১০ বছরের ‘দুঃখ’ ঘোচাতে প্রস্তুত জ্যোতিরা
প্রথমবারের মতো টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে অংশ নেওয়া, সেটাও ঘরের মাঠে। প্রথম উপলক্ষ্য রাঙিয়ে নিয়েছিল বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দল। ঘরের মাঠের সেই বিশ্ব আসরে দুটি ম্যাচ জেতে বাংলাদেশ, হারায় শ্রীলঙ্কা ও আয়ারল্যান্ডকে। কিন্তু সুখস্মৃতির বইয়ে পৃষ্টা ওই দুটিই। এরপর চারটি বিশ্বকাপে অংশ নিয়ে একটি ম্যাচও জিততে পারেনি বাংলাদেশ। এবার সেই অপেক্ষা ফুরাতে চায় তারা। ১০ বছর ধরে জিততে না পারার দুঃখ এবার ঘোচানোর প্রত্যয় নিগার সুলতানা জ্যোতির কণ্ঠে।
বাংলাদেশ অধিনায়ক অবশ্য এবার আরও বড় আশার কথা জানিয়ে গেছেন। জয়খরা কাটিয়ে এবার সেমি-ফাইনালে ওঠার জন্য লড়াই করবেন তারা। বাংলাদেশের সেই লড়াই শুরু হচ্ছে উদ্বোধনী দিনে। মেয়েদের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের নবম আসর মাঠে গড়াচ্ছে কাল, প্রথম ম্যাচেই মাঠে নামছে বাংলাদেশ। এই ম্যাচে জ্যোতি-মারুফাদের প্রতিপক্ষ স্কটল্যান্ড, যাদের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টিতে কখনও হারেনি বাংলাদেশ।
জয়খরা কাটানোর মিশনের শুরুতেই এমন প্রতিপক্ষ পেয়ে স্বভাবতই আত্মবিশ্বাসী বাংলাদেশ। শুরুর ম্যাচ জিতে বাকি পথেও লড়াকু পারফরম্যান্সে এবারের বিশ্বকাপ স্মরণীয় করতে রাখতে চান জ্যোতি। বাংলাদেশ অধিনায়ক বলেন, 'আমি বলবো, পুরো দলের জন্য অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ (এবারের আসর) এই জন্য যে, আমরা যতোগুলো বিশ্বকাপ খেলেছি; ২০১৪ ছাড়া বলার মতো তেমন কিছু করতে পারিনি। আমাদের জন্য এটা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ এ জন্য যে, আমরা চাই যেন এই বিশ্বকাপটা গোণায় ধরার মতো এবং মনে রাখার মতো হয়।'
২০১৪ সালের পর চারটি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ১৬টি ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ, কোনো ম্যাচেই শেষ হাসি হাসা হয়নি তাদের। ১০ বছর জিততে না পারার ব্যাপারটি রীতিমতো দুঃখে পরিণত হয়েছে বাংলাদেশের মেয়েদের জন্য। এবার যেকোনো মূল্যে সেই দুঃখ ঘোচাতে চান তারা। জ্যোতি বলেন, 'আমি বলবো যে খুবই হতাশাজনক। কিন্তু আমি বিশ্বাস করি, এই দুঃখ এবার আমরা ঘোচাতেই চাই। যেন আমাদের এই দুঃখ আর না থাকে, শুরুটা করতে চাই আগামীকালের ম্যাচ দিয়ে।'
দুই প্রস্তুতি ম্যাচের একটিতে জেতে বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে না পারলেও হারায় পাকিস্তানকে। জেতার এই মানসিকতা নিয়েই শুরু করতে চান জ্যোতি, 'আমাদের দল যেভাবে খেলে এসেছে, শেষ ওয়ার্ম আপ ম্যাচটা যেভাবে খেলেছে পাকিস্তানের বিপক্ষে। সবাই একটা ভালো শেপে আছে। সবার ভেতর ম্যাচ জেতার ক্ষুধা আছে। একজন আরেকজনকে ব্যাক করেছে মাঠে। ব্যাটিং ইউনিট অনেক ভালো করেছে, ভালো একটা স্কোর দাঁড় করিয়েছে। বোলাররা অনেক ভালো বেশি ব্যাকআপ দিয়েছে। এখন পর্যন্ত সবকিছু মিলিয়ে যদি চিন্তা করি, দল একটা ভালো অবস্থায় আছে। আমরা জয়ের জন্যই খেলবো।'
স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচটি জ্যোতির ক্যারিয়ারের শততম টি-টোয়েন্টি। এই ম্যাচের আগে রোমাঞ্চিত বাংলাদেশ অধিনায়ক, 'অন্যরকম অনুভূতি একশতম ম্যাচ খেলার, অনেক বেশি খুশি। অনেক সময় অবাকও লাগে, মনে হয় এইতো ক্যারিয়ার শুরু করেছি। দেখতে দেখতে প্রায় একশটা ম্যাচ হয়ে যাচ্ছে। ওদিক থেকে আমি অনেক আনন্দিত। সব থেকে খুশি হবো যদি ম্যাচে বাংলাদেশের জয়ে কোনো অবদান রাখতে পারি, সেটা হবে সবচেয়ে বেশি মনে রাখার মতো।'
জ্যোতির মতো জয়ে শুরু করতে আত্মবিশ্বাসী প্রধান কোচ হাশান তিলকারত্নেও। তিনি বলেন, 'সবাই এই টুর্নামেন্টের দিকে তাকিয়ে আছে। যদি আপনি দুটি প্রস্তুতি ম্যাচ দেখেন। প্রথমটা প্রত্যাশা মতো হয়নি, দ্বিতীয়টিতে পাকিস্তানের বিপক্ষে মেয়েরা খুব ভালো খেলেছে। টুর্নামেন্টটা বাংলাদেশের জন্য ইতিবাচক। মেয়েরা খুব আত্মবিশ্বাসী। তারা আগামীকালের ম্যাচটার দিকে তাকিয়ে। মোমেন্টামের শুরুটা প্রথম ম্যাচ থেকেই শুরু হয়। এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ, আমরা সেরা খেলাটা খেলবো ও ইতিবাচক ফল আনবো। আমি নিশ্চিত, মেয়েরা আত্মবিশ্বাসী।'