শাহ আমিন গ্রুপের ৩ কর্ণধারের বিরুদ্ধে দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা
ঋণ খেলাপি মামলায় চট্টগ্রাম ভিত্তিক পরিবহন ব্যবসায়ী কোম্পানি শাহ আমিন গ্রুপের তিন কর্ণধারের বিরুদ্ধে দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে আদালত।
৬৭ কোটি টাকা পাওনার বিপরীতে ইসলামী ব্যাংকের দায়ের করা মামলায় চট্টগ্রাম অর্থঋণ আদালতের বিচারক মুজাহিদুর রহমান মঙ্গলবার (৬ জুন) এই আদেশ দেন।
দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞাপ্রাপ্ত তিনজন হলেন- শাহ আমিন গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আহমদ নবী চৌধুরী, তার স্ত্রী ও কোম্পানির চেয়ারম্যান মমতাজ বেগম এবং ছেলে (পরিচালক) সৈয়দ মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর।
আদেশের বিষয়ে নিশ্চিত করেন অর্থঋণ আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো. রেজাউল করিম।
পাওনাদার ব্যাংক ও আদালতের তথ্যমতে, ১৬৪ কোটি টাকা ঋণ খেলাপি হওয়ায় শাহ আমিন গ্রুপের তিন প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ২০২১ সালে তিনটি অর্থঋণ মামলা দায়ের করে ইসলামী ব্যাংক চাক্তাই শাখা। এরমধ্যে ৬৭ কোটি টাকা পাওনার বিপরীতে শাহ আমিন উল্লাহ লুব্রিকেন্টস এন্ড গ্রিজের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার শুনানিতে আদালত এই আদেশ দেন।
আদালত আদেশের পর্যবেক্ষণে উল্লেখ করেন, আদালতের সমন জারির দেড় বছরেও জবাব দাখিল করেননি প্রতিষ্ঠানটির কর্ণধাররা।
গত বছরের ২২ নভেম্বর মামলার একতরফা শুনানির দিন আদালতে হাজির হন বিবাদীরা। কিন্তু এরপর আরো ৬ মাস পার হলেও আদালতে জবাব দাখিল করেননি। অথচ আদালতে হাজির হওয়ার সর্বোচ্চ ৬০ দিনের মধ্যে জবাব দাখিলের বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
ব্যাংকের বর্তমান ১৬৪ টাকা পাওনার বিপরীতে ঋণ গ্রহীতার কোলেটেরাল সিকিউরিটির মূল্য অতি সামান্য। বিবাদীরা দেশত্যাগ করতে পারলে জনগণের আমানতের টাকা আদায় অনিশ্চিত হয়ে পড়বে।
তাই আগামী ২১ জুনের মধ্যে বিবাদীদেরকে পাসপোর্টসহ আদালতে হাজির হওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
একইসাথে তারা যাতে দেশত্যাগ করতে না পারেন তার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে আদেশের কপি স্পেশাল পুলিশ সুপার (ইমিগ্রেশন) বিশেষ শাখা বরাবর পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
গ্রুপটির আরো দুই প্রতিষ্ঠান- শাহ আমিন উল্লাহ অয়েল এজেন্সিসের কাছে ৭০ কোটি এবং শাহ আমিন উল্লাহ ফিলিং স্টেশনের কাছে ২৫ কোটি টাকা ঋণ ব্যাংকটির আরো দুই অর্থঋণ মামলা চলমান রয়েছে।
ব্যাংক ও সংশ্লিষ্ট খাতের ব্যবসায়ীদের তথ্যমতে, চট্টগ্রামে দীর্ঘদিন ধরে অয়েল, মোটর পার্টস ও পেট্রোল পাম্পের ব্যবসা করে আসছেন আহমদ নবী চৌধুরী। এরপর ২০০৫ সাল থেকে পরিবহন ব্যবসায়ও প্রায় এক দশক রমরমা ব্যবসা করে শাহ আমিন।
পরে ২০০৭ সাল থেকে বিভিন্ন সময়ে ইসলামী ব্যাংক থেকে ১২৫ কোটি টাকার ঋণ নেয় গ্রুপটি। ব্যাংকের টাকায় ব্যবসা সম্প্রসারণ করে লুব্রিকেন্টস অয়েল, গ্রিজ ও ব্র্যাক অয়েল উৎপাদনে।
কিন্তু অদক্ষ ব্যবস্থাপনা ও বিপণনের কারণে কয়েক বছরের মাথায় বন্ধ হয়ে যায় গ্রুপটির 'বস' লুব্রিকেন্টস। এতে লোকসানে পড়ে আটকে যায় ব্যাংক ঋণ।