বাংলাদেশেই হবে নারী বিশ্বকাপ, আশাবাদী ক্রীড়া উপদেষ্টা
আগামী অক্টোবরে বাংলাদেশে হওয়ার কথা মেয়েদের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। ৩ থেকে ২০ অক্টোবর পর্যন্ত ঢাকা ও সিলেটে আসরটি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। কিন্তু গত কয়েক সপ্তাহে দেশে ঘটে যাওয়া ঘটনার প্রেক্ষিতে মেয়েদের বিশ্ব আসরটি বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত হওয়া নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে। ইতোমধ্যে বিকল্প ভেন্যু প্রস্তুত রাখার কাজ শুরু করার কথা জানিয়েছে আইসিসি।
তবে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পাওয়া অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বাংলাদেশে নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আয়োজনের ব্যাপারে আশাবাদী। দেশের একটি জাতীয় দৈনিককে তিনি বলেছেন, 'আমি এখন থেকেই তৎপরতা শুরু করেছি। আশা করি, এটা (নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ) বাংলাদেশের বাইরে যাবে না। দেশ গঠনের সময়ে যদি এ রকম কিছু ঘটে, তাহলে সেটা আমাদের ভাবমূর্তির জন্য খুবই ক্ষতিকর হবে।'
বাংলাদেশের পরিস্থিতি বিবেচনায় বাধ্য হয়ে যদি বিকল্প ভেন্যু বেছে নিতে হয়, সেক্ষেত্রে প্রস্তুতি রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছে আইসিসি। বিকল্প ভেন্যুর তালিকায় আছে ভারত, আরব আমিরাত ও শ্রীলঙ্কার নাম। কিন্তু আসিফ মাহমুদের বিশ্বাস আসরটি বাংলাদেশই আয়োজন করা সম্ভব হবে। এ পথে তার বড় ভরসা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। আসিফ মাহমুদ বলেছেন, 'আমাদের সৌভাগ্য, ইউনূস স্যার আছেন সঙ্গে। আমাদের যেসব বিনির্মাণ করা প্রয়োজন, সচিবের কাছে কিছু কিছু শুনেছি। সেসব সংস্কারের জন্য আমরা রোববারই বসব। আমি সচিবের সঙ্গে বসব। মন্ত্রণালয়ে বসে আমরা সিদ্ধান্ত নেব।'
'আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ব্যক্তিত্ব ড. মুহাম্মদ ইউনূস স্যার আমাদের নেতৃত্বে আছেন, যিনি নিজেও ক্রীড়াপ্রেমী। তিনি কিছু দিন আগে অলিম্পিকের সঙ্গেও সম্পৃক্ত ছিলেন। তার সঙ্গে কথা বলে আশা করি নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আমাদের দেশেই ঠিকঠাক আয়োজন করতে পারব। এটা আয়োজনে সর্বোচ্চ চেষ্টা করব।' একই চেষ্টা থাকবে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডেরও (বিসিবি), যে চেষ্টা শুরুও করে দিয়েছে দেশের ক্রিকেটের অভিভাবক সংস্থা। বৈশ্বিক টুর্নামেন্টের নিরাপত্তাব্যবস্থা ঠিক রাখতে বিসিবি ইতোমধ্যে সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বরাবর চিঠি দিয়েছে বলে জানা গেছে।
১০ বছর ধরে বিসিবি সভাপতির পদে আছেন নাজমুল হাসান পাপন। টানা চতুর্থবার নির্বাচিত হয়ে বাফুফের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন কাজী সালাউদ্দিন। দেশের সবচেয়ে বড় এই দুই ফেডারেশনের প্রধানের পদে পরিবর্তন আসবে কিনা, এমন প্রশ্নের উত্তরে ক্রীড়া উপদেষ্টা বলেন, 'নেতৃত্বের ব্যক্তি নিয়ে কথা বলা উচিত নয়। আমরা প্রসেসের জন্য, সিস্টেমের জন্য আন্দোলন করেছি। সিস্টেমে বিশ্বাস করি, আমরা সিস্টেমের সংস্কার করব। একটা সিস্টেম প্রতিষ্ঠা করব, সেখানে যিনিই নেতৃত্বে আসবেন, প্রতিষ্ঠান হিসেবে ক্রীড়া ক্ষেত্রে বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারব।'
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালীন আইসিসির এক কর্মকর্তা জানিয়েছিলেন, বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। বিকল্প ভেন্যু প্রস্তুত রাখার কাজও শুরু করা হয়েছে। আইসিসি কর্মকর্তা বলেছিলেন, 'বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি), তাদের নিরাপত্তা সংস্থা এবং আমাদের নিজস্ব নিরাপত্তা পরামর্শকদের সঙ্গে নিয়ে বাংলাদেশের পরিস্থিতি ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করছে আইসিসি। আমাদের অগ্রাধিকার হলো অংশগ্রহণকারী সব দলের নিরাপত্তা ব্যবস্থা সুরক্ষিত করা।'