চট্টগ্রামে ১৩ দিন পর অপহৃত যুবকের কঙ্কাল উদ্ধার, গণপিটুনিতে অভিযুক্ত অপহরণকারীর মৃত্যু
চট্টগ্রামে অপহৃত হওয়ার ১৩ দিন পর শিবলী সাদিক হৃদয় (২০) নামে এক যুবকের কঙ্কাল উদ্ধার করেছে রাউজান থানা পুলিশ। সোমবার (১১ সেপ্টেম্বর) সকালে কদলপুর-রাঙ্গুনিয়া সীমান্তবর্তী পাহাড়ি এলাকা তার কঙ্গাল উদ্ধার করা হয়।
কদলপুরের একটি মুরগির খামারের ম্যানেজার ছিলেন শিবলী সাদিক, গত ২৮ আগস্ট রাতে সেখান থেকে হৃদয়কে অপহরণ করা হয়। তিনি উপজেলার ৮ নম্বর কদলপুর ইউনিয়নের পঞ্চপাড়া গ্রামের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মো. শফিক ড্রাইভারের ছেলে এবং কদলপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী।
রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল্লাহ আল হারুন বলেন, প্রায় ৩ ঘন্টা হেঁটে দুর্গম কদলপুর-রাঙ্গুনিয়া সীমান্তবর্তী পাহাড়ি এলাকা থেকে অপহৃত হৃদয়ের খণ্ডিত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এই অপহরণের ঘটনায় কয়েকদিন আগে দুইজনকে আটক করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। রোববার উমংচিং মারমা নামে আরও একজনকে আটক করা হয়। তার দেওয়া তথ্যমতে সোমবার ভোরে অভিযানে যায় পুলিশ।
এদিকে কঙ্কাল উদ্বারের সময় ঘটনাস্থলে নিয়ে যাওয়া আসামী উমংচিং মারমাকে পুলিশের কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়ে গণপিটুনি দেয় স্থানীয়রা। বিক্ষুদ্ধ জনতার গনপিটুনিতে ঘটনাস্থলে নিহত হয় উমংচিং মারমা (২৬)। এসময় ৩ জন পুলিশ সদস্য আহত হন। ভাঙচুর করা হয় পুলিশের গাড়ি।
নিখোঁজের ১১ দিন পর গত ৭ সেপ্টেম্বর সাদিকের মা বাদি হয়ে রাউজান থানায় অপহরণ মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় তিনজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতসহ মোট ৬ জনকে আসামি করা হয়। নাম উল্লেখিত আসামিরা হলেন- উমংচিং মারমা (২৬), সুইচিংমং মারমা (২৫), অংথুইমং মারমা (২৫), উক্যাথোয়াই মারমা।
প্রাথমিক তদন্তসূত্রে জানা গেছে, কদলপুর ইউনিয়নের পাহাড় সংলগ্ন একটি মুরগীর খামারে শিবলি ম্যানেজার হিসেবে কাজ করতেন। একই খামারে তার সাথে কয়েকজন আদিবাসীও কাজ করতেন। গত দু মাস আগে সেখানে কাজ করা আদিবাসী যুবকদের সাথে শিবলির বিরোধ হয়। পরে মালিকের উদ্যোগে মীমাংসা করে দেওয়া হয়। তার ঠিক দুই মাস পর অপহরণ হলেন শিবলি।
শিবলির মা নাহিদা আকতার বলেন, ছেলেকে অপহরণের পর আমার স্বামীর মোবাইলে ছেলে ফোন করেছিল। ছেলে বলেছিল, তাকে গাড়িতে করে কয়েকজন লোক ধরে নিয়ে যাচ্ছে। এরপর আবার ফোন দিয়ে অপহরণকারীরা ১৫ লাখ টাকা চায়। তাদের বুঝিয়ে ২ লাখ টাকায় রাজি করানো হয়। তাদের কথামতো টাকা দিয়েও ছেলেকে ফেরত পাইনি।