‘বাংলাদেশকে ভালোবেসেছিলাম, কিছু মানুষ বিশ্বাস করেনি’
ছেড়ে যাওয়া জায়গায় কেই-বা ফিরতে চায়! ছেড়ে যাওয়ার ধরনটা যদি হয় কষ্টের, সেখানে ফিরে আসার কথা চিন্তাতেও আনেন না অনেকে। কিন্তু ব্যতিক্রম জেমি সিডন্স। ২০০৭ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ দলের প্রধান কোচের দায়িত্ব পালন করা অস্ট্রেলিয়ান এই কোচের বিদায় মধুর ছিল না। বিসিবির সঙ্গে চুক্তি শেষ হওয়ার পরও থাকতে চেয়েছিলেন সিডন্স।
এমনকি প্রধান কোচের দায়িত্ব ছেড়ে ব্যাটিং কোচ হতেও আপত্তি ছিল না তার, অনেক চেষ্টাও করেছিলেন। কিন্তু বিসিবি চুক্তি নবায়ন বা নতুন ভূমিকায় তাকে রাখেনি। সেই সিডন্সই ১১ বছর পর ব্যাটিং পরামর্শক হয়ে বাংলাদেশে এসে ঘরে ফেরার উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে যাচ্ছেন। অবলীলায় জানিয়ে যাচ্ছেন, বাংলাদেশে ফেরার সুযোগ আসবে; এমন আশাতে দিন কেটেছে তার। তাই সব সময়ই বাংলাদেশের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছেন তিনি।
এতো আগ্রহের কারণ কী? পেশাদারিত্বের জায়গা থেকে চাকরি, বেতন; এসব ব্যাপার অবশ্যই এখানে জড়িত। তবে সবচেয়ে বড় কারণ বাংলাদেশ এবং এখানকার ক্রিকেটকে ভালোবেসে ফেলা। চার বছর বছর প্রধান কোচের দায়িত্ব পালন করা সময়টায় বাংলাদেশের প্রেমে পড়ে যান তিনি। যদিও কিছু মানুষ তা বিশ্বাস করেনি বলে জানালেন তিনি।
প্রথম দুই ওয়ানডে দিয়ে আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজ জিতে নিয়েছে বাংলাদেশ। আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে বাংলাদেশের লক্ষ্য আফগানদের হোয়াইটওয়াশ করা। এর আগে দুদিন সময়, প্রথম দিনে শিষ্যদের সঙ্গে ব্যাটিংয়ের বিভিন্ন দিক নিয়ে কাজ করেছেন সিডন্স।
পরে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে নানা বিষয়ে কথা হয় অজি এই কোচের। যেখানে তাকে উত্তর দিতে হয় বাংলাদেশের ব্যাটিং পরামর্শক হয়ে আসার কারণ নিয়েও। কী কারণে চাকরিটা নিলেন? উত্তরে কোনো রাখঢাক না রেখে সিডন্স বলেন, 'বিশ্বের যেকোনো জায়গায় কোচিং করাতে আমি প্রস্তুত ছিলাম। আমি বাংলাদেশের সঙ্গে সব সময় যোগাযোগ রেখেছি। বোর্ডের কিছু সদস্য, যাদেরকে অতীত থেকে আমি খুব ভালোভাবে চিনি অথবা বেশ কিছু খেলোয়াড়; এদের সঙ্গে আমার যোগাযোগ ছিল।'
'এইচপির ব্যাটিং পরামর্শক হিসেবে কাজ করা একটি সুযোগ আসে আমার। যেখানে সব জুনিয়র খেলোয়াড় ও জাতীয় দল অন্তর্ভুক্ত। তবে সব সময়ই আমার জাতীয় দলের খেলোয়াড়দের সাথে কাজ করার কথা ছিল, এমনই বলা হয়েছিল। যেটা পূর্ণ মেয়াদে হতে পারে, নাও পারে; আমি এ নিয়ে নিশ্চিত ছিলাম না। ওটা নিয়ে আমি মাথাও ঘামাইনি।' যোগ করেন সাকিব-তামিমদের ব্যাটিং পরামর্শক।
তবে বাংলাদেশে ফেরার আসল কারণ ভালোবাসার টান। সিডন্স বলেন, 'শেষবার কাজ করার সময় আমি বাংলাদেশকে ভালোবাসেছিলাম, কিন্তু কিছু মানুষ সেটা বিশ্বাস করেনি। শেষবার তিন (চার বছর) বছর এখানে কাটানো সময়কে আমি ভালোবেসেছি। আমি উন্মুখ ছিলাম এবং এই আশায় ছিলাম যে এখানে ফিরে আসার সুযোগ হবে। এখন আমি এখানে।'
২০০৭ সালের অক্টোবরে বাংলাদেশের প্রধান কোচের দায়িত্ব নেন জেমি সিডন্স। ডেভ হোয়াটমোর দায়িত্ব ছাড়ার পর অন্তর্বর্তীকালীন কোচ হিসেবে কয়েক মাস প্রধান কোচের দায়িত্ব পালন করেন অনূর্ধ্ব-১৯ দলের কোচ শন উইলিয়ামস। পরে তাকে সরিয়ে কোচ করা হয় সিডন্সকে।
২০১১ সাল পর্যন্ত প্রধান কোচের পদে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। সিডন্সের অধীনে বাংলাদেশ ১৯ টেস্টের মধ্যে ২টিতে জয় পায়। এ ছাড়া ৮৪ ওয়ানডের ৩১টিতে জেতে বাংলাদেশ। তবে তার অধিনে ৮ টি-টোয়েন্টি খেললেও বাংলাদেশ কোনো ম্যাচে জয় পায়নি।