নারী, শিশু, বয়স্ক ও বিশেষ চাহিদা সম্পন্নদের জন্য মেট্রোরেলে থাকছে আলাদা সুবিধা
![](https://www.tbsnews.net/bangla/sites/default/files/styles/infograph/public/images/2022/12/27/metro-facilities-for-all_0.jpg)
নারী, শিশু, বয়স্ক এবং বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন ব্যক্তিদের জন্য আরামদায়ক মেট্রো ভ্রমণ নিশ্চিত করতে বিভিন্ন ব্যবস্থা নিয়েছে ঢাকা মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ।
মেট্রো স্টেশনের দ্বিতীয় তলায় স্থাপন করা স্বয়ংক্রিয় টিকেট ভেন্ডিং মেশিন (টিভিএম) থেকে যারা টিকেট কিনতে পারবেন না, তাদের জন্য এর পাশেই রয়েছে টিকেট অফিস মেশিন (টিওএম)। সেখান থেকে বিক্রয়কর্মীদের সহায়তায় পাওয়া যাবে টিকেট।
এই টিওএম এর দুইটি বুথের একটি একটু নিচুতে স্থাপন করা হয়েছে শারীরিক প্রতিবন্ধী ও হুইল চেয়ার ব্যবহারকারী বয়স্ক যাত্রীদের সুবিধার কথা বিবেচনা করে।
মেট্রোরেলে বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন ব্যক্তিদের বাড়তি সুবিধার বিষয়টি দেখা যাবে প্রতিটি স্টেশনের প্রবেশ পথে। তাদের সুবিধায় স্টেশনে উঠানামার জন্য এসকেলেটরের ব্যবস্থা যেমন রয়েছে, তেমনি রয়েছে লিফটের ব্যবস্থাও।
এধরনের ব্যক্তিদের জন্য লিফটে সহজে ওঠা-নামার সুবিধার্থে লিফটের অভ্যন্তরে ধরার হাতল, নিম্ন উচ্চতায় কন্ট্রোল প্যানেল, কন্ট্রোল প্যানেলে ব্রেইল পদ্ধতিতে নির্দেশনাও থাকবে। হুইল চেয়ার ব্যবহারকারী যাত্রীদের জন্য লিফটের সম্মুখে রয়েছে র্যাম্প।
মেট্রোরেলের স্টেশনে ওঠা থেকে থেকে শুরু করে পেইড জোন ও প্ল্যাটফর্মে অবস্থান ও ট্রেনে আরোহনে নারী, শিশু, বয়স্ক, প্রতিবন্ধী- এক কথায় বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন যাত্রীদের জন্য আলাদাভাবে থাকছে বিশেষ সুবিধা।
এসব সুবিধার কারণে মেট্রোরেলে সব শ্রেণির যাত্রীরা নিরাপদে ভ্রমণের সুযোগ পাবেন বলে মনে করেন ডিএমটিসিএল এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক এমএএন সিদ্দিক।
দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে তিনি বলেন, "মেট্রোরেলের অবকাঠামো নির্মাণে একেবারেই শিশুদের সুবিধার কথা যেমন বিবেচনা করা হয়েছে, তেমনি বয়স্কদের কথাও চিন্তা করা হয়েছে।"
নারীদের জন্য যেসব সুবিধা থাকছে
ছয় কোচের এক সেট মেট্রো ট্রেনের একটি কোচ সংরক্ষিত থাকবে নারীদের জন্য।
এর বাইরে মেট্রো ট্রেনের যেকোনো কোচে নারীরা যাত্রা করতে পারবেন।
সব কোচেই বয়স্কদের পাশাপাশি গর্ভবতীদের জন্য বিশেষ আসন সংরক্ষিত থাকবে।
প্রতিটি স্টেশনেই নারীদের জন্য রয়েছে পৃথক ওয়াশরুম। সেখানে শিশুদের ডায়াপার পরিবর্তণের জন্যও একটি কক্ষ রাখা হয়েছে।
হুইল চেয়ার এক্সেস
হুইল চেয়ার ব্যবহারের সুবিধার কথা বিবেচনায় রেখে মেট্রো ট্রেনের কোচ ও প্ল্যাটফর্মের মাঝখানে ফাঁকা রাখা হয়েছে খুবই সামান্য। ট্রেনের প্রতিটি কোচে হুইল চেয়ারের জন্য জায়গা ফাঁকা রাখা হয়েছে।
হুইল চেয়ার নিয়ে ওঠার সুবিধার্থে স্টেশনের লিফটের সামনে স্থাপন করা হয়েছে র্যাম্প। স্টেশনের কনকোর্সে পেইড জোনে প্রবেশের জন্য একটি প্রবেশ পথের প্রশস্ততা রাখা হয়েছে তুলনামূলক বেশি।
প্রতিটি স্টেশনে পৃথক ওয়াশরুমে হুইল চেয়ার ব্যবহারকীদের জন্য স্থাপন করা হয়েছে বিশেষ কমোড।
দৃষ্টি ও শ্রবণ প্রতিবন্ধীদের জন্য যা থাকছে
দৃষ্টি ও শ্রবণ প্রতিবন্ধীদের সুবিধার কথা বিবেচনায় নিয়ে স্টেশন ও মেট্রো ট্রেনের প্রতিটি ঘোষণা লাউড স্পিকারে দেওয়ার পাশাপাশি ডিজিটাল ডিসপ্লেতেও প্রকাশ করা হবে বলে জানিয়েছেন ডিএমটিসিএল এমডি।
তিনি বলেন, শ্রবণ প্রতিবন্ধীরা ডিসপ্লের লেখা দেখে, আর দৃষ্টি প্রতিবন্ধীরা ঘোষণা শুনে ট্রেনের অবস্থান, গন্তব্য ও পরবর্তী স্টেশনের নাম জানতে পারবেন।
স্টেশন এলাকায় দেখা গেছে, প্রতিটি স্টেশনেই অন্ধ যাত্রীদের চলাচলের জন্য ব্লাইন্ড স্টিক ব্যবহারের সুবিধার্থে হলুদ রঙয়ের ট্যাকটাইল পথের ব্যবস্থা রাখা হবে।
দায়িত্বে থাকছেন ১৫০ রোভার স্কাউট
জনসাধারণের মেট্রোরেল ব্যবহারের লিটারেসি বৃদ্ধি এবং বিশেষ চাহিদাসম্পন্নদের সহায়তার লক্ষ্যে উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত ৯ স্টেশনে রোভার স্কাউটের ১৫০ সদস্যকে দায়িত্ব দেয়া হচ্ছে।
তারা দুটি শিফটে স্বয়ংক্রিয় প্রবেশ ও বহির্গমন গেইট ব্যবহার, স্বয়ংক্রিয় মেশিন (টিভিএম) এর মাধ্যমে টিকেট ক্রয়, এমআরটি/ র্যাপিড পাস ক্রয় ও রিচার্জ পদ্ধতি, কনকোর্স লেভেল ও প্ল্যাটফর্মের সুবিধাদি, মেট্রো ট্রেনে ওঠা-নামার পদ্ধতি সম্পর্কে ধারণা দেবেন।
একইসঙ্গে বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন ব্যক্তি, মহিলা, শিশু ও বয়স্ক যাত্রীদের মেট্রোরেলে যাতায়াতে সহায়তা দিবেন বলে ডিএমটিসিএল সূত্রে জানা গেছে।