আগামীকাল ২০২৩-২৪ অর্থবছরের দ্বিতীয়ার্ধের জন্য নতুন মুদ্রানীতি আসছে
মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণকে গুরুত্ব দিয়ে, আগামীকাল বুধবার (১৭ জানুয়ারি) চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের দ্বিতীয়ার্ধের (জানুয়ারি-জুন) মুদ্রানীতি ঘোষণা করবে বাংলাদেশ ব্যাংক।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তাদের মতে, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে মুদ্রানীতিতে বেশকিছু পরিবর্তন আসতে যাচ্ছে। যেমন ব্যাংকগুলোকে ধার দেওয়ার নীতি সুদহার বৃদ্ধি, নতুন বিনিময় হারের পদ্ধতি গ্রহণ এবং বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রাও কমানো হতে পারে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আগামীকাল বুধবার বিকেল ৩টায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের জাহাঙ্গির আলম কন্ফারেন্স হলে এ মুদ্রানীতে ঘোষণা করবেন গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র মেজবাউল হক টিবিএসকে বলেন, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সংকোচনমূলক ধারা অব্যাহত রাখবে। এছাড়া, কর্পোরেট সুশাসন নিশ্চিত করার বিষয়ে মনোযোগ নতুন বছরেও অব্যাহত থাকবে।
তিনি বলেন, "আমরা কর্পোরেট গভর্নেন্স নিয়ে কাজ শুরু করেছি। তা নতুন বছরও অব্যাহত থাকবে। আমানতকারীদের স্বার্থে বাংলাদেশ ব্যাংক যেকোনো পদক্ষেপ নেবে। কারণ আমানতকারীদের অর্থের নিরাপত্তা দেয়াই হচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংকের মূলনীতি।"
বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, ২০২৩ সালে দেশের অভ্যন্তরে নানামুখী চ্যালেঞ্জ ছিল; ২০২৩-২৪ অর্থবছরের শুরু ব্যাংক ঋণের সুদহার বাজার ভিত্তিক করা হয়েছে। যদিও এই ঋণের সুদহার একক রেটে ২০২০ এর এপ্রিল থেকে সীমা দেয়া ছিল। এছাড়া মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে একাধিকবার পলিসি রেট (নীতি সুদহার) বাড়ানো হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, মুল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের জন্য যেসব পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে, তাতে আশা করা যাচ্ছে, চলতি অর্থবছরের বাকি সময়ের মধ্যে মূল্যস্ফীতি ৬ শতাংশে নেমে আসবে।
যদিও এর আগে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর বলেছিলেন, তাঁরা মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে নানান পদক্ষেপ নিয়েছেন। ফলে ২০২৩ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে মূল্যস্ফীতি ৮ শতাংশে এ চলে আসবে। কিন্তু, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ডিসেম্বরে মূল্যস্ফীতি দাঁড়িয়েছে ৯.৪১ শতাংশ। যা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও প্রায় ১.৫ শতাংশ বেশি।
এছাড়া ২০২৪ সালের জুনের মূল্যস্ফীতি ৬ শতাংশে নামবে বলেও আশাপ্রকাশ করেছিলেন গভর্নর।
২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে অর্থ সরবরাহ-ভিত্তিক থেকে মুদ্রানীতির থেকে সরে এসে সুদহার-ভিত্তিক মুদ্রানীতি গ্রহণ করা হয়।
চলতি অর্থবছরের প্রথমার্ধের জন্য ঘোষিত মুদ্রানীতিতে, রেপো সুদহার ৫০ বেসিস পয়েন্ট বাড়িয়ে ৬ দশমিক ৫০ শতাংশ করা হয়।
কিন্তু, তাতেও মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে না আসায়– গত ছয় মাসে বেশ কয়েকবার নীতি সুদহার বাড়ানো হয়। সবশেষ গত ২৭ নভেম্বর যা ৫০ বেসিস পয়েন্ট বাড়িয়ে ৭ দশমিক ৭৫ শতাংশ করা হয়।