বাটলার ঝড়ে যুক্তরাষ্ট্রকে গুঁড়িয়ে সেমি-ফাইনালে ইংল্যান্ড
বল হাতে শুরুটা করে দিলেন রিস টপলে। তার সুরে সুর মিলিয়ে তোপ দাগলেন স্যাম কারান ও আদিল রশিদ। যুক্তরাষ্ট্রকে অল্প রানে আটকানোর পেছনে বড় অবদান নিজের জন্মস্থানে রেকর্ড গড়ে হ্যাটট্রিক করা ক্রিস জর্ডানেরও। ছোট লক্ষ্য তাড়ায় টর্নেডো বইয়ে দিলেন অধিনায়ক জস বাটলার। বিশাল জয়ে টানা চতুর্থবারের মতো টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমি-ফাইনালে উঠে গেল ইংল্যান্ড।
রোববার বার্বাডোজের কেনিংসটন ওভালে সুপার এইটের দুই নম্বর গ্রুপের ম্যাচে যুক্তরাষ্ট্রকে ১০ উইকেটে গুঁড়িয়ে দিয়েছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। বিশ্ব আসরে এ নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো ১০ উইকেটের জয় পেল ইংলিশরা। ২০২২ বিশ্বকাপে অ্যাডিলেডে ভারতকে একই ব্যবধানে হারায় তারা।
তিন ম্যাচে ২ জয়ে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে ইংল্যান্ড। এই গ্রুপের একটি ম্যাচ বাকি আছে, যে ম্যাচে লড়বে দক্ষিণ আফ্রিকা ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ। যে দল জিতবে তারাই যাবে সেমিতে। দুই জয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার চার পয়েন্ট, জিতলে ৬ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষ দল হিসেবে শেষ চারে উঠবে তারা। ওয়েস্ট ইন্ডিজের নেট রান রেট অেনেক ভালো হওয়ায় তারা জিতলেই সেমির টিকেট পাবে। তবে এই ম্যাচের ফল যাই হোক, ইংল্যান্ড দুইয়েই থাকবে। এ কারণে সবার আগে সেমিতে উঠে গেল তারা।
সুপার এইটের সবগুলো ম্যাচ হেরে বিদায় নিলো যুক্তরাষ্ট্র। তবে শেষ আটের সাফল্যই তাদের কাছে মনে রাখার মতো হওয়ার কথা। এবারই প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপে অংশ নেওয়া দলটি গ্রুপ পর্বে হারায় কানাডা ও পাকিস্তানকে। ভারতেরও কঠিন পরীক্ষা নেয় বিশ্বকাপের সহ-আয়োজকরা। গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচটি বৃষ্টিতে ভেসে গেলে মোট ৫ পয়েন্ট নিয়ে সুপার এইটে ওঠে যুক্তরাষ্ট্র।
টস হেরে আগে ব্যাটিং করতে নামে যুক্তরাষ্ট্র। ইংল্যান্ডের দুর্বার বোলিংয়ের সামনে নিতিশ কুমার ও কোরি অ্যান্ডারসন ছাড়া কেউ-ই লড়তে পারেননি। ১৮.৫ ওভারে ১১৫ রানে অলআউট হয়ে যায় যুক্তরাষ্ট্র। ছোট লক্ষ্য তাড়ায় ফিল সল্টকে এক পাশে রেখে তাণ্ডব চালান বাটলার। তার খুনে ব্যাটিংয়ে মাত্র ৯.৪ ওভারেই (৬২ বল হাতে রেখে) ১০ উইকেটের জয় তুলে নেয় ইংল্যান্ড। ৪৪ বলে ৬টি চার ও ৭টি ছক্কায় অপরাজিত ৮৩ রান করেন বাটলার। ইনিংসের নবম ওভারে হারমিত সিংকে ৫টি ছক্কা মারেন ডানহাতি এই উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান। ২১ বলে ২টি চারে ২৫ রানে অপরাজিত থাকেন সল্ট।
এর আগে ব্যাটিং করা যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে সর্বোচ্চ রানের ইনিংস খেলেন নিতিশ, ২৪ বলে একটি চার ও ২টি ছক্কায় ৩০ রান করেন তিনি। ২৮ বলে ২৯ রান করেন অ্যান্ডারসন। এ ছাড়া স্টিভেন টেইলর ১২, অ্যারন জোন্স ১০ ও হারমিত সিং ২১ রান করেন। ২টি করে উইকেট নেন কারান ও ম্যাচসেরা আদিল। ২ উইকেট নিতে ৪ ওভারে ১৩ রান দেন আদিল। একটি করে উইকেট নেন টপলে ও লিভিংস্টোন।
চার উইকেট থাকলেও ১৯তম ওভারে যুক্তরাষ্ট্রকে গুটিয়ে দেন জর্ডান। ডানহাতি পেসার এক ওভারে হ্যাটট্রিকসহ ৪ উইকেট নেন। ২.৫ ওভারে তার খরচা ১০ রান। এই হ্যাটট্রিকে অনন্য এক কীর্তি নাম উঠেছে জর্ডানের। ইংল্যান্ডের প্রথম বোলার হিসেবে টি-টোয়েন্টিতে হ্যাটট্রিকের স্বাদ নিলেন তিনি। বিশ্বকাপে এটা নবম হ্যাটট্রিক, এবারের আসরের তৃতীয়। বাকি দুটি হ্যাটট্রিক অস্ট্রেলিয়ার পেসার প্যাট কামিন্সের।