মোস্তফা গ্রুপের ৭ পরিচালকের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা
ঋণ খেলাপি মামলায় চট্টগ্রাম ভিত্তিক শিল্পগ্রুপ মোস্তফা গ্রুপের চেয়ারম্যান হেফাজতুর রহমানসহ ৭ জনের দেশ ত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে আদালত। একইসাথে, আগামী ১৭ নভেম্বরের মধ্যে আদালতে তাদের পাসপোর্ট জমা দেওয়ার আদেশ দেওয়া হয়েছে।
ইস্টার্ন ব্যাংকের ৬৬ কোটি টাকা পাওনার বিপরীতে দায়ের করা মামলায় চট্টগ্রাম অর্থঋণ আদালতের বিচারক মুজাহিদুর রহমান বৃহস্পতিবার এই আদেশ দেন।
অর্থঋণ আদালতের বেঞ্চ সহকারী রেজাউল করিম বলেন, "মোস্তাফা গ্রুপের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান এমএম শিপ ব্রেকার্স লিমিটেড ও রহমান শিপ ব্রেকার্স লিমিটেডের পক্ষে ইস্টার্ন ব্যাংকের খেলাপি পাওনা ৬৬ কোটি ৬৬ লাখ টাকা। এই টাকার বিপরীতে ২০১৮ সালে অর্থঋণ মামল দায়ের করে ইস্টার্ন ব্যাংক।"
তিনি আরো বলেন, "মামলায় গত ১০ অক্টোবর প্রতিষ্ঠানটির কর্ণধারদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন করে ব্যাংক। ব্যাংকের আবেদনের প্রেক্ষিতে শুনানি শেষে আদালত প্রতিষ্ঠানটির কর্ণধারদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেন।"
যাদের বিরুদ্ধে দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে তারা হলেন- মোস্তফা গ্রুপের চেয়ারম্যান হেফাজতুর রহমান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক জহির উদ্দীন, পরিচালক কফিল উদ্দিন, কামাল উদ্দিন, রফিক উদ্দিন, শফিক উদ্দিন ও জসিম উদ্দিন।
চট্টগ্রামসহ সারাদেশের ভোগ্যপণ্য ব্যবসায় একচেটিয়া ব্যবসা করতো মোস্তফা গ্রুপসহ হাতে গোনা কয়েকটি প্রতিষ্ঠান। কিন্তু কালের বিবর্তনে সেই মোস্তফা গ্রুপের অবস্থা এখন নাজুক।
যুগের যুগের পর যুগ ভোগ্য পণ্য ব্যবসায় লিড দিয়ে আসা গ্রুপটি গত কয়েক বছর ধরে ভোগ্য পণ্য ব্যবসায় নেই। শিপ ব্রেকিং এসোসিয়েশনের দীর্ঘদিনের সভাপতি হেফাজতুর রহমানের মোস্তফা গ্রুপের ব্যবসা নেই শিপ ব্রেকিংয়েও।
ভোজ্যতেলের ব্যবসা বন্ধ করে বিক্রি করে দিয়েছে ট্যাংক টার্মিনাল। বন্ধ হয়ে গেছে গ্রুপটির ভোগ্যপণ্য, ভোজ্যতেল, শিপ ব্রেকিং, কৃষি (চা বাগান, রাবার বাগান, আম বাগান), কাগজ, মৎস (চিংড়ি), স্টিল, পরিবহন, শিপিং, সিকিউরিটিজ ও পোষাক খাতের বহু প্রতিষ্ঠান। যে কয়টি প্রতিষ্ঠান টিকে আছে সেসব প্রতিষ্ঠানের অবস্থাও ভালো নয়।
প্রায় ৭০ বছর ধরে ব্যবসা করে আসা মোস্তফা গ্রুপের কাছে বর্তমানে ব্যাংকসহ ৩০টিরও বেশি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পাওনা দুই হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে।