গাজীপুরে শ্রমিক ছাটাইয়ের প্রতিবাদে বিক্ষোভ, নারায়ণগঞ্জে খুলেছে ২০০ গার্মেন্ট
গাজীপুরে শ্রমিক ছাটাইয়ের প্রতিবাদে বুধবার বিকেলে বিক্ষোভ ও মহাসড়ক অবরোধ করেছে দুই পোশাক কারখানার শ্রমিকরা।
এতে সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে। পরে শিল্প পুলিশের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। গাজীপুরে বুধবার পর্যন্ত খোলা হয়েছে ৬৩৮টি পোশাক কারখানা।
এদিকে নারায়ণগঞ্জে সীমিত পরিসরে গার্মেন্ট খোলার পর থেকে শ্রমিকরা কাজে যোগ দিয়েছেন।
গত চার দিনে ফতুল্লা বিসিকসহ জেলায় প্রায় দুই শতাধিক গার্মেন্ট কারখানা চালু হয়। এসব গার্মেন্টস কারখানায় নিটিং ডাইং ও স্যাম্পল সেকশনের শ্রমিকরা কাজ করছে। তবে এখন পর্যন্ত কোনও গার্মেন্টস শ্রমিকের করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি।
প্রতিনিধিদের পাঠানো রিপোর্ট
গাজীপুরে ছাটাইয়ের প্রতিবাদে পোশাক শ্রমিকদের বিক্ষোভ
গাজীপুর শিল্প পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুশান্ত সরকার জানান, গাজীপুরের দু'হাজার ৭২টি কারখানার মধ্যে বুধবার পর্যন্ত ৬৩৮টি কারখানা খোলা হয়েছে। গাজীপুর সিটি করপোরেশনের শরীফপুর এলাকার টেক্স টেক পোশাক কারখানার শ্রমিকরা বুধবার সকালে কাজে যোগ দিতে কারখানার গেইটে আসে। এ সময় কাজে যোগ দেওয়ার জন্য সব শ্রমিককে কারখানায় প্রবেশ করতে দেওয়া হলেও ৬০জন শ্রমিকের কার্ড জমা নিয়ে তাদেরকে ভিতরে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি।
তিনি বলেন, "দীর্ঘক্ষণ গেইটে অপেক্ষার পরও তারা ভিতরে প্রবেশ করতে না পেরে তাদের মাঝে অসন্তোষ দেখা দেয়। ওই ৬০ শ্রমিককে ছাটাই করা হয়েছে এমন সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে শ্রমিকরা বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠে। এসময় ছাটাইয়ের প্রতিবাদে শ্রমিকরা বিক্ষোভ শুরু করে। বিকেল পর্যন্ত গেইটে অবস্থান করেও তারা কর্তৃপক্ষের কোনও সাড়া পায়নি। এক পর্যায়ে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা কারখানার পার্শ্ববর্তী ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের উপর অবস্থান নিয়ে অবরোধ করে বিক্ষোভ করতে থাকে। এতে মহাসড়কের উভয় পাশে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে।"
পরে বিকেল তিনটার দিকে মহাসড়কের অবরোধ তুলে নিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয় বলে তিনি জানান।
নারায়ণগঞ্জে সীমিত পরিসরে খুলেছে দুই শতাধিক গার্মেন্ট
জেলা সিভিল সার্জন ইমতিয়াজ আহমেদের তথ্য মতে, জেলায় এখন পর্যন্ত কোনো গার্মেন্ট শ্রমিক করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে এমন খবর তিনি পাননি।
তবে মালিকপক্ষ শ্রমিকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়টি মুখে বললেও বাস্তবে পালন করছেন না বলে অভিযোগ করেছেন শ্রমিক প্রতিনিধিরা।
শ্রমিক নেতাদের দাবি, অনেক কারখানায় নেই তাপমাত্রা পরিমাপের যন্ত্র। গার্মেন্টস থেকে দেওয়া হয়নি মাক্স, হ্যান্ড গ্লাভস। শ্রমিকরা ব্যক্তিগতভাবে মাক্স কিনে গার্মেন্টে ডিউটি করেছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ফতুল্লার বিসিক শিল্প নগরী এলাকা এমবি নিট, ক্রোনি, ফকির অ্যাপারেলস, নিট কনসার্ন, মডেল ডি ক্যাপিটাল প্লামি ফ্যাশনসহ নারায়ণগঞ্জ জেলায় প্রায় দুই শতাধিক গার্মেন্টস কারখানা সীমিত পরিসরে চালু হয়েছে। প্রতিটি কারখানাতেই প্রায় ৪০ থেকে ৫০ভাগ শ্রমিক কাজে যোগ দিয়ে উৎপাদন শুরু করেছেন।
বিকেএমইএর সহ-সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম জানান, শ্রমিকের স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়টি গার্মেন্ট মালিকরা নিশ্চিত করবেন। এই শর্তে সীমিত আকারে তাদের গার্মেন্টস কারখানা খোলা সুযোগ দেওয়া হয়েছে।