কোটা সংস্কার আন্দোলনে সহিংসতায় সাভারে হতাহতের বিষয়ে কোনো তথ্য নেই পুলিশের কাছে: ডিআইজি
পুলিশের ঢাকা রেঞ্জের উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) সৈয়দ নুরুল ইসলাম বলেছেন, ১৮ জুলাই থেকে সাভারে সহিংসতার ফলে কতজন হতাহত হয়েছেন, সে বিষয়ে পুলিশের কাছে কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য নেই।
'আমাদের রেকর্ডে এখন পর্যন্ত কোনো হতাহতের ঘটনা নেই, কারণ এখন পর্যন্ত কেউ হতাহত হয়েছেন এমন কোনো তথ্য আমাদেরকে জানানো হয়নি,' বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) সাভার মডেল থানায় এক সংবাদ সম্মেলনে দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড-এর প্রশ্নের জবাবে বলেন তিনি।
'আমরা খুঁজছি। কেউ যদি হতাহত হয়ে থাকেন, তাহলে তিনি কোন মতাদর্শের, কি পরিস্থিতিতে হতাহতের শিকার হলেন, কে তাকে মারল, কীভাবে তাকে মারা হয়েছে — এগুলো আমরা খতিয়ে দেখছি। আমরা খতিয়ে দেখে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেব,' তিনি আরও বলেন।
ডিআইজি বলেন, বাংলাদেশ পুলিশ এদেশে সকল মানুষের জানমাল রক্ষার্থে কাজ করে। 'এ সংকটময় সময়ে পুলিশ তাদের সাধ্যমত আইন প্রয়োগ করে জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছে।'
পুলিশের গুলিতে হতাহতের বিষয়ে তিনি বলেন, 'পুলিশ সবসময় আইনকেই সামনে রাখে; প্রথমেই পুলিশ চেষ্টা করেছে দাঙ্গা নিয়ন্ত্রণের অস্ত্র অর্থাৎ টিয়ারগ্যাস, শটগানের রাবার বুলেট ইত্যাদি ব্যবহার করে ছত্রভঙ্গ করার জন্য। একটা পর্যায়ে আত্মরক্ষার্থে ছররা গুলি ফায়ার করেছে পুলিশ। এতে পুলিশ অফিসারসহ অনেকে আহত হয়েছেন।'
কোনো নিরীহ মানুষ পুলিশের অভিযানে যাতে হয়রানির শিকার না হন, বিষয়টি কীভাবে নিশ্চিত করা হচ্ছে এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, 'আমরা শতভাগ প্রমাণ সাপেক্ষেই ব্যবস্থা নিচ্ছি।'
টানা কয়েকদিন চলা সহিংসতার ঘটনায় বিভিন্ন স্থাপনায় হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ঢাকা জেলায় মোট ১৯টি মামলা দায়েরের পাশাপাশি এসব মামলায় প্রায় আড়াইশ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলেও জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা।
এ নৈরাজ্যকর কর্মকাণ্ডের সঙ্গে কোটা সংস্কার ছাত্র আন্দোলনের কোনো যোগসূত্র নেই উল্লেখ করে ডিআইজি বলেন, 'কোটা সংস্কার আন্দোলনকে সম্পূর্ণভাবে হাইজ্যাক করেছে রাষ্ট্রদ্রোহী এজেন্টরা, যারা এ সরকারকে অপসারণ করে রাষ্ট্রকে অচল করতে চায়...। কোটা সংস্কার আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত শিক্ষার্থীরা বাংলাদেশের কোথাও কোনো ভাঙচুর বা অগ্নিসংযোগে অংশ নেননি।'
'আমাদের কাছে ভিডিওচিত্র আছে; এ ধরনের কর্মকাণ্ডে ছাত্রদের জড়িত থাকার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। আমরা যাদের দেখেছি, তারা দুর্বৃত্ত ও নৈরাজ্যকারী। তারা রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে, সরকারের বিরুদ্ধে মূলত বিদ্রোহ ঘোষণা করেছিল এবং সরকার পতনের মধ্য দিয়ে তারা ফায়দা লুটতে চেয়েছিল,' তিনি আরও বলেন।
ডিআইজি আরও দাবি করেন, নৈরাজ্যকর এসব কর্মকাণ্ডে হকাররাও যুক্ত হয়েছিল। 'সাম্প্রতিক সময়ে জেলা পুলিশের উদ্যোগে রাস্তাগুলোকে মানুষের চলাচলের জন্য স্বাচ্ছন্দ্য করতে কিছু হকার উচ্ছেদ করা হয়েছিল। সেই হকাররাও ভাঙচুর, জ্বালাও-পোড়াওয়ে অংশগ্রহণ করেছে।'