বাইডেনের গণতন্ত্র সম্মেলনের আমন্ত্রণ প্রত্যাহার করেছে পাকিস্তান
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের উদ্যোগে অনুষ্ঠেয় সামিট ফর ডেমোক্রেসি বা গণতন্ত্র সম্মেলনে অংশ নেবে না বলে জানিয়েছে পাকিস্তান।
৯-১০ ডিসেম্বর ভার্চুয়ালি এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে যেখানে অংশ নিয়েছে শতাধিক দেশ।
বৃহস্পতিবার পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক ঘোষণার মাধ্যমে এই শীর্ষ সম্মেলনে অংশগ্রহণের আমন্ত্রণ প্রত্যাহার করে দেশটি। তবে তাৎক্ষণিকভাবে এর কোনো কারণ জানানো হয়নি।
পাকিস্তানের পররাষ্ট্র দপ্তর জানায়, "গণতন্ত্রের শীর্ষ সম্মেলনে অংশগ্রহণের জন্য পাকিস্তানকে আমন্ত্রণ জানানোয় আমরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি। এই মুহূর্তে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে নানাবিধ ইস্যুতে আমাদের আলোচনা অব্যাহত রয়েছে এবং ভবিষ্যতে একটি উপযুক্ত সময়ে এই বিষয়ে আমরা সম্পৃক্ত হতে পারবো বলে আশা করছি।" দ্য নিউজের খবরে বলা হয়েছে এমন।
এদিকে ওয়াশিংটনকে জানানো হয়েছে, ইসলামাবাদ যুক্তরাষ্ট্রের সাথে তার অংশীদারিত্বকে মূল্য দেয় যা তারা দ্বিপাক্ষিকভাবে আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতার ক্ষেত্রেও প্রসারিত করতে চায়।
উল্লেখ্য, মার্কিন প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পাবার পর প্রায় এক বছর হতে চললেও জো বাইডেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সাথে এখন পর্যন্ত সরাসরি কোনো যোগাযোগ করেননি; অথচ এই সময়কালে তিনি একাধিক বিশ্বনেতার সাথে দেখা বা ফোনে কথা বলেছেন।
বিভিন্ন খাতের ১১০ জন নেতাকে সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন জো বাইডেন।
মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এই শীর্ষ সম্মেলন গণতন্ত্রের জন্য সৃষ্ট চ্যালেঞ্জ এবং সুযোগের উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করবে। পাশাপাশি এটি নেতাদের জন্য পৃথক ও সমষ্টিগত অঙ্গীকার, সংস্কার এবং দেশে-বিদেশে গণতন্ত্র ও মানবাধিকার রক্ষার উদ্যোগের জন্য একটি প্ল্যাটফর্ম প্রদান করবে।
এদিকে সম্মেলনে রাশিয়া ও চীনকে বাদ দিয়ে তাইওয়ানকে আমন্ত্রণ জানানোয় ক্ষুব্ধ হয়েছে বেইজিং।
রাশিয়া এবং চীন পাল্টা এ সম্মেলন প্রত্যাহার করে জানিয়েছে, এটি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মধ্যে নতুন বিভেদের রেখা তৈরি করছে যা আধুনিক বিশ্বের উন্নয়ন বিরোধী। তারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে বৈশ্বিক গণতন্ত্র নিয়ে ভাবতেও মানা করেছে।
প্রসঙ্গত, এই সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি বাংলাদেশকেও।
সুইডেনভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর ডেমোক্রেসি অ্যান্ড ইলেকটোরাল অ্যাসিস্ট্যান্স' (ইন্টারন্যাশনাল আইডিইএ)-এর ২০২১ সালের 'বৈশ্বিক গণতন্ত্র পরিস্থিতি' শীর্ষক প্রতিবেদনে বাংলাদেশের শাসনব্যাবস্থাকে 'হাইব্রিড' ও 'কর্তৃত্ববাদী' বলে চিহ্নিত করা হয়েছে।
বৈশ্বিক গণতন্ত্র পরিস্থিতির প্রতিবেদনে এমন অবস্থানের কারণে মার্কিন গণতন্ত্র সম্মেলনের তালিকা থেকে বাংলাদেশ বাদ পড়তে পারে বলে মনে করছেন অনেক বিশ্লেষক।
চলতি বছরের আগস্টে সম্মেলন ঘোষণার সময় হোয়াইট হাউস বলেছিল, তিনটি প্রধান উদ্দেশ্য নিয়ে অনুষ্ঠিত হবে এ সম্মেলন। এরমধ্যে প্রথমটি হল, কর্তৃত্ববাদের বিরুদ্ধে লড়াই; দ্বিতীয়ত, দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই; এবং সর্বশেষ, মানবাধিকারের প্রতি সম্মান প্রদর্শন।