রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে সমাবেশ কোটাবিরোধীদের, একই জায়গায় বিকালে ছাত্রলীগের অবস্থান কর্মসূচি
সরকারি চাকরিতে কোটাব্যবস্থা সংস্কারের দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে জড়ো হয়েছেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা।
রোববার (১৪ জুলাই) প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলনে কোটা সংস্কার আন্দোলন নিয়ে আসা এক বক্তব্যে আন্দোলনকারীদের অবমাননা করা হয়েছে দাবি করে আজ রাজু ভাস্কর্যের সামনে বিক্ষোভের ডাক দিয়েছেন তারা।
এদিকে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাতকে অবমাননার প্রতিবাদে আজ বিকেল ৩টায় একই জায়গায় অবস্থান কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ।
গতকাল রোববার (১৪ জুলাই) রাতে ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন বলেন, "সোমবার থেকে বাংলাদেশের রাজপথে আর কোনো রাজাকার থাকবে না। প্রতিটি জেলা, মহানগর, বিশ্ববিদ্যালয়সহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নেতাদের প্রতি সুস্পষ্ট নির্দেশনা, দেশে যারা নৈরাজ্য তৈরি করতে চায়, যারা লাখো শহীদের রক্ত নিয়ে তামাশা করবে, রাজপথেই এর ফয়সালা হবে।"
এদিকে, রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে জড়ো হয়ে কোটাবিরোধী অন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা 'আমি কেন রাজাকার, শেখ হাসিনা জবাব চাই', 'কে রাজাকার কে রাজাকার, তুই রাজাকার, তুই রাজাকার', 'লাখো শহীদের রক্তে কেনা, দেশটা কারও বাপের না' ইত্যাদি স্লোগান দিচ্ছেন ।
ঢাকার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আন্দোলনকারীরা খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে যোগ দিচ্ছেন ঢাকা বিশ্বিবদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে।
আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ দ্যা বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, এখন পর্যন্ত ঢাকা মেডিকেল কলেজ, ইডেন কলেজ ও সাত কলেজের অন্যান্য প্রতিষ্ঠান থেকে শিক্ষার্থীরা পৌঁছে গেছেন। এছাড়া জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, বুয়েটসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে রওনা হয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, 'ইডেন কলেজের মেয়েদের হলে তালা দিয়েছিল ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। ইতিমধ্যে ইডেনের আন্দোলনকারী তালা ভেঙে বের হচ্ছে, ওরা ঢাবিতে আসছে। ঢাকার অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে অনেকে আসছে, অনেকে এসেছেন ইতিমধ্যে।'
আসিফ জানান, আজকের কর্মসূচি রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে সমবেত হওয়ার পর সুনির্দিষ্ট কিছু করার বিষয়ে এখন পর্যন্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। প্রেক্ষাপট সাপেক্ষে শিক্ষার্থীরা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে কর্মসূচি ঠিক করবেন।
এর আগে আন্দোলনকারীদের অবমাননা করা হয়েছে দাবি করে রোববার মাঝরাতে ঢাবি ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা।
কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনের প্ল্যাটফর্ম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলন থেকে আসা ওই বক্তব্য আজ দুপুর ১২টার মধ্যে প্রত্যাহার না করলে তারা আন্দোলনে নামবেন।
রোববার ১৪ জুলাই বিকেলে প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলনে কোটা সংস্কার আন্দোলন নিয়ে আসা এক বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় গভীর রাতে একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা মিছিল ও সমাবেশ করেন। বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, 'যদি মুক্তিযোদ্ধাদের নাতি-নাতনিরা কোটা সুবিধা না পায়, তাহলে কি রাজাকারের নাতি-নাতনিরা এ সুবিধা পাবে?'
অন্যদিকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে অপমান করার প্রতিবাদে আজ বিকাল ৩টায় রাজু ভাস্কর্যের সামনেই অবস্থান কর্মসূচির ডাক দিয়েছে ছাত্রলীগ।
রোববার রাতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভকে ঘিরে ছাত্রলীগের একটি অংশ মধুর ক্যানটিনে অবস্থান নিয়েছিল। রোববার দিবাগত গভীর রাতে এক সমাবেশ শেষে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদ্দাম হোসেন বলেন, 'সোমবার থেকে বাংলাদেশের রাজপথে আর কোনো রাজাকার থাকবে না। প্রতিটি জেলা, মহানগর, বিশ্ববিদ্যালয়সহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নেতাদের প্রতি সুস্পষ্ট নির্দেশনা, দেশে যারা নৈরাজ্য তৈরি করতে চায়, যারা লাখো শহীদের রক্ত নিয়ে তামাশা করবে, রাজপথেই এর ফয়সালা হবে।'