দুই মাস পর হাইড্রোজেন পার অক্সাইড পরিবহনের নিষেধাজ্ঞা তুলে নিলো সিঙ্গাপুর বন্দর
চট্টগ্রামের বিএম কন্টেইনার ডিপোর দুর্ঘটনার ফলে বাংলাদেশ থেকে নিজেদের বন্দরে হাইড্রোজেন পার অক্সাইড পরিবহনে দেওয়া নিষেধাজ্ঞা দুই মাস পর প্রত্যাহার করে নিয়েছে সিঙ্গাপুর।
সিঙ্গাপুর বন্দরে কন্টেইনার টার্মিনাল পরিচালনাকারী পিএসএ কর্পোরেশন লিমিটেড বুধবার (১০ আগস্ট) এ বিষয়ে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে।
চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি হাইড্রোজেন পার অক্সাইড রপ্তানি হয় ভিয়েতনাম, ভারত, পাকিস্তান, ইন্দোনেশিয়া, শ্রীলংকা ও সংযুক্ত আরব আমিরাতে।
সমুদ্রপথে কন্টেইনারবাহী আমদানি রপ্তানি পণ্য পরিবহনের জন্য সিঙ্গাপুর বন্দর বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। ওই বন্দর ট্রানশিপমেন্ট হিসেবে ব্যবহার হয়ে ইউরোপ আমেরিকাসহ বিশ্বের বিভিন্ন গন্তব্যে পণ্য পরিবহন হয়।
বাংলাদেশ শিপিং এজেন্টস এসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ মোহাম্মদ আরিফ দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, "হাইড্রোজেন পার অক্সাইড আমদানি রপ্তানির পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিলো এই নিষেধাজ্ঞা। সিঙ্গাপুর বন্দরের এই সিন্ধান্তের ফলে জটিলতা কেটে গেছে।"
"সকল দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক নিয়মনীতি অনুসরণ করে হাইড্রোজেন পার অক্সাইড পরিবহন নিশ্চিত করতে আমরা শিপিং এজেন্টদের নির্দেশনা দিয়েছি," যোগ করেন তিনি।
চলতি বছরের ৪ জুন চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিএম কন্টেইনার ডিপোতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীসহ ৪৬ জন নিহত এবং ২০০ জনের বেশি আহত হন। বিস্ফোরণের উৎস ছিল ডিপোতে থাকা হাইড্রোজেন পার অক্সাইড।
তারপর ৯ জুন, পিএসএ একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে যে বন্দরে হাইড্রোজেন পারক্সাইডের মজুদ সীমা ছাড়িয়ে গেছে। ফলে আপাতত বন্দরের মাধ্যমে হাইড্রোজেন পার অক্সাইডের পরিবহন বন্ধ করে দিচ্ছে তারা।
দ্য অবজারভেটরি অফ ইকোনমিক কমপ্লেক্সিটি (ওইসি) অনুসারে, বাংলাদেশ ২০২০ সালে ১৩.৯ মিলিয়ন ডলারের হাইড্রোজেন পার অক্সাইড রপ্তানি করেছে। বিশ্বব্যাপী এই রাসায়নিক রপ্তানিতে দেশ ১৭তম স্থানে রয়েছে।
মূলত টেক্সটাইল, কাগজ এবং পাল্প শিল্পের ব্লিচিং এবং জীবাণুমুক্তকরণ প্রক্রিয়ায় ব্যবহৃত হয় হাইড্রোজেন পার অক্সাইড।
রাসায়নিক দ্রব্যটি দেশের ৮৯তম সর্বাধিক রপ্তানিকৃত পণ্য যা ভারত, নেপাল, মালয়েশিয়া, পাকিস্তান এবং শ্রীলঙ্কাসহ আরো বেশ কিছু দেশে যায়।
অন্যান্য দেশ থেকে হাইড্রোজেন পারক্সাইড আমদানির ক্ষেত্রেও বাংলাদেশের অবস্থান ৬৫তম।
২০২০ সালে থাইল্যান্ড, জাপান, নেদারল্যান্ডস, দক্ষিণ কোরিয়া এবং ভারত থেকে ৬ লাখ ৫৬ হাজার ডলারের হাইড্রোজেন পার অক্সাইড আমদানি করে বাংলাদেশ।