উত্তরায় জাতীয় পতাকা হাতে শিক্ষার্থী-অভিভাবক সমাজের প্রতিবাদ
চলমান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে ঘিরে রাজধানীর উত্তরায় জাতীয় পতাকা হাতে রাস্তায় প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করছে শিক্ষার্থী ও অভিভাবক সমাজ।
আজ শনিবার (৩ আগস্ট) বেলা সাড়ে ১২টার দিকে উত্তরার বিএনএস সেন্টার সংলগ্ন ৭ নম্বর সেক্টরের ৮নং রোডের সামনে দাঁড়িয়ে প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থী-অভিভাবক ও শিক্ষক প্রতিনিধিরা প্রতিবাদ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেন।
এ সময় কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে সরকারের অবস্থান ও কর্মকাণ্ডের তীব্র সমালোচনা এবং প্রতিবাদ জানান তারা।
এ সময় বিএনএস এর সামনে ব্যাপক সংখ্যক বিজিপি-পুলিশ সদস্যদের দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে।
কর্মসূচিতে নিজ সন্তানের জীবনের নিরাপত্তায় উদ্বেগ প্রকাশ করে বক্তব্য রাখা এক অভিভাবক বলেন, "আমাদের ট্যাক্সের টাকায় কেনা গুলি আমাদের সন্তানদের বুকে আমরা দেখতে চাই না। আর একটি গুলিও যেন পুলিশ না চালায়। পরিস্থিতি এমন যে, এখন আমরা আর ঘরে বসে থাকতে পারছি না।"
উপস্থিত সাংবাদিকদের দেওয়া সাক্ষাৎকারে এক নারী অভিভাবক বলেন, "সরকার যা করছে, সেটা আমরা মেনে নিতে পারিনা। আমি সরকারের সমালোচনা করলে যদি আমাকে রাজাকারের ট্যাগ পেতে হয় কিংবা জামাত-বিএনপির ট্যাগ নিতে হয়, এটা আমি মেনে নেব না।"
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অপর এক অভিভাবক জানান, "সরকার মানুষের পালস বুঝে না। মানুষ কী চায়? কথায় কথায় মানুষকে রাজাকার, বিএনপি-জামাত ট্যাগ দিয়ে দেবে- এসব মানুষ আর সহ্য করবে না। মানুষ এগুলো আর মানতে চায় না। আমার মত প্রকাশের স্বাধীনতা আছে। আমি খারাপকে খারাপ, সাদাকে সাদা, কালোকে কালো বলতে চাই।"
ওই অভিভাবক আরো বলেন, "আমাদের যদি নূন্যতম বিবেক থাকে, আমরা যদি স্বাধীন রাষ্ট্রের নাগরিক হই, তবে আমাদের প্রতিবাদ করা উচিত।"
মায়ের সঙ্গে কর্মসূচিতে আসা ইস্পিতা নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, "আমাদের শিক্ষক-অভিভাবকরা রাস্তায় নামতে বাধ্য হয়েছেন আজকে। একটা বাচ্চার মাথায় গুলি করে মেরে ফেলা হয়েছে। আমি এখনো মা হইনি, তবে আমি শিশুদের মৃত্যু সহ্য করতে পারি না, কারণ আমি একজন মানুষ। ফিলিস্তিনের যেই অবস্থা, আমি চাইনা আমার দেশেরও সেই অবস্থা হোক।"
এসময় শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা রাস্তার ওপর দাঁড়িয়ে সমস্বরে জাতীয় সংগীত উচ্চারণ করেন।