কন্টেইনার জট কমাতে ভাড়া মওকুফ করলো চট্টগ্রাম বন্দর
জট কমাতে চট্টগ্রাম বন্দরের ইয়ার্ডে আটকে থাকা বিজিএমইএ এবং বিকেএমইএ কর্তৃক আমদানিকৃত কন্টেইনারগুলোর ভাড়া আগামী ৪ মে পর্যন্ত মওকুফ করেছে চট্টগ্রাম বন্দর। এর মধ্যে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে দুই প্রতিষ্ঠানের আমদানি করা পণ্য ডেলিভারি নিলে বন্দরের স্টোররেন্ট শতভাগ মওফুফ পাবে প্রতিষ্ঠান দুটি ।
২৭ এপ্রিল চট্টগ্রাম বন্দরের পরিবহন বিভাগ এই সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি জারি করে।
করোনা পরিস্থিতিতে সকল পণ্যে গত ২৭ মার্চ থেকে ২০ এপ্রিল পর্যন্ত স্টোর রেন্ট মওকুফ করেছিল বন্দর। ওই নির্দেশনা প্রত্যাহারের পর বন্দর বিজিএমইএ'র আবেদনের প্রেক্ষিতে পুনরায় দুটি প্রতিষ্ঠানের কন্টেইনারের স্টোর রেন্ট মওকুফ করল।
স্টোররেন্ট মওকুফ সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, বিজিএমই'এর আবেদনের প্রেক্ষিতে বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ কর্তৃক আমদানিকৃত কন্টেইনার সমুহ কেবলমাত্র ৪ মে'র মধ্যে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ডেলিভারি গ্রহন করলে তার বিপরীতে আদায়যোগ্য বন্দরের স্টোররেন্ট সমুহ শতভাগ মওকুফযোগ্য হবে। বন্দরের দেওয়া নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পণ্য চালান ডেলিভারি নিতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি অনুরোধ করে বন্দর কর্তৃপক্ষ।
চট্টগ্রাম বন্দর সুত্র জানায়, বন্দরের ইয়ার্ডে বিজিএমইএ এবং বিকেএমইএ'র আমদানি করা তৈরী পোশাক শিল্পের কাঁচামালসহ প্রায় ১৫-২০ হাজার কন্টেইনার রয়েছে। এর আগে গত ২৫ এপ্রিল রমজানের ২ হাজার ৫ শ কন্টেইনার ভর্তি পণ্য ডেলিভারি নিতে সংশ্লিষ্ট আমদানিকারক, সিএন্ডএফ এজেন্ট এবং চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রিজকে পৃথক চিঠি দেয় বন্দর কর্তৃপক্ষ।
চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব ওমর ফারুক বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরে বিজিএমইএ এবং বিকেএমই'এর আমদানি করা প্রায় ১৫-২০ হাজার কন্টেইনার রয়েছে। তাদের আবেদনের প্রেক্ষিতে স্টোররেন্ট ৪ মে পর্যন্ত মওকুফ করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানদুটি গত ২৭ মার্চ থেকে ৪ মে পর্যন্ত সময় পর্যন্ত এই সুবিধা পাবে।
চট্টগ্রাম বন্দরে ৪৯ হাজার ১৪ টি কন্টেইনার ধারণক্ষমতার বিপরীতে ২৭ এপ্রিল সকাল ৮ টা পর্যন্ত কন্টেইনার ছিল ৪৮ হাজার ৬৪৬ টি। বন্দরের অপারেশনাল কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখতে ধারণ ক্ষমতার ১৫ ভাগ জায়গা খালি রাখতে হয়।
এছাড়া ২৪ ঘন্টায় ডেলিভারি হয় ২ হাজার ৭৯৩টি কন্টেইনার। স্বাভাবিক সময়ে প্রতিদিন ডেলিভারি হয় ৪ হাজার থেকে ৪ হাজার ৫শ কন্টেইনার।
প্রসঙ্গত, করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে লকডাউন শুরু হলে গত ২৬ মার্চ থেকে পরিবহন সংকট এবং অন্যান্য কারণে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে পণ্য ডেলিভারি কমে যায়। ফলে বন্দরের বাড়তে থাকে কন্টেইনার এবং জাহাজ জট।
বন্দরে ইয়ার্ডে ৪৯ হাজার কন্টেইনার ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত স্তুপ জমে যায়। পণ্য খালাস নির্বিঘ্ন করতে ইতোমধ্যে সকল ধরনের পণ্য বেসরকারি আইসিডিতে (ইনল্যান্ড কন্টেইনার ডিপো) স্থানান্তর এবং চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজের কার্যক্রম শতভাগ সচল করা হয়। এতেও বন্দরের জট না কমায় পণ্য ডেলিভারি নিতে সংশ্লিষ্ট আমদানিকারকদের আলাদা আলাদা চিঠি দেয় বন্দর কর্তৃপক্ষ।