নেপালকে উড়িয়ে যুব সাফের চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ
শিরোপা জয়ের পথে প্রধান বাধা ছিল ভারত। ২০২২ সালের ফাইনালে তাদের বিপক্ষেই যে হেরে শিরোপা খোয়ায় বাংলাদেশ। এবার সেমি-ফাইনালে দলটির বিপক্ষে হিসাব মিলিয়ে ফাইনালের টিকেট কাটে তারা। অবশ্য নেপালও দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে উঠেছিল। গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে স্বাগতিকদের বিপক্ষে হেরে যায় বাংলাদেশের যুবারা। কিন্তু শিরোপার লড়াইয়ে দেখা ভিন্ন বাংলাদেশকে, প্রতিপক্ষকে পাত্তাই দিলো না তারা। দাপুটে জয়ে অনূর্ধ্ব-২০ সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের চ্যাম্পিয়নের মুকুট জিতে নিলো মারুফুল হকের দল।
বুধবার নেপালের ললিতপুরের আনফা কমপ্লেক্সে এক তরফা ফাইনালে স্বাগতিকদের ৪-১ গোলে হারিয়েছে বাংলাদেশ। বয়সভিত্তিক এই টুর্নামেন্টে অনূর্ধ্ব-২০ ক্যাটাগরিতে প্রথমবারের মতো শিরোপা জিতলো বাংলাদেশ। সাফের বয়সভিত্তিক অন্য সব প্রতিযোগিতার শিরোপা জিতলেও এটা বাকি ছিল। সতীর্থকে দিয়ে একটি করানোসহ দলের পক্ষে জোড়া গোল করেন মিরাজুল ইসলাম। বাংলাদেশের পক্ষে বাকি দুটি গোল করেন রাব্বী হোসেন রাহুল ও পিয়াস আহমেদ নোভা।
শেষ বাঁশি বাঁজতেই উল্লাসে ভেসে যাননি বাংলাদেশের যুবারা। মাঠেই লাইন ধরে দাঁড়িয়ে গেলেন সবাই, আনা হলো বাংলাদেশের পতাকা। দুটি পতাকা সামনে রেখে জানানো হলো সম্মান, কেউ কেউ গিয়ে চুমু কেলেন পতাকাতে। এই পর্ব শেষে পতাকা নিয়ে ভোঁ দৌড়, বিজয়ের আনন্দের মাঠের এদিক-সেদিক ছুটতে থাকলেন বাংলাদেশের তরুণ ফুটবলাররা। এর মাঝে কোচ মারুফুলকেও মনে রাখেন তারা, সবাই মিলে গুরুকে কয়েকবার শূন্যে উড়িয়ে সারেন উদযাপন পর্ব।
নেপালের বিপক্ষে গ্রুপ পর্বে হারের প্রতিশোধটা শিরোপা লড়াইয়ে নিয়ে নিলো বাংলাদেশ। গ্রুপ পর্বে নিজেদের শেষ ম্যাচে স্বাগতিকদের বিপক্ষে ২-১ গোলে হেরে যান মিরাজুল-নোভারা। রানার্স আপ হয়ে সেমি-ফাইনালে ওঠা বাংলাদেশ দারুণ ফুটবল খেললেও ভারতের বিপক্ষে সেভাবে দাপট দেখাতে পারেনি। বাংলাদেশ আগে গোল করলেও ম্যাচ সমতায় শেষ হয়। টাইব্রেকারে বদলি গোলরক্ষকক আসিফ হোসেনের বীরত্বে ভারতকে ৪-৩ গোলে হারায় বাংলাদেশ।
আজ ফাইনালে নেপালের বিপক্ষে শাসন করে খেলেছে বাংলাদেশ, স্কোরলাইন সেটাই বলে। যদিও শুরুতে ভিন্ন চিত্র ছিল। শুরুতে আক্রমণ, পাল্টা আক্রমণে এগোয় খেলা। তবে সময় গড়ানোর সাথে সাথে আধিপত্য বাড়তে থাকে নেপালের। যদিও মোমেন্টাম কাজে লাগিয়ে গোল আদায় করতে পারেনি তারা, উল্টো বাংলাদেশই এগিয়ে যায়। এরপর পাল্টে যায় ম্যাচে চেহারা।
প্রথমার্ধের শেষ দিকে বক্সের একটু ওপরে ফাউলের শিকার হন মিরাজুল, ফ্রি কিক পায় বাংলাদেশ। মিরাজুলের বুলেট গতির শট নেপালের গোললক্ষক জয়রথ শিখের গ্লাভস ফাঁকি দিয়ে জালে জড়ায়। এগিয়ে থেকে বিরতিতে যায় বাংলাদেশ। ফিরেই আবার গোলের দেখা পায় উজ্জীবিত বাংলাদেশ। ৫৫তম মিনিটে আসাদুল ইসলামের লং পাসে হেড নেন আসাদুল মোল্লা, মিরাজুলও হেডেই নিজের ও দলের দ্বিতীয় গোল আদায় করে নেন।
৭০তম মিনিটে আরও এগিয়ে যায় বাংলাদেশ, প্রায় নিশ্চিত হয়ে যায় তাদের শিরোপা জয়। বক্সের ভেতর থেকে মিরাজুলের ছোট পাস থেকে বল পেয়ে ডান পায়ের বাঁকানো দারুণ শটে বল জালে জড়ান রাব্বী হোসেন। ১০ মিনিট পর হেডে গোল করে নেপালের ব্যবধান কমান সমীর। যোগ করা ১০ মিনিটের জোর চেষ্টা চালিয়েও আর ব্যবধান কমাতে পারেনি ঘরের মাঠের দলটি। উল্টো বাংলাদেশই আরও এগিয়ে যায়, যোগ করা সময়ের পঞ্চম মিনিটে চতুর্থ গোল করে তারা।