দেশি স্টার্টআপে জানুয়ারি-মার্চে বিনিয়োগ কমেছে ৭০%
বৈশ্বিক অর্থায়ন কমায় জানুয়ারি-মার্চ প্রান্তিকে বাংলাদেশি স্টার্টআপগুলোতে বিনিয়োগ আগের প্রান্তিকের তুলনায় ৭০ শতাংশ কমে প্রায় ৬.৭ মিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছে।
লাইটকাসলের তথ্যানুসারে, এই সময়ে গত বছরের একই সময়ের তুলনায় বিনিয়োগ আসা কমেছে ৮২ শতাংশ। তবে গত বছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে স্থানীয় স্টার্টআপগুলো যে পরিমাণ অর্থায়ন পেয়েছে, তার তুলনায় মোট অর্থায়ন কিছুটা ভালো ছিল।
এছাড়া চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে মাত্র চারটি বাংলাদেশি স্টার্টআপ ভেঞ্চার ক্যাপিটাল অর্থায়ন পেয়েছে। গত বছরের একই সময়ে এই অর্থায়ন পেয়েছিল ২০টি স্টার্টআপ। আর ২০২৩ সালের শেষ প্রান্তিকে সাতটি চুক্তি হয়েছিল।
এ বছরের প্রথম প্রান্তিকে ৫ মিলিয়ন ডলারের বিদেশি অর্থায়ন পেয়েছে প্রথম প্রজন্মের স্থানীয় ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম প্রিয়শপ।
মাল্টি-চ্যানেল মার্কেটপ্লেস স্টার্টআপ আপন ওয়েলবিইং পেয়েছে ১.৫ মিলিয়ন ডলার।
এআই স্টার্টআপ 'হিসাব' রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ফার্ম স্টার্টআপ বাংলাদেশ থেকে প্রায় ১ লাখ ৮৩ ডলার বিনিয়োগ পেয়েছে। অন্যদিকে ২০২৩ সালের প্রথম প্রান্তিকে স্টার্টআপ বাংলাদেশ অন্তত ছয়টি স্টার্টআপকে অর্থায়ন করেছে।
তবে এডিবি ভেঞ্চারস থেকে প্রাথমিক পর্যায়ের অর্থায়ন পেয়েছে এগ্রি-টেক স্টার্টআপ 'এগ্রোশিফ্ট'। যদিও অর্থের পরিমাণ প্রকাশ করা হয়নি।
ভেঞ্চার ক্যাপিটাল অ্যান্ড প্রাইভেট ইক্যুইটি অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের পরিচালক শওকত হোসেন বলেন, 'উচ্চ মূল্যস্ফীতি ও সুদহারের কারণে স্টার্টআপের মতো উচ্চ-ঝুঁকিপূর্ণ বেশি রিটার্নের ক্ষেত্রগুলোতে বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ কমেছে, সেগুলো আন্তর্জাতিক বা স্থানীয় যা-ই হোক না কেন।'
তিনি বলেন, অর্থায়ন কমে যাওয়ায় স্টার্টআপগুলো তাদের খরচ কমিয়েছে। সুদহার কমা ও ভেঞ্চার ক্যাপিটাল প্রবাহ ফের বাড়ার আগপর্যন্ত তারা কম খরচ করবে।
বিশ্বব্যাপী চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে স্টার্টআপ বিনিয়োগ আগের প্রান্তিকের তুলনায় ২৬ শতাংশ কমে ৪৪ বিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছে।
গত প্রান্তিকে ৩৯ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের পর জানুয়ারি-মার্চ প্রান্তিকে কোনো বিনিয়োগ পায়নি পাকিস্তানি স্টার্টআপগুলো। তাদের পর বাংলাদেশি স্টার্টআপগুলোই সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
জানুয়ারি-মার্চ সময়ে আগের প্রান্তিকের তুলনায় সিঙ্গাপুরে স্টার্টআপ বিনিয়োগ ৬৫ শতাংশ, চীনে ৬৯ শতাংশ, ভারতে ২৭ শতাংশ কমেছে।
২০২২ সালে বাংলাদেশি স্টার্টআপে বিনিয়োগ ১২৫ মিলিয়ন ডলার থেকে কমে ২০২৩ সালে ৭২ মিলিয়ন ডলারে নেমে আসে।
শিল্পসংশ্লিষ্টদের ধারণা, ২০২২ সালের মাঝামাঝি সময়ে অর্থায়ন কমতে শুরু করার সময় থেকে শুরু থেকে বাংলাদেশি স্টার্টআপগুলোতে প্রত্যক্ষ কর্মসংস্থান এক-তৃতীয়াংশ কমে প্রায় ৩৫ হাজারে দাঁড়িয়েছে।
স্টার্টআপ বাংলাদেশের তথ্য অনুসারে, দেশে প্রায় ২ হাজার ৫০০টি স্বীকৃত স্টার্টআপ রয়েছে।