৮-৯ জানুয়ারি খুচরা বিদ্যুতের মূল্য সমন্বয়ের ওপর গণশুনানি
বিদ্যুতের খুচরা মূল্য সমন্বয়ের জন্য আগামী ৮-৯ জানুয়ারি গণশুনানি করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। এর আগে, গত মাসে বিইআরসি বাল্ক (পাইকারি পর্যায়) বিদ্যুতের দাম ১৯.৯২ শতাংশ বৃদ্ধি করলে বিতরণ কোম্পানিগুলো শুল্ক বাড়ানোর প্রস্তাব করে। সেই পরিপ্রেক্ষিতেই হতে যাচ্ছে গণশুনানি।
রাজধানীর বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অ্যান্ড ম্যানেজমেন্টে (বিয়াম) এই শুনানি হবে বলে বিইআরসি সচিব ব্যারিস্টার মোঃ খলিলুর রহমান খান স্বাক্ষরিত এক গণবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে।
বিইআরসি সূত্র জানায়, গত মাসের শেষের দিকে রেগুলেটরি কমিশন বাল্ক বিদ্যুতের দাম বাড়ালে ছয়টি বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানি খুচরা মূল্য সমন্বয়ের প্রস্তাব জমা দেয়।
প্রস্তাবে, বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানিগুলো বাল্ক মূল্যবৃদ্ধির কারণে তাদের রাজস্ব ঘাটতির বিষয়টি তুলে ধরে এবং লোকসান এড়াতে নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে সেই অনুযায়ী মূল্য সমন্বয় করতে অনুরোধ জানায়।
দেশের সর্ববৃহৎ বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানি বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড জানিয়েছে, বিক্রি গ্রোথ কমে যাওয়া এবং অফ-গ্রিড বিতরণের কারণে, গত অর্থবছরের ৫২৪ কোটি টাকার তুলনায় চলতি অর্থবছরে তাদের প্রায় ১ হাজার ১২৭ কোটি টাকা ঘাটতি হতে চলেছে।
অন্যদিকে, বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড তার চারটি জোনে ২ হাজার ৩৪১ কোটি টাকা ঘাটতির আশঙ্কা করছে।
তাই ডিস্ট্রিবিউশন চার্জ ইউনিট প্রতি ১.২০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১.৩১ টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের বেশিরভাগ এবং টঙ্গীর একাংশে বিদ্যুৎ সরবরাহ করে ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি (ডেসকো)। ডিসেম্বর ২০২২ থেকে জুন ২০২৩ সময়ের জন্য ৯৫৬ কোটি টাকা এবং পরবর্তী অর্থবছরের জন্য ১ হাজার ৪০২ কোটি টাকা সমন্বয় করার প্রস্তাব করেছে ডেসকো।
এদিকে, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এবং নারায়ণগঞ্জ সিটিতে বিদ্যুৎ সরবরাহকারী সংস্থা ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (ডিপিডিসি), চলতি অর্থবছরের জন্য প্রতি ইউনিটের বিতরণ খরচ ০.৮৭ টাকা থেকে ১.৮০ টাকায় সমন্বয় করতে অনুরোধ জানিয়েছে।
নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেড এবং ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডও নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে খুচরা পর্যায়ে বাল্ক মূল্য সমন্বয় করতে এবং কোম্পানিগুলোকে সুষ্ঠুভাবে চালাতে সহায়তা করার জন্য বিতরণ চার্জ বাড়ানোর অনুরোধ করেছে।
চলতি বছরের ১২ জানুয়ারি, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) বাল্ক বিদ্যুতের দাম ৬৬ শতাংশ বৃদ্ধির প্রস্তাব করে। তবে বিইআরসির কারিগরি কমিটি ৫৮ শতাংশ মূল্য বৃদ্ধির সুপারিশ করলে ১৮ মে তাদের প্রস্তাবের ওপর একটি গণশুনানি অনুষ্ঠিত হয়।
প্রায় ৫ মাস পর গত ১৩ অক্টোবর এক ঘোষণায় বিইআরসি জানায়, সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে এবং পিডিবি কোনো যৌক্তিক কারণ দেখাতে ব্যর্থ হওয়ায় আবেদনটি খারিজ করা হয়েছে।
তবে, গত ২১ নভেম্বর বিইআরসি বাল্ক বিদ্যুতের দাম ১৯.৯২ শতাংশ বৃদ্ধি করে, যা বিগত ১৩ বছরে ১৬১ শতাংশ বৃদ্ধির সমপরিমাণ। একই সময়ে বিদ্যুতের খুচরা মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে ৯০ শতাংশ।