মার্কিন কিশোরীর আপত্তিকর ছবি সংগ্রহের অভিযোগে যুবক গ্রেপ্তার
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এক কিশোরীর আপত্তিকর ছবি সংগ্রহের অভিযোগে খুলনা থেকে এক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীকে আটক করা হয়েছে।
এক মাস আগে গুলশান থানায় মার্কিন দূতাবাসের এক কর্মকর্তার করা সাধারণ ডায়েরির (জিডি) পরিপ্রেক্ষিতে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের একটি দল রাজশাহীর একটি প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স বিভাগের ছাত্র মো. সামিরকে (২০) গত ২১ আগস্ট খুলনায় তার বাসা থেকে গ্রেপ্তার করে বলে জানান সিটিটিসির অতিরিক্ত উপ-কমিশনার সাইফুল ইসলাম।
গ্রেপ্তারের পর তার মোবাইল ফোন ও ল্যাপটপ থেকে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, অস্ট্রেলিয়াসহ তিনটি দেশের অন্তত ৩০ কিশোরীর দেড় শতাধিক নগ্ন ছবি উদ্ধার করা হয়।
তদন্তের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, অনলাইন সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং অ্যাপ ডিসকর্ডের মাধ্যমে সামির এসব মেয়েদের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলেন এবং পরে তাদেরকে ফাঁদে ফেলে তাদের নগ্ন ছবি সংগ্রহ করেন।
গ্রেপ্তারের পর মার্কিন দূতাবাসের একজন কর্মকর্তা ২১ আগস্ট এ ঘটনায় মামলা দায়ের করেন।
সিটিটিসি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ঢাকায় মার্কিন দূতাবাসের আঞ্চলিক কর্মকর্তা মাইকেল লি গত ২৬ জুলাই গুলশান থানায় একটি জিডি করেছিলেন; সেখানে অভিযোগ করা হয়, সামির নামে এক বাংলাদেশি নাগরিক যুক্তরাষ্ট্রের ১৩ বছর বয়সী এক কিশোরীকে প্রলুব্ধ করে তার অশ্লীল ছবি সংগ্রহ করেছেন।
ডিসকর্ড অ্যাপের মাধ্যমে মার্কিন ওই তরুণীর সঙ্গে সামিরের সম্পর্ক হয়। পরে তিনি অ্যাপ এবং ইমেইলের মাধ্যমে মেয়েটির অশ্লীল ছবি সংগ্রহ করেন।
মেয়েটির মা বিষয়টি যুক্তরাষ্ট্রের হোমল্যান্ড সিকিউরিটিকে জানান এবং সেই আলোকে মার্কিন দূতাবাস জিডি করে।
পুলিশ কর্মকর্তা জানান, জিজ্ঞাসাবাদের সময় সামির অ্যাপের মাধ্যমে মেয়েদের সঙ্গে যোগাযোগ গড়ে তোলা এবং তাদের নগ্ন ছবি পাঠাতে রাজি করানোর বিষয়টি স্বীকার করেছেন।
আদালতের নির্দেশে সামিরকে দুই দিনের রিমান্ডের পর কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
সিটিটিসি তদন্তকারী বলেন, সামির তার সংগ্রহে নগ্ন ছবি রাখলেও সেগুলো দিয়ে ব্যবসা করেননি।
সিটিটিসির ফরেনসিক ল্যাবের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ইশতিয়াক আহমেদ সামিরের মোবাইল ফোন ও ল্যাপটপ পরীক্ষা করে বলেন, সামিরের মোবাইল ফোনে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়ার অন্তত ৩০ কিশোরীর প্রায় ১৬৪টি পর্নোগ্রাফিক ছবি পাওয়া গেছে।
জিজ্ঞাসাবাদে সমির জানায়, এসব ছবি সংগ্রহ করা তার শখ। সে এখন পর্যন্ত এগুলোর কোনোটিই বিক্রি করেনি।
সিটিটিসি কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম জানান, সামির ২০২১ সালে রাজশাহীর একটি প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন, কিন্তু মহামারির কারণে ক্লাস করতে পারেননি।
তার বাবা-মা তাকে বাইরে যেতে দেননি। একাকীত্বের কারণে মোবাইল ফোনে আসক্ত হয়ে পড়েন তিনি। এরপর থেকেই এই যুবকের বিকৃত মানসিকতা গড়ে ওঠে।