২০১৪ ও ২০১৮ ভুলে যান, নির্বাচন নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে হতে হবে: আ. লীগকে বিএনপি
আগামী জাতীয় নির্বাচন নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকার ছাড়া হবে না বলে উল্লেখ করেছেন বিএনপি নেতারা। তারা ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগকে ২০১৪ ও ২০১৮ সাল ভুলে যেতেও বলেছেন।
আজ মঙ্গলবার (২০ ডিসেম্বর) রাজধানীর নয়াপল্টনে জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের আয়োজিত এক মানববন্ধনে অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন তারা।
মানবন্ধন কর্মসূচিতে বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএনপির ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান। তিনি বলেন, 'শেখ হাসিনা ২০১৪, ২০১৮ সালের মতো আরেকটি নির্বাচন করে ক্ষমতায় আসতে চান। কিন্তু, সেই আশায় গুড়েবালি।
'আজকে আলোচনা করবেন না উনি (প্রধানমন্ত্রী), কথা বলবেন না! ওনার মনমতো উনি নির্বাচন করবেন। আমরা বলতে চাই, '১৪ সাল এবং '১৮ সাল ভুলে যেতে হবে। এই বাংলাদেশের নির্বাচন হলে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন হবে।'
এর আগে উচ্চ আদালত নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থাকে অসাংবিধানিক ঘোষণার করেন এবং ২০১১ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচিত সরকারের অধীনে ভোটের ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনেন।
নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকারের দাবিতে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচন বর্জন করে বিএনপি-জামায়াত জোট, ডাক দেয় তা প্রতিহতের। ব্যাপক সহিংসতা মধ্যে ভোট করে ক্ষমতায় ফেরে আওয়ামী লীগ।
এরপর আওয়ামী লীগ সরকারের মেয়াদপূর্তি শেষে ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে জাতীয় নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা হয়। এই নির্বাচনে প্রথমে অংশ না নেওয়ার ঘোষণা দেয় বিএনপি। পরে ২০-দলীয় জোটের পাশাপাশি নতুন জোট ঐক্যফ্রন্ট নিয়ে তাতে অংশ নেয়।
এ নির্বাচনে নৈশভোটসহ ব্যাপক জালিয়াতির অভিযোগ আনে দলটি।
বর্তমানে বিএনপি তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফেরানোসহ ১০ দফা দাবি তুলে আন্দোলনে ফিরেছে।
আওয়ামী লীগ এসব দাবি না মানলে, '৫২, ৬৯, '৯০-এর মতো আরেকটি গণ-অভ্যুত্থান ঘটিয়ে নির্দলীয় সরকার প্রতিষ্ঠিত করা হবে। তার অধীনে নির্বাচন হলে ইনশা আল্লাহ জনগণের সরকার নির্বাচিত হবে। সেই সরকার হবে বিএনপি সরকার'- বলেন আমান।
আলোচনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির জ্যেষ্ঠ সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, 'ঢাকা বিভাগের সমাবেশ থেকে আমরা ১০ দফা দিয়েছিলাম। ১০ দফার মূল কথা ছিল, এই অবৈধ সরকার পদত্যাগ করতে হবে, এই অবৈধ সংসদ বাতিল করতে হবে, একটি নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মাধ্যমে নির্বাচন হতে হবে, মানুষ যাতে নিজের হাতে ভোট দিয়ে তাদের পছন্দমতো প্রতিনিধি নির্বাচিত করতে পারে, জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে পারে।'
তিনি বলেন, 'আমরা যখনই শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি দিই, সরকার তখনই বলে আমরা নাকি ভায়োলেন্স করব। অথচ আওয়ামী লীগের আমলে রক্ষীবাহিনী তৈরি করে দেশের ২০ হাজার মুক্তিযোদ্ধাকে হত্যা করা হয়েছিল। গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড শুরু করেছিল।'
সভাপতির বক্তব্য মহিলা দলের সভানেত্রী আফরোজা আব্বাস ১০ ডিসেম্বর সমাবেশ নিয়ে বলেন, 'তারা সমাবেশকে বানচাল করতে চেয়েছিল। কিন্তু তাতে লাভ হয়নি।
'এই সরকারের আমলে নারীরা বেশি নির্যাতিত হয়েছে। নারীরা কান্না করে, গুম, খুন, গ্রেফতার হওয়া স্বামী-সন্তানদের জন্য। গুলি করে আমাদের ভাইদের হত্যা করছে। আমাদের ভয় দেখিয়ে লাভ নেই আমরা আর ভয় করি না।'
মহিলা দলের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হেলেন জেরিন খানও এ সময় বক্তব্য দেন।