টিকার কার্যকারিতা থাকছে না বেশিদিন, চতুর্থ ডোজের কথা ভাবছে যুক্তরাষ্ট্র
কোভিড-১৯ টিকার চতুর্থ ডোজ দেওয়ার কথা ভাবছে যুক্তরাষ্ট্র। হোয়াইট হাউসের প্রধান স্বাস্থ্য উপদেষ্টা অ্যান্টনি ফাউচি এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এ কথা জানিয়েছেন।
তবে চতুর্থ ডোজ নিয়ে উঠেছে নানান প্রশ্ন। মাত্র তৃতীয় ডোজ দেওয়া শুরু হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে। আর এরমধ্যেই চতুর্থ ডোজ নিয়ে ভাবনা শুরু করায় অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, তাহলে কি শরীরে টিকার কার্যকারিতা স্থায়ী হচ্ছেনা বেশিদিন? আমেরিকায় মূলত দেওয়া হচ্ছে ফাইজার ও মডার্নার এমআরএনএ ভিত্তিক টিকা। সম্প্রতি এক গবেষণায় দাবি করা হচ্ছে, চার মাসের মধ্যেই কেটে যাচ্ছে ডোজ়গুলোর প্রভাব।
গবেষণাটি করেছে মার্কিন সেন্টারস অব ডিজ়িজ় কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি)। শুক্রবার তাদের প্রকাশিত প্রতিবেদনে স্পষ্ট জানানো হয়েছে, ফাইজার ও মডার্নার এমআরএনএ টিকার কার্যকারিতা চার মাস পর থেকে ধীরে ধীরে কমতে শুরু করে। তবে, এ বিষয়ে বিশেষ কোথাও উল্লেখ করা না হলেও বিভিন্ন ক্ষেত্রে শোনা যাচ্ছে, দুই ডোজের পরেও টিকার প্রভাব কমতে শুরু করছে।
সিডিসি'র নতুন গবেষণাটিতে হাসপাতাল বা ক্লিনিকের জরুরি বিভাগের ২ লাখ ৪১ হাজার ২০৪টি সংক্রমণের ঘটনা এবং ৯৩ হাজার ৪০৮ জনের গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি হওয়া পর্যবেক্ষণ করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। গেল বছর ২৬ অগস্ট থেকে চলতি বছরের ২২ জানুয়ারি পর্যন্ত সময়ের মধ্যে চালানো হয়েছে এই পর্যবেক্ষণ।
টিকার কার্যকারিতা বিচার করার সময় বিবেচনা করা হয় এর সব দিক। টিকা গ্রহণ করেননি এমন ব্যক্তির কোভিড পজিটিভ হওয়া এবং টিকা নেওয়ার পরেও সংক্রমিত হওয়া, এই দুটি দিক তুলনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এছাড়া বিশ্বের কোন অঞ্চল, টিকাপ্রাপকদের বয়স কত, স্থানীয় সংক্রমণের পরিমাণ কেমন, রোগের বৈশিষ্ট্য কী ধরনের, কারও কো-মর্বিডিটি আছে কি না, এ সবকিছুই পরীক্ষা করে দেখা হয়।
ওমিক্রন সংক্রমণের ক্ষেত্রে দেখা গেছে, সংক্রমণ ঠেকাতে টিকার কার্যকারিতা কমে গেছে অনেকটাই। দেখা যাচ্ছে, দুই ডোজ় টিকা নেওয়ার পরে শরীরে টিকার কার্যকারিতা রয়েছে মাত্র ৮৭ শতাংশ। কিন্তু চতুর্থ ডোজ়ের সময় আসতে আসতে তা কমে ৬৬ শতাংশে গিয়ে ঠেকছে।
এতদিন বিশেষজ্ঞরা বলেছিলেন, সংক্রমণ ঠেকাতে ব্যর্থ হলেও হাসপাতালে ভর্তি আটকাতে টিকা অনেকটাই সফল। প্রাথমিকভাবে দেখা গিয়েছিল, দুই ডোজ়ের পরে ৯১ শতাংশ কার্যকর ছিল টিকা। কিন্তু এখন তা কমে নেমে এসেছে মাত্র ৭৮ শতাংশে।
গবেষণাপত্রটিতে তৃতীয় ও চতুর্থ বুস্টার ডোজ় দেওয়ার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। প্রতিবেদনের লেখক স্পষ্ট করে বলেছেন, "এমআরএনএ টিকার তৃতীয় ডোজ় নেওয়ার পরে যা দেখা যাচ্ছে, তাতে অতিরিক্ত বুস্টার ডোজ় দেওয়ার কথা ভাবা উচিত কিনা, সে নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে।"
- সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা