‘হাড় নেই, চাপ দেবেন না’: আইসিইউতে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে আকিব
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে (চমেক) ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মারামারিতে আহত শিক্ষার্থী আকিব হাসপাতালটির আইসিইউতে লাইফ সাপোর্টে আছেন।
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ভারী আঘাতে তার মাথার খুলি থেঁতলে গেছে। মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয়েছে।
মাহাদি আকিব (২০) চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের (চমেক) এমবিবিএস দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। তার বাড়ি কুমিল্লার বুড়িচং থানায়।
চমেক হাসপাতালের নিউরো সার্জারি বিভাগের প্রধান এস এম নোমান খালেদ চৌধুরী দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, "ভারী আঘাতে মাহাদির মাথার হাড় ভেঙে গেছে। মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের কারণে ব্রেইনও ড্যামেজ হয়েছে। এই অবস্থায় অপারেশন করে মাথার হাড়ের একটা অংশ খুলে আপাতত তার পেটের চামড়ার নিচে রাখা হয়েছে। কিছুটা উন্নতি হলে সেটা আবার আগের জায়গায় প্রতিস্থাপন করা হবে।"
এদিকে আহত আকিবের একটি ছবি ঘুরছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। ছবিতে দেখা যাচ্ছে, পুরো মাথায় সাদা ব্যান্ডেজ মোড়ানো। ব্যান্ডেজে লেখা 'হাড় নেই, চাপ দেবেন না'। মেডিকেল কলেজের মত উচ্চ শিক্ষার ক্যাম্পাসে এমন নৃশংস রাজনীতির সমালোচনা করছেন নেটিজেনরা।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ছাত্রলীগ নেতা মো. ইমন সিকদার জানান, শনিবার সকাল ৯টায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মূল ফটকে পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সামনে আকিবের উপর অতর্কিত হামলা করে প্রতিপক্ষের লোকজন। এসময় আকিবকে গলায় রিকশার চেইন দিয়ে বাঁধা হয়। কাচের বোতল দিয়ে আঘাত করা হয় মাথায়। পরে হকিস্টিক দিয়ে মাথা থেঁতলে দেওয়া হয়েছে।
পাঁচলাইশ থানার পুলিশ পরিদর্শক সাদিকুর রহমান দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, সংঘর্ষের ঘটনায় আহত আকিবের বন্ধুরা শনিবার রাতে ১৬ জনের নাম উল্লেখ করে পাঁচলাইশ থানায় মামলা দায়ের করেছে। এই ঘটনায় সীমান্ত (২২) ও রক্তিম (২২) নামে দুই ছাত্রলীগ কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
শুক্রবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের প্রধান ছাত্রাবাসের ছাত্রলীগের দুইপক্ষের মধ্যে মারামারি হয়। এতে মাহফুজুল হক (২৩) ও নাইমুল ইসলাম (২০) আহত হন। এর জের ধরে শনিবার বেলা ১১টার দিকে আবারও দুইপক্ষ সংঘর্ষে জড়ায়। এতে গুরুতর আহত হন মাহাদি আকিব।
সংঘর্ষের পর অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে চমেক। কলেজ বন্ধ ঘোষণার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের আবাসিক হলও ছাড়তে হয়েছে শনিবার সন্ধ্যায়। ঘটনা তদন্তে কমিটি গঠন করা হয়েছে।