মরদেহ উদ্ধারের ৪ ঘণ্টার মাথায় খুনি গ্রেপ্তারের দাবি ডিবি'র
রাজধানীর গ্রীনরোডে শুক্রবার ভোরে ক্ষত-বিক্ষত এক নারীর মরদেহ দেখে আঁতকে উঠেন পথচারীরা। পথচারী ও আশপাশের কেউই শনাক্ত করতে পারছিলেন না নিহতের পরিচয়। অবশেষে পুলিশ এসে সংগ্রহ করে আশপাশের এলাকার ক্লোজসার্কিট ক্যামেরা- সিসিটিভির ভিডিও ফুটেজ। ছবিতে আবছা দেখা যায় খুনিকে।
এই ছিল ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের কাছে মার্ডারের ক্লু। তবে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ বলছে, মরদেহ উদ্ধারের মাত্র ৪ ঘণ্টার মধ্যেই তাদের হাতে ধরা পড়েছে ঘাতক। ডিবি পুলিশের কাছে খুনের বর্ণনাও দিয়েছে সে।
গ্রেপ্তার হওয়া ওই খুনির নাম আনসার আলী। খুন হওয়া নারীর নাম মোমেনা খাতুন।
শুক্রবার ভোররাতে রাজধানীর পান্থপথ সিগন্যাল সংলগ্ন গ্রীনরোডে ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটির গলিতে মোমেনার ক্ষত-বিক্ষত লাশ পাওয়া যায়। এ ঘটনায় পর তদন্তে নেমে মাত্র ৪ ঘণ্টার ব্যবধানে খুনিকে ধরে ফেলে ডিবি।
ডিবি সূত্র জানায়, ভোর ৪টার দিকে ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটির গলিতে মোমেনার লাশ পাওয়া যায়। এ ঘটনার তদন্তে নেমে সকাল ৮টার দিকে খুনি আনসারকে গ্রেপ্তার করা হয়। সে খুনের বর্ণনা দিয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদে আনসার বলেছে, সে ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটির গলি সড়কের একটি বাড়ির দারোয়ান। ওই বাড়ির পার্কিংয়ের পাশে তার থাকার একটি রুম ও টয়লেট রয়েছে।
পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে এক নারীকে সে রুমে নিয়ে আসে। ওই নারীর সঙ্গে অপকর্মে লিপ্ত হতে চাইলে নারীটি চিৎকার-চেঁচামেচির চেষ্টা করেন। অপকর্মে ব্যর্থ হয়ে, টয়লেটে নিয়ে ওই নারীকে শ্বাসরোধে হত্যা করে আনসার। এরপর রাত ২টার দিকে ওই নারীর মৃতদেহ রাস্তায় ফেলে আসে।
ওই ফেলে আসার চিত্র ধরা পড়ে সিসিটিভিতে। আর এতেই ধরা পড়ে খুনি আনসার। এছাড়া সব রক্তের দাগ পরিষ্কার করলেও কিছুটা থেকে যায়। এটিও তার প্রতি পুলিশের সন্দেহ বাড়িয়ে তোলে।
ডিবি রমনা জোনাল টিমের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) মিশু বিশ্বাস দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, 'প্রথমে ওই নারীর পরিচয় পাওয়া যায়নি বলে অজ্ঞাত পরিচয় সূত্র ধরেই তদন্ত এগোতে থাকে। পরে ফিঙ্গার প্রিন্টের মাধ্যমে তার পরিচয় শনাক্ত করা হয়। চল্লিষোর্ধ্ব ওই নারীর নাম মোমেনা খাতুন। তার গ্রামের বাড়ি শেরপুর বলে আমরা জানতে পেরেছি।'
'আনসারের বক্তব্যে ঘটনার প্রাথমিক সত্যতা বেরিয়ে এসেছে। তাকে আরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে বিস্তারিত জানা যাবে। মোমেনার বিস্তারিত জানার চেষ্টা চলছে,' বলে জানান তিনি।
ময়নাতদন্তের জন্য নিহতের লাশ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (ঢামেক) মর্গে রাখা হয়েছে। এ ঘটনায় কলবাগান থানায় মামলা একটি হত্যা মামলা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা পরিতোষ চন্দ্র।