জানুয়ারিতে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৪৮৬ জন: যাত্রী কল্যাণ সমিতি
বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ জানিয়েছে, গত জানুয়ারি মাসে ৫২১ সড়ক দুর্ঘটনায় ৪৮৬ জনের প্রাণহানি হয়েছে, আর আহত হয়েছে এক হাজার ৫৪ জন।
এছাড়া, এই মাসে রেলপথে ৪৪টি দুর্ঘটনায় ৪২ জন নিহত, ২১ জন আহত হয়েছে। আর নৌপথে ৭টি দুর্ঘটনায় ৬ জন নিহত, ১৩ জন আহত এবং ৩ জন নিখোঁজ রয়েছে।
সড়ক, নৌ ও রেলপথ মিলে জানুয়ারিতে মোট ৫৭২ দুর্ঘটনায় ঝরেছে ৫৩৪ জনের প্রাণ, আহত হয়েছে ৪ হাজার ৪৬২ জন। এরমধ্যে ১৬৪টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ১৭০ জন নিহত, ১৭৩ জন আহত হয়েছে; যা মোট দুর্ঘটনার ৩১.৪৭ শতাংশ, নিহতের ৩৪.৯০ শতাংশ ও আহতের ১৬.৪১ শতাংশ।
জানুয়ারিতে সবচেয়ে বেশি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে ঢাকা বিভাগে, ১২৩টি। এসব সড়ক দুর্ঘটনায় ১১৭ জন নিহত ও ২৭০ জন আহত হয়েছে। আর সবচেয়ে কম সড়ক দুর্ঘটনা হয়েছে বরিশাল বিভাগে ৩৩টি, যাতে ২৩ জন নিহত ও ১২৫ জন আহত হয়েছে।
আজ রোববার (২৫ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির দুর্ঘটনা মনিটরিং সেলের পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। সংগঠনের মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই প্রতিবেদন তুলে ধরা হয়। দেশের জাতীয়, আঞ্চলিক ও অনলাইন সংবাদপত্রে প্রকাশিত সড়ক, রেল ও নৌপথের দুর্ঘটনার সংবাদ মনিটরিং করে সংকলনের মাধ্যমে এই প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে।
দুর্ঘটনায় নিহতদের মধ্যে যাদের পরিচয় সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া গেছে, তাঁদের মধ্যে তিন জন পুলিশের সদস্য, সেনাবাহিনীর একজন সদস্য, বিমান বাহিনীর একজন সদস্য, একজন চিকিৎসক, একজন আইনজীবী, তিনজন মুক্তিযোদ্ধা, একজন প্রকৌশলী, বিভিন্ন যানবাহনের ৯৬ জন চালক, ৬৯ জন পথচারী, ৪৭ জন নারী, ৩৮ জন শিশু, ২৯ জন শিক্ষার্থী, ১২ জন পরিবহন শ্রমিক, ৬ জন শিক্ষক এবং ৯ জন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী।
এই সময় সড়ক দুর্ঘটনায় সম্পৃক্ত ৭২৭টি যানবাহনের পরিচয় মিলেছে। এতে দেখা যায়, ২৫.১৭ শতাংশ মোটরসাইকেল, ২৫.৯৯ শতাংশ ট্রাক-পিকাপ-কাভার্ড ভ্যান ও লরি, ১১.৫৫ শতাংশ বাস, ১৫.৮১ শতাংশ ব্যাটারি-চালিত রিক্সা ও ইজিবাইক, ৪.৮১ শতাংশ সিএনজি-চালিত অটোরিক্সা, ১০.৫৯ শতাংশ নছিমন-করিমন-মাহিন্দ্রা-ট্রাক্টর ও লেগুনা এবং ৬.০৫ শতাংশ কার-জিপ-মাইক্রোবাস সড়কে দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে।
সংঘটিত মোট দুর্ঘটনার ৫১.৬৩ শতাংশ গাড়ি চাপা দেওয়ার ঘটনা; ২২.৪৫ শতাংশ মুখোমুখি সংঘর্ষ; ১৪.৫৮ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে; ১০.৩৬ শতাংশ বিবিধ কারণে; চাকায় ওড়না পেছিয়ে ০.৫৭ শতাংশ, এবং ০.৩৪ শতাংশ ট্রেন-যানবাহনের সংঘর্ষে ঘটে।
দুর্ঘটনার ধরন বিশ্লেষণে দেখা যায়, মোট দুর্ঘটনার ৩৩.৯৭ শতাংশ জাতীয় মহাসড়কে, ১৭.০৮ শতাংশ আঞ্চলিক মহাসড়কে এবং ৪১.৪৮ শতাংশ ফিডার রোডে সংঘটিত হয়েছে।