সাফের সেরা বাংলাদেশের ঋতুপর্ণা-রূপনা
দারুণ খেললেও গোল করতে না পারায় আক্ষেপ ছিল ঋতুপর্ণা চাকমার। সেই আক্ষেপের কথা জানিয়েও ছিলেন বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের এই মিডফিল্ডার। কিন্তু কে জানতো তার করা গোলেই বাংলাদেশ ওড়াবে বিজয় নিশান, টানা দ্বিতীয়বারের মতো জিতবে নারী সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা! ইতিহাস গড়ার অধ্যায়ে এমন অপ্রত্যাশিত মোড় থাকে, যা আগে থেকে বোঝা যায় না।
বুধবার কাঠমাণ্ডুর দশরথ স্টেডিয়ামে নেপালকে ২-১ গোলে হারিয়ে দক্ষিণ এশিয়ার শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট জিতেছে বাংলাদেশের মেয়েরা। বিজয়ের এই গল্পে ঋতুপর্ণা হয়ে উঠেছেন রূপকথার রাজকুমারী। ১-১ সমতায় ম্যাচ যখন শেষের পথে এগোচ্ছিল, তখনই ত্রাতা হয়ে হাজির হন তিনি। বাঁ পাশ দিয়ে আক্রমণে গিয়ে দারুণ বাঁকানো শটে বল জালে জড়ান ২০ বছর বয়সী এই ফুটবলার। তার গোলেই নিশ্চিত হয় বাংলাদেশের শিরোপা।
টুর্নামেন্টজুড়ে আলো ছড়িয়েছেন, ফাইনালে এমন সময়ে খুঁজে নিয়েছেন জালের ঠিকানা; সব বিবেচনায় তার হাতেই তুলে দেওয়া হয়েছে টুর্নামেন্ট সেরার পুরস্কার। যেটাকে সাফ বলেছে, 'মোস্ট ভ্যালুয়েবল প্লেয়ার অব দ্য টুর্নামেন্ট'। ফাইনালে তার দামি গোলটার মতো তিনিও পেয়েছেন দামি খেলোয়াড়ের তকমা। যদিও টুর্নামেন্টে বেশি গোল করা হয়নি ঋতুপর্ণার, তার পা থেকে এসেছে ২টি গোল।
সেরা গোলরক্ষকের পুরস্কার জিতেছেন বাংলাদেশের রূপনা চাকমা। গত আসরে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পথেও এই পুরস্কারটি জেতেন ২০ বছর বয়সী এই তরুণী। এবারের টুর্নামেন্টে বাংলাদেশ গোল করেছে ১৩টি, হজম করেছেন ৪টি গোল। এটা সম্ভব হয়েছে রূপনার দারুণ পারফরম্যান্সের কারণেই। টুর্নামেন্টজুড়ে দলের ভরসার হাত হয়ে থেকেছেন তিনি। ফাইনালে কিছুটা গড়বড় করলেও কয়েকটি আক্রমণ থেকে দলকে বাঁচিয়েছেন তিনি।
টুর্নামেন্টে বেশি গোল করতে না পারলেও প্রতিটা ম্যাচেই দুর্বার ছিলেন ঋতুপর্ণা। আক্রমণভাগে তিনিই ছিলেন বাংলাদেশের প্রধান অস্ত্র। সেমি-ফাইনালে গোলখরা কাটিয়ে ফাইনালে তিনি এমন ঝলক দেখালেন, তাতে আলোকিত হয়ে উঠলো পুরো দলই। টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড় হয়ে ট্রফির সঙ্গে আর্থিক পুরষ্কারও জিতেছেন ঋতুপর্ণা। যা দিয়ে মায়ের জন্য কিছু জিনিস কিনতে চান তিনি।
টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার জেতা ঋতুপর্ণা ফাইনালেরও সেরা খেলোয়াড় হয়েছেন। পুরস্কার নিতে গিয়ে ভাঙা ভাঙা ইংরেজিতে বাংলাদেশের এই মিডফিল্ডার বলেন, 'খুবই ভালো লাগছে। প্রথমবারের মতো এই পুরস্কার জিতলাম। এটা স্বপ্নের মতো। আমরা দ্বিতীয়বারের মতো সাফ চ্যাম্পিয়ন হয়েছি। আমার পরিবার আমাকে অনেক সাপোর্ট করেছে। বাংলাদেশের মানুষের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। তাদের সমর্থন ও দোয়ায় আজ আমরা দ্বিতীয়বারের মতো সাফ চ্যাম্পিয়ন হয়েছি।'