শেয়ারবাজারে কালো টাকা বিনিয়োগ চায় সিএসই, বিএমবিএ
২০২৩-২৪ অর্থবছরে জাতীয় বাজেটে অপ্রদর্শিত অর্থ শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের সুযোগ চায় চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) এবং বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএমবিএ)।
তারা বলছে, এ সুযোগ রাখা হলে বিভিন্ন শ্রেণীর করদাতারা শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের সুযোগ পাবে। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখতে পারবে।
এর ফলে শেয়ারবাজারের গতিশীলতা ও সরকারের রাজস্ব বৃদ্ধির পাশাপাশি অর্থ পাচার কমবে।
রোববার জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) অনুষ্ঠিত এক প্রাক-বাজেট মতবিনিময় সভায় স্টেকহোল্ডাররা এমন প্রস্তাব দেয়।
২০২৩-২৪ অর্থবছরে প্রস্তাবিত বাজেটে তালিকাভুক্ত ও অ-তালিকাভুক্ত কোম্পানির করপোরেট কর হারের পার্থক্য আরও বাড়ানোর প্রস্তাব দেয়া হয়েছে শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারদের পক্ষ থেকে।
বর্তমানে এই পার্থক্য রয়েছে ৭.৫০%, এটি বাড়িয়ে ১৫% পর্যন্ত করার প্রস্তাব দেয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএমবিএ) তালিকাভুক্ত ও অ-তালিকাভুক্ত কোম্পানির কর হারের পার্থক্য ১৫% করার প্রস্তাব করেছে, যেখানে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এটি বাড়িয়ে ১২.৫% শতাংশ করতে সুপারিশ করেছে।
বিএমবিএ বলছে, এটি করা হলে সরকারের মোট কর আদায় কমবে না বরং বাড়বে। অনেক ভালো প্রতিষ্ঠান রয়েছে; যারা তালিকাভুক্ত না হয়ে ভিন্নরূপে সুবিধা নিচ্ছে। এসব প্রতিষ্ঠান তালিকাভুক্ত হলে রাজস্ব বাড়বে।
বর্তমান কর সুবিধা বহুজাতিক ও প্রতিষ্ঠিত কোম্পানিগুলোকে আকৃষ্ট করতে পারেনি। এসব প্রতিষ্ঠান খুব সহজে ব্যাংক ঋণ পেয়ে যায়; ৭.৫% কর সুবিধা তাদের আকৃষ্ট করে না।
নির্ধারিত হারে কর প্রদান করে অপ্রদর্শিত অর্থ শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের সুযোগ রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে স্টেকহোল্ডারদের পক্ষ থেকে।
জিরো কুপন বন্ডের মতো অন্যান্য বন্ড ও সরকারি সিকিউরিটিজ হতে উদ্ভুত আয়কে করমুক্ত রাখার প্রস্তার করেছে স্টক এক্সচেঞ্জ।
তাদের মতে, বর্তমানে করপোরেট বন্ড মার্কেটের আকার খুবই ছোট, যা পুঁজিবাজারের পাশাপাশি মুদ্রাবাজারে বিভিন্ন সীমাবদ্ধতা সৃষ্টি করছে। একটি বৈচিত্র্যপূর্ণ বন্ড মার্কেট অর্থনীতিকে বিভিন্ন উপায়ে সাহায্য করতে পারে।
বাজেট প্রস্তাবে তালিকাভুক্ত কোম্পানি প্রদত্ত লভ্যাংশের উপর থেকে উৎসে কর প্রত্যাহার চেয়েছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ।
সিএসই বলছে, বর্তমানে টিআইএনধারী বিনিয়োগকারীদের প্রাপ্য লভ্যাংশের উপর ১০ শতাংশ হারে এবং টিআইএনবিহীনদের ক্ষেত্রে ১৫ শতাংশ হারে উৎসে কর কাটা হয়।
প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের ক্ষেত্রে উৎসে কর কাটার হার ২০ শতাংশ।
এই বিধান দ্বৈত কর সৃষ্টি করছে। কারণ তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলো প্রথমে তাদের মুনাফার উপর থেকে সরকারকে আয়কর দেয়। একই আয়ের বিপরীতে ঘোষিত লভ্যাংশের ওপর উৎসে করা কাটার অর্থ হচ্ছে, একই আয়ের জন্য দু'বার কর দেওয়া।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের ক্ষেত্রে উৎসে কর কাটার হার ২০ শতাংশ কমিয়ে ১০% করার প্রস্তাব করেছে।
শেয়ারবাজারে এসএমই প্লাটফর্মে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর প্রথম তিন বছর করমুক্ত রেখে পরবর্তীতে ১০ থেকে ১৫% নির্ধারণ করার জন্য প্রস্তার করা হয়েছে।
স্টক এক্সচেঞ্জ বলছে, এসব কোম্পানি তালিকাভুক্ত হলে পাবলিক লিমিটেড কোম্পানির সংখ্যা বাড়বে। তাতে রাজস্ব বৃদ্ধি পাবে।
সিএসই'র পক্ষ থেকে করমুক্ত লভ্যাংশ আয়ের সীমা ৫০ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ১ লাখ টাকায় উন্নীতকরণ, করমুক্ত ব্যক্তি আয়ের সীমা বাড়িয়ে ৩ লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৪ লাখ টাকায় উন্নীত করার সুপারিশ করা হয়েছে।
এছাড়া মার্চেন্ট ব্যাংকের করপোরেট কর বিদ্যমান থেকে ২.৫% কমানো এবং তালিকাভুক্ত কোম্পানির ভ্যাট হার ১০% করার সুপারিশ করেছে বিএমবিএ।