সংখ্যালঘু শব্দটি শুনে খারাপ লাগে: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) বলেছেন, হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিষ্টান ধর্মের মানুষরা যখন নিজেদের ‘সংখ্যালঘু সম্প্রদায়’ হিসেবে আখ্যায়িত করে ছোট করেন তখন তার ‘খুব খারাপ’ লাগে।
জন্মাষ্টমী উপলক্ষে নিজের সরকারি বাসভবন গণভবনের সবুজ চত্বরে হিন্দু সম্প্রদায়ের সদস্যদের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময়কালে তিনি বলেন, ‘আমার খুব খারাপ লাগে। কেন আপনারা (হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান ও অন্যান্য ধর্মের মানুষ) নিজেদের ছোট করেন? বাংলাদেশ আমাদের, এ দেশ সবার।’
তিনি বলেন, এ দেশের সবকিছুতে প্রতিটি মানুষের সমান অধিকার রয়েছে। ‘আওয়ামী লীগ সরকার সবসময় মনে করে যে এ দেশ সবার। দয়া করে নিজেদের সংখ্যালঘু ভাববেন না।’
এ দেশ ও ভূমি সবার উল্লেখ করে শেখ হাসিনা পুনরায় প্রশ্ন করেন, ‘কেন নিজেদের ওপর আপনাদের আস্থা নেই? আওয়ামী লীগ কখনও মানুষকে এ বিভাজনের মাধ্যমে দেখে না।’
ধর্ম নির্বিশেষে সবাই এ দেশের মুক্তিযুদ্ধে জীবন দিয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, এ দেশ সবার।
নিজ সরকারের দর্শন ‘ধর্ম যার যার, উৎসব সবার’ সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সব ধর্মের মানুষ ১৯৭১ সালে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই করেছে এবং দেশকে মুক্ত করতে শহীদ হয়েছে।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে সব ধর্মের মানুষ মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছে এবং দেশ স্বাধীন করতে রক্ত দিয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
দেশে সাম্প্রদায়িক ও ধর্মীয় সম্প্রীতি বজায় রাখার ওপর গুরুত্বারোপ করে শেখ হাসিনা বলেন, প্রতিটি ধর্ম শান্তি, ভ্রাতৃত্ব ও সহনশীলতার কথা বলে এবং এটাই ধর্মের গুরুত্বপূর্ণ দিক।
মুসলিম সম্প্রদায়ের দানপত্র সংক্রান্ত ‘হেবা আইনের’ মতো হিন্দুদের জন্য সরকারের করা আইন নিয়ে তিনি বলেন, হিন্দু সম্প্রদায়ের সদস্যরা যাতে কোনো ধরনের কর না দিয়ে নিকটাত্মীয়দের কাছে সম্পদ হস্তান্তর করতে পারেন সে জন্য সরকার এ আইন করেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সব ধর্মের উৎসব যাতে উৎসবমুখর পরিবেশে উদযাপিত হয় তা নিশ্চিত করার জন্য সরকার সবসময় চেষ্টা করে। ‘এটাই বাংলাদেশের সৌন্দর্য যেখানে সব ধর্মের মানুষ প্রতিটি ধর্মীয় উৎসবে অংশ নেয়। এবং এ দিক থেকে বাংলাদেশ বিশ্বে অনন্য।’
জন্মাষ্টমী উপলক্ষে হিন্দু সম্প্রদায়কে শুভেচ্ছা জানিয়ে তিনি বলেন, শ্রী কৃষ্ণ ভালোবাসা, ন্যায় ও মমতার বাণী প্রচার করে গেছেন যা আমাদের সবার প্রচার করা উচিত।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার, ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ আবদুল্লাহ, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি মিলন কান্তি দত্ত, সাধারণ সম্পাদক নির্মল কুমার চ্যাটার্জি, জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদের সভাপতি গৌরাঙ্গ দে, সাধারণ সম্পাদক বিমল কান্তি দে, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট চন্দন তালুকদার, মহানগর সর্বজনীন পূজা কমিটির সভাপতি শৈলেন্দ্র নাথ মজুমদার, হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের সহ-সভাপতি সুব্রত পাল ও জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদের সাবেক সাধারণ সম্পাদক দেবাশিষ পালিত।