অপহৃত ভারতীয়দের ছেড়ে দিয়েছে তালেবান
অপহৃত ভারতীয় নাগরিকদের ছেড়ে দিয়েছে তালেবান। তারা বিমানে করে আফগানিস্তান ছাড়ার জন্য দেশটির প্রধান বিমান বন্দরে অপেক্ষা করছে বলে কয়েকটি আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম জানিয়েছে।
শনিবার সকালে কাবুল বিমানবন্দরের বাইরে সশস্ত্র তালেবান যোদ্ধারা ১৫০ জনকে অপহরণ করে যাদের বেশিরভাগই ছিল ভারতীয় নাগরিক।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক সূত্রের বরাতে বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, বিমানবন্দরের বাইরে থেকে অপহরণ করার পর ভারতীয়দের কাছের একটি পুলিশ স্টেশনে নিয়ে যায় তালেবান। সেখানে তাদের কাগজপত্র দেখার পর ছেড়ে দেয়া হয়। এখন তারা কাবুল বিমানবন্দরে আছে।
তালেবানের একজন মুখপাত্র স্থানীয় একটি গণমাধ্যমকে বলেছেন, ভারতীয়দের অপহরণ করা হয়নি। তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ স্টেশনে নেয়া হয়েছে।
শনিবার এর আগে প্রকাশিত বিভিন্ন প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কাবুল বিমানবন্দরের বাইরে থেকে তাদের অপহরণ করা হয়েছে। যদিও ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই ব্যাপারে আনুষ্ঠানিকভাবে নিশ্চিত করেনি।
কাবুলের হামিদ কারজাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ভারতীয় বিমান বাহিনীর একটি পরিবহন বিমান প্রায় ৮৫ জন ভারতীয়কে সরিয়ে নেয়ার দুই ঘণ্টা পর তালেবান ভারতীয় নাগরিকদের তুলে নেয়।
বার্তা সংস্থা ইউএনবির খবরে বলা হয়েছে, দিল্লির একটি সূত্র গণমাধ্যমটিকে জানিয়েছে, উড়োজাহাজটি নিরাপদে তাজিকিস্তানে অবতরণ করেছে। বিমানটি রিফুয়েল করার পর ভারতে ফিরে আসবে এবং দ্বিতীয় বিমানটি কাবুল বিমানবন্দরে অপেক্ষায় আছে।
তালেবান রাজধানী দখলের প্রায় ৩৬ ঘণ্টা পর মঙ্গলবার তাদের দূতাবাস থেকে রাষ্ট্রদূতসহ সব কূটনৈতিক কর্মীদের সরিয়ে নিয়েছে ভারত।
ভারত সরকার, ইতোমধ্যে, ই-ভিসার একটি নতুন জরুরি বিভাগ চালু করেছে যাতে এই দেশে আশ্রয় নিতে আফগানরা দ্রুত আবেদন করতে পারে।
গত দুই সপ্তাহে, ভারত তাদের সব কূটনৈতিক কর্মী এবং তাদের পরিবারকে আফগানিস্তানে দেশটির তিনটি কনস্যুলেট - কান্দাহার, জালালাবাদ এবং হেরাত থেকে সরিয়ে নিয়েছে।
আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানি দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার পর ও তেমন কোনো বাধা ছাড়াই তালেবান কাবুলে প্রবেশ করার পর গত রোববার দেশটির পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নেয় সশস্ত্র গোষ্ঠীটি।
শিক্ষা এবং কর্মক্ষেত্রসহ নারীদের অধিকার থাকবে এবং সংবাদমাধ্যম স্বাধীন থাকবে- এসব ঘোষণার মাধ্যমে এবার কিছুটা মধ্যপন্থী হিসেবে নিজেদের উপস্থাপনের চেষ্টা করেছে দুই দশক আগে নৃশংস এবং নিপীড়নমূলক শাসনের মাধ্যমে ভয় সৃষ্টিকারী দলটি।
তবে বিক্ষোভের প্রতি সহিংস প্রতিক্রিয়া, তালেবান যোদ্ধাদের গুলিতে বেশ কয়েকজনের নিহত হওয়া এবং একজন নারী আফগান সাংবাদিককে কাজ করতে বাধা দেওয়া- এসব ঘটনার পর তাদের মধ্যপন্থী অবস্থানটি স্থায়ী নাও হতে পারে তাই প্রতীয়মান হয়।