কাপ্তাই হ্রদে জেলেদের জালে ঝাঁকে ঝাঁকে মাছ
কাপ্তাই হ্রদে তিন মাস মাছ শিকারের নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়েছে। নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের পর মঙ্গলবার সকাল থেকে রাঙামাটি মৎস্য অবতরণ ঘাটে মাছ আনতে থাকেন জেলেরা।
তারা জানিয়েছেন, প্রথম দিনে ঝাঁকে ঝাঁকে মাছ ধরা পড়েছে। দুপুরে রাঙামাটির মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএফডিসি) রাঙামাটি মৎস্য অবতরণ ঘাটে গিয়ে দেখা যায়, যেন প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে এসেছে সেখানে।মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে দিনভর ব্যস্ত ছিলেন মৎস্য শ্রমিক, বিএফডিসি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
বালুখালী এলাকার জেলে হরিপদ দাস (৪০) বলেন, মাছ শিকারর প্রথম দিনে জালে যথেষ্ট পরিমাণ মাছ ধরা পড়েছে। প্রতিবার হ্রদে জাল ফেলার পর ১০ থেকে ১২ ড্রাম করে মাছ উঠেছে। মাছের মধ্যে কেচকি আর চাপিলার পরিমাণ বেশি। পাশাপাশি অন্যান্য মাছও উঠেছে।
বন্দুক ভাঙা এলাকার জেলে তরুণ বিকাশ চাকমা (৪০) জানান, প্রথম দিন তারা খুশি মনে জাল ফেলেছেন আর তুলেছেন। প্রত্যাশামতো মাছ উঠেছে জালে। এটা আরও কয়েকদিন অব্যাহত থাকতে পারে।
রাঙামাটি মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক উদয়ন বড়ুয়া বলেন, সাধারণত প্রথম দিন বিপুলসংখ্যক মাছ জেলেদের জালে ওঠে। এ দিনটির জন্য প্রত্যক ব্যবসায়ী তিন মাস অপেক্ষায় থাকেন। প্রতি বছরের মতো এ বছরও জেলেদের জালে প্রচুর মাছ উঠেছে। মাছ বেশি আসায় মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে ভিড় লেগে রয়েছে।
রাঙামাটির বিএফডিসির তথ্যমতে, শুধু রাঙামাটির মৎস্য অবতরণ ঘাটেই সকাল থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ৫০ মেট্রিক টনের বেশি মাছ এসেছে। মঙ্গলবার রাত ১১টার পর দিনের মোট মাছের পরিমাণ জানা যাবে।
রাঙামাটি ছাড়াও কাপ্তাই, খাগড়াছড়ির মহালছড়িতে বিএফডিসির মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র রয়েছে।
বিএফডিসির রাঙামাটির কার্যালয়ের বাজারজাতকরণ কর্মকর্তা বৃন্দাবন দাশ বলেন, যে হারে মাছ আসছে, তাতে বিগত বছরের রেকর্ড ছাড়িয়ে যেতে পারে। গত বছর শুধু রাঙামাটি অবতরণ কেন্দ্রে মাছ মাপা হয় ৭৬ মেট্রিক টন।
বলে রাখা ভালো, প্রতি বছর ১ মে থেকে পরবর্তী তিন মাস প্রাকৃতিক প্রজননের সুবিধার্থে কাপ্তাই হ্রদে মাছ শিকার বন্ধ রাখে রাঙামাটি জেলা প্রশাসন। এ সময় হ্রদে কার্প জাতীয় মাছের পোনা ছাড়া হয়। মাছের প্রজনন মৌসুম শেষে শিকারের নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হলে জেলেদের জালে ঝাঁকে ঝাঁকে মাছ ধরা পড়ে।
দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে বড় এ হ্রদ থেকে সরকার প্রতিবছর কোটি কোটি টাকা রাজস্ব পায়। ১৯৬০ সালে কাপ্তাই জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের কারণে সৃষ্টি হয় কাপ্তাই হ্রদ।