ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় বুলবুল, চট্টগ্রামে প্রস্তুত তিন হাজার আশ্রয়কেন্দ্র
ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের প্রভাবে সম্ভাব্য ক্ষতি এড়াতে কাজ শুরু করেছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন ও সিটি করপোরেশন। ইতোমধ্যে জেলা প্রশাসনের প্রায় তিন হাজার আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুতের জন্য মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
পাশাপাশি উপকূলীয় এলাকায় বসবাসরত লোকজনকে নিরাপদ স্থানে সরে যেতে মাইকিং শুরু করেছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের কর্মীরা।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের স্টাফ অফিসার তানভীর ফরহাদ শামীম দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, “মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের প্রায় তিন হাজার আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখার নির্দেশ দিয়েছেন জেলা প্রশাসক। পাশাপাশি জেলা দুযোর্গ ব্যবস্থাপনা কমিটির জরুরি সভা ডাকা হয়েছে। শুক্রবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।”
অন্যদিকে ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় কন্ট্রোল রুম খোলার পাশাপাশি উপকূলীয় এলাকার লোকজনকে নিরাপদ আশ্রয়ে যাওয়ার জন্য মাইকিং শুরু করেছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের কর্মীরা।
চসিকের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. রফিক টিবিএসকে বলেন, “ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় জরুরি সভা চলছে। ইতোমধ্যে উপকূলীয় এলাকার লোকজনকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যাওয়ার জন্য মাইকিং শুরু হয়েছে। নগরীর দামপাড়ায় এলাকায় কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। চসিকের স্বেচ্ছাসেবক, স্বাস্থ্যসেবা টিমকে প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে।”
এর আগে আজ শুক্রবার (৮ নভেম্বর) সকালে আবহাওয়ার এক সতর্কবার্তায় চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরগুলোকে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত নৌযানগুলোকে সাগরে চলাচল না করে দ্রুত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।
এক বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, শুক্রবার ভোর ৬টায় পশ্চিম-মধ্য ও সংলগ্ন পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর অতিক্রম করে তীব্র ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ উত্তর-উত্তরপশ্চিম উপকূলের দিকে অগ্রসর হয়। এটি চট্টগ্রাম বন্দর থেকে প্রায় ৭৬০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার থেকে ৭১০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৬৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৫০ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছিল। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের কাছে সাগর বিক্ষুব্ধ রয়েছে।
এটি আরও তীব্র হয়ে উত্তর ও উত্তর-পশ্চিম দিকের দিকে অগ্রসর হতে পারে। তীব্র ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ এর কারণে সমুদ্রবন্দর, উত্তর বঙ্গোপসাগর এবং বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলগুলো প্রভাবিত হতে পারে। রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে বৃষ্টি হতে পারে, আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকতে পারে।
উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি এসে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে। সেই সাথে তাদের গভীর সাগরে বিচরণ না করতে বলা হয়েছে।