পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজের মেয়াদ আরো এক বছর বাড়লো
কয়েক দফা সময় বাড়ানোর পর, ২০২১ সালের জুনে পদ্মা সেতু নির্মাণ শেষ করার কথা থাকলেও কোভিড-১৯ মহামারির কারণে তা আর সম্ভব হচ্ছে না। মহামারিতে নির্মাণকাজে ধীরগতি আসাটাই প্রধান কারণ।
পাশাপাশি এবার বড় ধরণের বন্যার কারণেও সেতু নির্মাণ কাজ বিঘ্নিত হয়েছে। তাই মূল সেতু ও নদী শাসন কাজ তদারকির জন্য পরামর্শক সংস্থার মেয়াদ আরও ৩৪ মাস বাড়ালো সরকার।
২০২২ সালের জুনের মধ্যে এ সেতু নির্মাণের কাজ শেষ হবে বলে আশা করা হচ্ছে সরকারের পক্ষ থেকে।
আজ বুধবার (২৬ আগস্ট) সরকারি ক্রয়-সংক্রান্ত মন্ত্রীসভা কমিটির বৈঠক শেষে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল জানান, বিভিন্ন কারণে পদ্মা সেতু নির্মাণ কাজ সময়মত শেষ করা সম্ভব হচ্ছে না। করোনাভাইরাস পরিস্থিতি ও বড় বন্যা; মূল সেতু নির্মাণ ও নদী শাসন কাজে বাধা সৃষ্টি করছে।
এ প্রেক্ষিতে কনস্ট্রাকশন সুপারভিশন কনসালট্যান্ট কোরিয়া এক্সপ্রেসওয়ে কর্পোরেশনের মেয়াদ চলতি বছরের সেপ্টেম্বর থেকে ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত বাড়ানোর প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়। এতে ব্যয় বাড়ছে ৩৪৮ কোটি টাকা। এ টাকা আগে থেকেই প্রকল্প ব্যয়ে অন্তর্ভূক্ত থাকায়- মূল প্রকল্প ব্যয় বাড়বে না বলে জানান মুস্তফা কামাল।
অর্থমন্ত্রী বলেন, 'যখন ২০২১ সালে সেতু নির্মাণ শেষ করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছিল, তখন আমরা কেউই করোনাভাইরাসের কথা কল্পনাও করতে পারিনি। সবকিছুই পরিকল্পনা মতো এগিয়ে যাচ্ছিল। কিন্তু, সব ওলট-পালট করে দিয়েছে করোনা। আশা করছি, নতুন লক্ষ্যমাত্রার সময়ের মধ্যে প্রকল্প বাস্তবায়ন সম্পন্ন হবে।'
বর্তমান সরকারের অন্যতম অগ্রাধিকার প্রকল্প পদ্মা সেতু নির্মাণে খরচ হচ্ছে ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি টাকা। গত জুলাই পর্যন্ত মূল সেতু নির্মাণের অগ্রগতি ৮৯ দশমিক ২৫ শতাংশ এবং নদী শাসনের কাজে ৭৪ শতাংশ।
এছাড়া, দ্বীপ জেলা ভোলাকে সড়কপথে যুক্ত করতে পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপের আওতায় বরিশাল-ভোলার মধ্যে সাড়ে ৯ কিলোমিটার দীর্ঘ সেতু নির্মাণ প্রকল্পের প্রস্তাব নীতিগত অনুমোদন দেয়নি অর্থনৈতিক বিষয়ক সংক্রান্ত মন্ত্রীসভা কমিটি।
অর্থমন্ত্রী এ প্রসঙ্গে বলেন, সামান্য কিছু কাগজপত্র না থাকায় সভায় এটি অনুমোদন দেওয়া হয়নি, তবে প্রত্যাখানও করা হয়নি। আগামী সপ্তাহে প্রস্তাবটি এলে অনুমোদন দেওয়া হবে।
বিদেশি বেসরকারি অংশীদারদের সহায়তায় এ সেতু নির্মাণের পর নির্মাণ ব্যয়ের অর্থ টোল থেকে আয় করা হবে বলে তিনি জানিয়েছেন।
সংশ্লিষ্টরা জানান, ২০২৫ সালের মধ্যে ভোলা-বরিশাল সেতু নির্মাণের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। সেতুটি নির্মাণের জন্য ইতিমধ্যে জার্মানি, জাপান, চীনসহ বেশ কয়েকটি দেশি-বিদেশি কোম্পানির আবেদনপত্র জমা পড়েছে।
সাড়ে ৯ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এই সেতুটি নির্মাণে প্রাথমিক ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ১১ হাজার কোটি টাকা। সেতুটি আড়িয়াল খাঁ, কালাবদর, তেঁতুলিয়া ও ইলিশা নদীর ওপর দিয়ে ভোলার সঙ্গে যুক্ত হবে।