নাগরিকত্ব আইন নিয়ে অস্থিরতায় ধস নেমেছে ভারতের পর্যটনে
নাগরিকত্ব আইন নিয়ে ভারতজুড়ে অস্থিরতার প্রভাব পড়েছে দেশটির পর্যটন খাতেও। ইতোমধ্যেই সাতটি দেশ তাদের নাগরিকদের ভারতে ভ্রমণের ক্ষেত্রে সতর্কতা জারি করেছে।
কয়েকদিন আগে নাগরিকত্ব আইন পাসের পর ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের মানুষ এর প্রতিবাদে রাজপথে নামে। দেশের বিভিন্ন রাজ্যে ছড়িয়ে পড়া বিক্ষোভে পুলিশের গুলিতে অন্তত ৩০ জন নিহত হওয়ার খবর গণমাধ্যমে উঠে আসে।
এরমধ্যেই যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, রাশিয়া, ইসরায়েল, সিঙ্গাপুর, কানাডা ও তাইওয়ান তাদের নাগরিকদের ভারতের বিভোক্ষ ছড়িয়ে পড়া রাজ্যগুলোতে ভ্রমণ থেকে বিরত থাকতে বা ভ্রমণে সতর্কতা অবলম্বন করতে বলে।
সরকারি হিসেব থেকে জানা গেছে, গত দুই সপ্তাহে প্রায় ২ লাখ পর্যটক বিশ্বের অন্যতম আকর্ষণীয় স্থাপনা তাজমহল ভ্রমণের পরিকল্পনা বাতিল করেছেন বা স্থগিত করেছেন। খবর আল-জাজিরার।
দীনেশ কুমার নামে তাজমহলের নিকটবর্তী পুলিশ স্টেশনের একজন টুরিস্ট পুলিশ বলেন, “গত বছরের তুলনায় এ বছরের ডিসেম্বরে তাজমহলের দর্শনার্থী ৬০ শতাংশ কমে গেছে।”
তিনি আরও বলেন, “দেশী ও বিদেশী পর্যটকরা নিরাপত্তার বিষয়ে জানতে আমাদের কন্ট্রোল রুমে ফোন দিচ্ছেন। আমরা তাদের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দিচ্ছি তবুও তারা আসতে চাচ্ছেন না।”
সতেরো’শ শতাব্দীতে নির্মিত স্থাপনা তাজমহল ভারতের যে রাজ্যে অবস্থিত সেই উত্তর প্রদেশেই গত দুই সপ্তাহের বিক্ষোভে সবচেয়ে বেশী মানুষের প্রাণ গেছে।
প্রতিবছর তাজমহল পরিদর্শন করেন ৬৫ লাখ দেশি-বিদেশি পর্যটক। তাজমহলের প্রবেশের টিকিট মূল্য থেকে ১৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় করে ভারত সরকার।
দেশি ও সার্কভুক্ত দেশগুলোর পর্যটকদের জন্য ছাড় থাকলেও তাজমহলে একজন বিদেশি পর্যটকের প্রবেশ টিকিটের দাম ১১০০ রুপি।
তাজমহলের আশপাশের বিলাসবহুল হোটেল ও গেস্ট হাউসগুলোর ম্যানেজাররা বলছেন, দেশের জিডিপির প্রবৃদ্ধি গত ছয় বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন ৪.৫ শতাংশে নেমেছে। এরমধ্যে উৎসবের এই মৌসুমে শেষ মুহূর্তে এসে অনেক পর্যটকই তাদের বুকিং বাতিল করে দিচ্ছেন। এতে করে তাদের জন্য ব্যবসা করা কঠিন হয়ে পড়েছে।