সামিটের ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল থেকে ২৬ জুলাই ফের গ্যাস সরবরাহ শুরু হবে
ঘূর্ণিঝড় রিমালের আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত বঙ্গোপসাগরের অন্যতম ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল ২৬ জুলাই থেকে গ্যাস সরবরাহ পুনরায় শুরু করবে। এর ফলে দেশে চলমান গ্যাস সংকট এই মাসের শেষের দিকে কমবে বলে আশা করা হচ্ছে।
রাষ্ট্রায়ত্ত রূপান্তরিত প্রাকৃতিক গ্যাস কোম্পানি লিমিটেডের (আরপিজিসিএল) কর্মকর্তারা আজ রবিবার (১৪ জুলাই) দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড (টিবিএস)-কে বলেন, সিঙ্গাপুরে মেরামত কাজ শেষ করে ইতোমধ্যে টার্মিনালটি কক্সবাজারের মহেশখালীতে ফিরিয়ে আনা হয়েছে।
আরপিজিসিএল মহাব্যবস্থাপক (এলএনজি) মো. শাহ আলম বলেন, 'বর্তমানে একটি টার্মিনালের মাধ্যমে জাতীয় গ্রিডে দৈনিক সরবরাহ হচ্ছে ৬০০ মিলিয়ন ঘনফুট এলএনজি। দ্বিতীয় টার্মিনালের মাধ্যমে গ্যাস সরবরাহ শুরু হলে জাতীয় গ্রিডে আরও ৫০০ মিলিয়ন ঘনফুট এলএনজি সরবরাহ বাড়বে।'
তিনি বলেন, 'আগামী ২৫ অথবা ২৬ জুলাই থেকে সামিটের ভাসমান টার্মিনালটি আবরো এলএনজি সরবরাহ শুরু করবে বলে আশা করা হচ্ছে। এই টার্মিনাল এতদিন অপারেশনাল কার্যক্রমে না থাকায় জাতীয় গ্রিডে এলএনজি সরবরাহ অর্ধেকে নেমে এসেছিল। দ্বিতীয় টার্মিনালে এলএনজি সরবরাহ শুরু হলে দৈনিক গাস সরবরাহ ১ হাজার মিলিয়ন ঘনফুট ছাড়িয়ে যাবে। এতে চট্টগ্রামসহ সারাদেশে বিদ্যমান গ্যাস সংকট কিছুটা কমবে।'
গত ৫ জুন টিবিএস এক প্রতিবেদনে জানায়, গত ২৭ মে ঘূর্ণিঝড় রিমালের আঘাতে একটি ভাসমান পন্টুন বঙ্গোপসাগরে ভাসমান সামিটের ফ্লোটিং স্টোরেজ রিগ্যাসিফিকেশন ইউনিট (এফএসআরইউ) ক্ষতিগ্রস্ত করে। এতে ভাসমান টার্মিনালের একটি ব্যালাস্ট ট্যাংক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এরপর ওই টার্মিনাল দিয়ে এলএনজি সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়। দুই টার্মিনালের একটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় জাতীয় গ্রিডে এলএনজি সরবরাহ প্রায় অর্ধেকে নেমে আসে।
পেট্রোবাংলার কর্মকর্তারা সে সময় বলেছিলেন, সামিট এলএনজির মালিকানাধীন টার্মিনালের ক্ষতির কারণে জাতীয় গ্রিডে ৪০০ এমএমসিএফ গ্যাস সরবরাহের ঘাটতি রয়েছে।
আরপিজিসিএল এর তথ্যানুসারে, ক্ষতিগ্রস্ত ইউনিটটি মেরামতের জন্য সিঙ্গাপুরে পাঠানো হয়েছিল এবং ১০ জুলাই এটি দেশে ফিরিয়ে আনা হয়েছে।
দেশে প্রতিদিন ৪ হাজার এমএমসিএফ গ্যাসের চাহিদা রয়েছে। চাহিদার মধ্যে ২ হাজার ৬৩৫ এমএমসিএফ অভ্যন্তরীণভাবে উত্পাদিত গ্যাস দ্বারা পূরণ করা হয়। গত মঙ্গলবার ১ হাজার ৩৬৫ এমএমসিএফ গ্যাসের ঘাটতি দেখা গেছে।
সামিটের এলএনজি টার্মিনাল বন্ধ থাকায় বিদ্যুৎকেন্দ্রে গ্যাস সরবরাহও কমে গেছে। ফলে গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় প্রায় ১৫০০ মেগাওয়াট কমেছে।
দুর্যোগে ভাসমান টার্মিনাল থেকে গ্যাস সরবরাহ বিচ্ছিন্ন হওয়ার ঘটনা এটাই প্রথম নয়।
এর আগে গত বছরের ১২ মে ঘূর্ণিঝড় মোখা'র প্রভাবে দুটি এফএসআরইউ থেকে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়।