শেয়ার কিনেছে আলোচিত সময়ে। সার্বিকভাবে এটা চীনের দিকেই বৈশ্বিক পুঁজি প্রবাহের একটি ইতিবাচক গতি নির্দেশ করছে।