করোনা মোকাবেলায় সরকার জনগণের পাশে আছে: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা করোনা ভাইরাসের সংক্রমণরোধে দেশবাসীকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। রোববার বিকেলে প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবনে এক অনির্ধারিত অনুষ্ঠানে বক্তৃতায় জানান, সবকিছু নিয়ে সরকার জনগণের পাশে আছে।
ওই অনুষ্ঠানে করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় সরকারকে সহায়তা করতে সশস্ত্র বাহিনীসহ সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের একদিনের সমপরিমাণ বেতনের অর্থ প্রধানমন্ত্রীর হাতে তুলে দেওয়া হয়।
এ সময় ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে করোনা সঙ্কট মোকাবেলায় কয়েকটি ব্যবসায়ী গ্রুপের পক্ষ থেকেও অর্থ সহায়তা দেওয়া হয়।
দেশবাসীকে ধৈর্যের সঙ্গে এই সঙ্কট মোকাবেলা করার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিভিন্ন দেশ বাংলাদেশের কাছ থেকে করোনা সঙ্কট মোকাবেলায় সহযোগিতা চায়।
এদিকে করোনা মোকাবেলায় পরামর্শ ও আহ্বান সংবলিত চারটি বার্তা জনগণের কাছে পৌঁছে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধান তথ্য কর্মকর্তা সুরথ কুমার সরকার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই বার্তাগুলো প্রচারের জন্য অনুরোধ জানান। খবর বাসসের।
প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ ও বার্তাগুলো নিচে প্রকাশ করা হলো:
করোনাভাইরাস মোকাবিলায় আপনার করণীয়
প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে বের হবেন না। বাইরে বের হলে মানুষের ভিড় এড়িয়ে চলুন। যারা করোনা ভাইরাস-আক্রান্ত হয়ে বিদেশ থেকে ফিরেছেন, তারা ১৪ দিন সম্পূর্ণ আলাদা থাকুন। ঘনঘন সাবান-পানি দিয়ে হাত ধুতে হবে। হাঁচি-কাশি দিতে হলে রুমাল বা টিস্যু পেপার দিয়ে নাক-মুখ ঢেকে নিন। যেখানে-সেখানে কফ-থুথু ফেলবেন না। করমর্দন বা কোলাকুলি থেকে বিরত থাকুন।
মুসলমান ভাইয়েরা ঘরেই নামাজ আদায় করুন। অন্যান্য ধর্মাবলম্বীরাও ঘরে বসে প্রার্থনা করুন। পরিবার, পাড়াপ্রতিবেশী এবং দেশের মানুষের জীবন রক্ষার্থে এসব পরামর্শ মেনে চলা প্রয়োজন। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন। ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন, নিরাপদ থাকুন।
সুরক্ষা ও চিকিৎসা সামগ্রির ঘাটতি নেই
স্বাস্থ্যকর্মীদের সুরক্ষার বিষয়ে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে। পিপিই-সহ পর্যাপ্ত পরিমাণ সুরক্ষা সরঞ্জাম সংগ্রহ করা হয়েছে। করোনাভাইরাস পরীক্ষার জন্য পর্যাপ্ত কিট মজুদ রয়েছে।
ঢাকায় ৪টি স্থানে এবং চট্টগ্রামে করোনা ভাইরাস পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে। অন্য ৬টি বিভাগে করোনাভাইরাস পরীক্ষাগার স্থাপনের কাজ চলছে। কেউ গুজব ছড়াবেন না। গুজব রটনাকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
করোনা ভাইরাসে ভীত হবেন না
করোনা ভাইরাস দ্রুত ছড়ানোর ক্ষমতা রাখলেও ততটা প্রাণঘাতী নয়। এই ভাইরাসে আক্রান্ত সিংহভাগ মানুষই কয়েকদিনের মধ্যে সুস্থ হয়ে উঠে। নানা রোগে আক্রান্ত এবং বয়স্ক মানুষদের জন্য এই ভাইরাস বেশ প্রাণ-সংহারী হয়ে উঠেছে। আপনার পরিবারের সংবেদনশীল মানুষটির প্রতি বেশি নজর দিন। আতঙ্কিত হবেন না। আতঙ্ক মানুষের যৌক্তিক চিন্তাভাবনার বিলোপ ঘটায়।
আপনি, পরিবারের সদস্যগণ এবং প্রতিবেশীরা যেন সংক্রমিত না হন, সে বিষয়ে সতর্ক থাকুন। আপনার সচেতনতা আপনাকে, আপনার পরিবারকে এবং সর্বোপরি দেশের মানুষকে সুরক্ষিত রাখবে।
সহনশীল ও সংবেদনশীল হোন
করোনা ভাইরাসের কারণে শুধু বাংলাদেশ নয়, গোটা বিশ্ব এক সঙ্কটময় সময় অতিক্রম করছে। এ সময়ে আমাদের সহনশীল এবং সংবেদনশীল হতে হবে। বাজারে কোনো পণ্যের ঘাটতি নেই। দেশের অভ্যন্তরে এবং বাইরের সঙ্গে সরবরাহ চেইন অটুট রয়েছে।
অযৌক্তিকভাবে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধি করবেন না। যতটুকু না হলে নয়, তার অতিরিক্ত কোন ভোগ্যপণ্য কিনবেন না। সীমিত আয়ের মানুষকে কেনার সুযোগ দিন। অসহায় মানুষের সহায়তায় বিত্তবানদের এগিয়ে আসার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি।