ভারতে মসজিদে হিন্দু বিয়ে!
ভারতের নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ) নিয়ে উত্তাল সমগ্র ভারত। এই আইন মুসলিম বিরোধী বলে প্রতিবাদে গর্জে উঠেছে দেশটির কেরালা রাজ্য। ইতোমধ্যে সিএএ-বিরোধী প্রস্তাব পাশ হয়েছে কেরালা বিধানসভায়। তারই ধারাবাহিকতায় সম্প্রীতির নজির গড়তে এক দরিদ্র হিন্দু নারীর বিয়ের দায়িত্ব নিজেদের হাতে তুলে নেয় কেরালার এক মসজিদ কর্তৃপক্ষ।
রোববার (১৯ জানুয়ারি) কেরালার চেরাভাল্লির স্থানীয় মসজিদের ভেতরেই একজন হিন্দু পুরোহিত সম্পূর্ণ শাস্ত্রীয় রীতি-নীতি মেনে বিয়ে দিলেন শরত শশী আর অঞ্জু অশোকের - আর চেরুভাল্লির শত শত মানুষ ভিড় করে এসেছিলেন সেই উৎসবে সামিল হতে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, মসজিদ কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানেই মসজিদের অভ্যন্তরে অনুষ্ঠিত হয়েছে বিয়ে। শুধু বিয়ের আয়োজন নয় মসজিদ কমিটি নববধূকে ১০টি স্বর্ণমুদ্রা এবং দু'লক্ষ টাকাও উপহার দিয়েছে।
চেরুভাল্লির মুসলিম জামাত মসজিদের রুপ ছিল যেন এক অস্থায়ী বিয়েবাড়ি। বিয়ের অনুষ্ঠানের জন্য মসজিদ চত্বরেই টাঙানো হয়েছিল চাঁদোয়া। তার নিচে মালা বদল থেকে শুরু করে সব হিন্দু আচার-আচরণ মেনে বিয়ের অনুষ্ঠান চলে বেলা সাড়ে ১১টা থেকে সাড়ে ১২টা অবধি।
এরপর প্রীতিভোজ। হিন্দু-মুসলিম নির্বিশেষে হাজার খানেক আমন্ত্রিত দক্ষিণ ভারতবাসী নিরামিষ পদ খান, আশীর্বাদ করেন নবদম্পতিকে। মসজিদ কমিটির এই সাহায্যে অভিভূত নবদম্পতি।
চেরাভাল্লির মসজিদে সেদিন যেমন রোজকার মতোই আজান দেওয়া হয়েছে, তেমনি শাস্ত্রীয় মন্ত্রোচ্চারণে হিন্দু বিবাহও সম্পাদিত হয়েছে।
সাম্প্রদায়িক অশান্তির প্রেক্ষাপটে কেরালার মসজিদে হিন্দু দম্পতির বিয়ে সৃষ্টি করেছে অনন্য নজির।
এই অসাধারণ বিয়ে নিয়ে চেরাভাল্লির সাধারণ মানুষরাই শুধু নন, উচ্ছ্বসিত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীও।
ফেসবুক ও টুইটারে সেই বিয়ের ছবি পোস্ট করে কেরালার বামপন্থী সরকারের প্রধান, পিন্নারাই বিজয়ন লিখেছেন, এই ঘটনা 'এটাই কেরালার একতার চিত্র’।
টুইটে তিনি নবদম্পতি ও তাদের পরিবার, মসজিদ কর্তৃপক্ষ ও চেরাভাল্লির বাসিন্দাদেরও অভিনন্দন জানিয়েছেন।