খুলনায় ঝড়ে আংশিক ভেঙ্গেছে ১৬০০ ঘর, ক্ষয়ক্ষতি কম মৎস্য-কৃষিতে
ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে খুলনায় ১৬০০টি ঘর আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে জলোচ্ছ্বাস না হওয়ায় এ জেলার মৎস্য খাতে তেমন কোনো ক্ষতি হয়নি।
অন্যদিকে, ভারী বৃষ্টি ও দমকা হাওয়ার কারণে কিছু এলাকার আমন ধান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
বিষয়টি টিবিএসকে নিশ্চিত করেন খুলনা জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা রনজিৎ কুমার সরকার।
তিনি বলেন, 'প্রাথমিকভাবে জেলার ক্ষয়ক্ষতি নির্ণয় করা হয়েছে। জেলায় মোট এক হাজার ৬০০ টি ঘর ভেঙেছে। এই ঘরগুলো আংশিক ক্ষতি হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে।'
তিনি বলেন, জেলার মৎস্য ও কৃষিতেও ক্ষতি হয়েছে। তবে তার পরিমাণ খুবই কম। পূর্নাঙ্গ ক্ষয়ক্ষতির পরিমান নির্ণয় করতে ২ থেকে ৩ দিন সময় লেগে যাবে।
তিনি আরও বলেন, 'ক্ষতিগ্রস্থ মানুষদের প্রাথমকি সহায়তার জন্য ৫ লাখ টাকা প্রদান করা হয়েছে। একই সাথে ৩০ মেট্রিক টন চাল ও এক হাজার প্যাকেট শুকনা খাবার দেওয়া হয়েছে।'
জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, ঘূর্ণিঝড়ের সময়ে খুলনার ৫৪৮টি আশ্রয় কেন্দ্র ৪০ হাজার ১৩০ জন আশ্রয় নিয়েছেন। ১১৬ টি মেডিকেল টিম ও ৫ হাজার দুইশত ৮০ জন সিপিপি স্বেচ্ছাসেবক তাদের সেবা করেছেন।
খুলনা জেলা প্রশাসক মোঃ মনিরুজ্জামান তালুকদার বলেন, 'ঝড়ের সময়ে উপকূলীয় কয়রা, দাকোপ ও পাইকগাছা উপজেলার প্রতি বেশি নজর রাখা হয়েছিল। খুলনাতে কোনো প্রাণহানির খবর পাওয়া যায়নি। ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের মাঝে সহায়তা দেওয়া হবে।'
অন্যদিকে এবারের ঝড়ে জলোচ্ছ্বাস না হওয়ায় মৎস্য ও কৃষিতে ক্ষয়ক্ষতি খুবই কম হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট দপ্তর থেকে জানা গেছে।
খুলনা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা জয়দেব কুমার পাল বলেন, 'ঝড়ের কারণে জেলার কোন মৎস্য ঘের ডুবে যাওয়ার খবর পাওয়া যায়নি। তাই মৎস্য খাতে তেমন কোন ক্ষতি হয়নি।'
খুলনা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. হাফিজুর রহমান বলেন, 'ঝড়ের কারণে আমন ধানের ক্ষতি হয়েছে। মূলত অধিক বৃষ্টি ও বাতাসে ধান গাছ নুয়ে পড়েছে। তবে এখনো ক্ষতির পরিমাণ নির্ণয় করা হয়নি। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তারা মাঠে গিয়ে ক্ষতির পরিমাণ নির্ণয় করছেন।'
খুলনা আবহাওয়া অফিসের জ্যেষ্ঠ আবহাওয়াবিদ মো. আমিরুল আজাদ বলেন, 'ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে খুলনা সোমবার সকাল ৬ টা থেকে বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছিল। সন্ধ্যা ৬ টার দিকে বাতাসের গতিবেগ বেড়ে যায়। খুলনায় সর্বোচ্চ বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৩০ কিলোমিটার। রাত সাড়ে ৮ টার দিকে ঝড়টি ভোলার দিকে সরে যায়। তখন খুলনায় বাতাস ও বৃষ্টিপাত বন্ধ হয়ে যায়।'
সোমবার সকাল ৬ টা থেকে রাত সাড়ে ৮ টা পর্যন্ত এখানে মোট বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছিল ২১৫ মিলিমিটার।