'দুর্জন বিদ্বান হলেও পরিত্যাজ্য': টেন মিনিট স্কুল থেকে বিনিয়োগ প্রত্যাহার প্রসঙ্গে পলক
দেশের শীর্ষস্থানীয় অনলাইন শিক্ষামূলক প্রতিষ্ঠান 'টেন মিনিট স্কুল'-এর জন্য বিনিয়োগ প্রস্তাব বাতিল করেছে স্টার্টআপ বাংলাদেশ লিমিটেড। আজ (মঙ্গলবার) স্টার্টআপ বাংলাদেশের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এ-সংক্রান্ত ঘোষণা দেওয়া হয়।
ডাক টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেছেন, "টেন মিনিট স্কুলের জন্য পাঁচ কোটি টাকার যে বিনিয়োগ প্রস্তাব ছিল, সেটা আজকে সকালে আমরা বাতিল করেছি। সেটাই আমরা জানিয়েছি।'
আজ সকালে সচিবালয়ে কর্মরত সাংবাদিকদের সংগঠন বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরাম আয়োজিত সংলাপ অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
কী কারণে বিনিয়োগ বাতিল করা হয়েছে জানতে চাইলে জুনাইদ পলক বলেন, "এটা একটা বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান, আমাদের কিছু নন ডিসক্লোজার এগ্রিমেন্ট থাকে। আমাদের কাছে শত-শত প্রতিষ্ঠান আবেদন করে বিনিয়োগের জন্য। সেখান থেকে আমরা ৩৬টি কোম্পানিকে বিনিয়োগ করেছি ১২০ কোটি টাকার মতো। আরো প্রায় পঞ্চাশটির মতো কোম্পানি বিনিয়োগের প্রক্রিয়াধীন আছে।"
প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, "কিন্তু আমাদের চুক্তি থাকে, আমরা সেখানে বিনিয়োগ করি বা না করি, আমরা তাদের ভিতরে যে তথ্য উপাত্ত বা তাদের সাথে যে নেগোসিয়েশন হয়, এটা আমরা কোথাও প্রকাশ করতে পারি না।"
জুনাইদ পলক জানান, "সেই জায়গাতে আমাদের কিছু বিধি-নিষেধ আছে। কেন আমরা টেন মিনিট স্কুলের এই প্রস্তাবটি বাতিল করলাম, আমরা যদি ওদের কোন নেগেটিভ বিষয় প্রকাশ করি, এটা তো অন্য বিনিয়োগকারির কাছেও যাবে, অন্য বিনিয়োগকারীও আছে। কিংবা আরো ভবিষ্যতে যেতে পারে। তাহলে যদি কেন দিলাম না, সেই কারণটা যদি আমি প্রকাশ্যে বলি কিংবা আমরা প্রকাশ করি এটা আসলে আমাদের নৈতিকভাবে এটা চুক্তির বরখেলাপে পড়ে যায়। সে কারণেই আমি বলব যে কেন বিনিয়োগ প্রস্তাব বাতিল করলাম, এই ব্যাখ্যা দেওয়ার কারণটা আমরা কোন বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে আমরা করতে পারিনা।'
তবে টেন মিনিট স্কুলে থেকে বিনিয়োগ প্রত্যাহার সম্পর্কে ডাক টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী পলক বলেন, "যেকোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা এগুলো সমুন্নত রাখা উচিত। কেউ সফল উদ্যোক্তা হতে পারে, সফল শিল্পী, সাংবাদিক হতে পারে। রাজনৈতিক মতাদর্শ ভিন্ন হতে পারে। কিন্তু বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু জাতির পিতা বিষয়ে কোন বিরোধ বা মতপার্থক্য থাকতে পারে না। কেউ যদি মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিরুদ্ধে কোন অবস্থান নেয় তার সাথে সরকার থাকতে পারে না। দুর্জন বিদ্বান হলেও পরিত্যাজ্য।"
টেন মিনিট স্কুলের সহপ্রতিষ্ঠাতা ও সিইও আয়মান সাদিক। তিনি দুদিন আগে সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের পক্ষ নিয়ে নিজের ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছিলেন। লিখেছিলেন, 'কোটা সংস্কার চাই, মেধা হোক সবচেয়ে বড় কোটা।'
টেন মিনিট স্কুলের সহপ্রতিষ্ঠাতা ও সিইও হিসেবে দায়িত্বে আছেন আয়মান সাদিক। তিনি সম্প্রতি সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের পক্ষ নিয়ে নিজের ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছিলেন।
প্রথম পোস্টে আয়মান লিখেছিলেন, "কোটা সংস্কার চাই, মেধা হোক সবচেয়ে বড় কোটা।"
আর গতকাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটার পর আয়মান লিখেছিলেন, "রক্তাক্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। আমার ক্যাম্পাসে রক্ত কেন? প্রতিবাদ জানাই"