স্কুল নির্মাণে রডের বদলে বাঁশ
বান্দরবানের আলীকদম উপজেলার এক দুর্গম এলাকায় রডের বদলে বাঁশ দিয়ে স্কুল নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। কুরুকপাতা ইউনিয়নে বাজার এলাকায় পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের অর্থায়নে স্কুল ভবন নির্মাণের ঠিকাদারের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা।
স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি জোহন ত্রিপুরা জানান, ১৯৮৭ সালে প্রতিষ্ঠা করা কুরুকপাতা প্রাথমিক বিদ্যালয়টি ওই এলাকায় একমাত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ২০১৩ সালে সেটি সরকারিকরণ হয়। বর্তমানে উন্নয়ন বোর্ডের অর্থায়নে স্কুলটি সম্প্রসারণ করে ভবনের দ্বিতীয় তলার অংশ নির্মাণের কাজ চলছে।
'এ নির্মাণ কাজে যে পরিমাণ রড দেওয়ার কথা, সেটা না দিয়ে বাঁশের কঞ্চি দেওয়া হচ্ছে। এটা টেকসই তো হবে না এবং শিক্ষার্থীদেরও ঝুঁকিতে ফেলবে'।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবু সাফা বলেন, সম্প্রসারিত দ্বিতল ভবনের নির্মাণ কাজে বাঁশের কঞ্চি ব্যবহার দেখে আমরা উন্নয়ন বোর্ডের কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।
তিনি বলেন, ম্রো জনগোষ্ঠী অধ্যুষিত ওই এলাকায় কুরুকপাতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মোট ১৬৯ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। এর মধ্যে ৫০ জন আবাসিক শিক্ষার্থী। বাকি সবাই অনাবাসিক। এছাড়া আশপাশে আর কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নেই।
সদর উপজেলা থেকে কুরুকপাতা এলাকার দূরত্ব ২২ কিলোমিটার জানিয়ে ইউপি চেয়ারম্যান ক্রাতপুং ম্রো বলেন, যাতায়াতের ব্যবস্থা এখন ভালো হলেও এলাকাটি আজও অনগ্রসর। এমন একটি এলাকার স্কুলে এত বড় অনিয়ম মেনে নেওয়া যায় না।
অভিযুক্ত ঠিকাদার মো. জামাল উদ্দিন আলীকদম উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি এবং সদর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান। ভবন নির্মাণে বাঁশের কঞ্চি ব্যবহার প্রসঙ্গে জানার জন্য যোগাযোগ করা হলে তার ব্যবহৃত মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
তবে ভবনটির নির্মাণ কাজে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান 'মারমা এন্টারপ্রাইজ'-এর লাইসেন্স ব্যবহার করেছিলেন তিনি। এ প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী মংয়ইনু মারমা জানান, আমরাও তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।
সম্প্রসারিত দ্বিতীয় তলার অংশ ২৫ লাখ টাকার অর্থ ব্যয়ে নির্মাণের কাজ চলছিল বলে জানান পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের বান্দরবান ইউনিটের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ ইয়াছির আরাফাত।
তিনি বলেন, নির্মাণের সময় লকডাউনের কারণে পরিদর্শন করতে পারিনি। তবে বাঁশের কঞ্চি দেওয়া ভবন ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে। নতুন করে নির্মাণ করা হবে।