সময়ের আগেই বন্ধ হয়েছে ব্যাংকের অনেক শাখা, টাকা তোলার চাপ
সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অসহযোগ কর্মসূচি ঘিরে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলাতে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ায় নির্ধারিত সময়ের আগেই ব্যাংকের অনেক শাখা বন্ধ করে দিতে হয়েছে বলে জানা গেছে।
একইসঙ্গে সরকার সাধারণ ছুটি ঘোষণা করার কারণে আজ সোমবার (৫ আগস্ট) থেকে আগামী বুধবার পর্যন্ত ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র মো. মেজবাউল হক।
একটি শীর্ষস্থানীয় ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) জানান, "আমাদের ব্যাংকসহ বেশিরভাগ ব্যাংকেই গ্রাহকদের টাকা তোলার চাপ ছিল। পরিস্থিতির কারণে রোববার ব্যাংকের ব্রাঞ্চগুলোতে গ্রাহকদের যাওয়া-আসা কম ছিল। যারাই আসছিলেন, তারা মূলত টাকা তুলতেই ব্যাংকে এসেছিলেন। আমরা গ্রাহকদের বোঝানোর চেষ্টা করলেও গ্রাহকদের ধারণাই ছিল আগামী কয়েকদিন হয়তো তারা টাকা তুলতে পারবেন না।"
"তবে আমাদের নগদ টাকার কোনো সংকট নেই। গ্রাহকদের চাহিদামতো টাকা আমরা দিতে পেরেছি," বলেন তিনি।
বেশ কয়েকটি ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, অনেক ব্যাংকই তাদের সবগুলো শাখা খোলেনি। একইসঙ্গে, ব্যাংক কর্মকর্তাদের অনেককেই হোম অফিস করতে বলা হয়েছে।
ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের (ইউসিবি) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আরিফ কাদরী দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, "আমাদের ব্রাঞ্চগুলোকে আগে থেকেই নির্দেশ দেওয়া ছিল যে, যেকোনো ধরনের নিরাপত্তাহীনতা বোধ করলে যেন কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয়। ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, বরিশালসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় আমরা অনেক ব্রাঞ্চ সময়ের আগেই বন্ধ করে দিয়েছি। কোনো কোনো ব্রাঞ্চ দুপুর ১২টা থেকে বেলা ২টার মধ্যে বন্ধ করা হয়েছে।"
তবে, যেসব জায়গার অবস্থা মোটামুটি স্বাভাবিক ছিল, সেগুলো বিকেল ৪টার দিকে বন্ধ হয়েছে বলে জানান তিনি।
সাধারণ ছুটি ঘোষণার কারণে তিনদিন ব্যাংক বন্ধ থাকলেও এটিএম, ডিজিটাল ব্যাংকিং এর সার্ভিসগুলো চালু থাকবে বলে জানা গেছে। ফলে ব্যাংক বন্ধ থাকলেও গ্রাহকেরা ব্যাংকের অ্যাপ বা ওয়েবসাইটের মাধ্যমে লেনদেন করতে পারবেন এবং এটিএম থেকে নগদ টাকা তুলতে পারবেন।
সাধারণ ছুটির সময়ে এটিএম সার্ভিস কীভাবে পরিচালনা করা হবে জানতে চাইলে ইস্টার্ন ব্যাংকের (ইবিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আলী রেজা ইফতেখার বলেন, "আমাদের হাতে পর্যাপ্ত ক্যাশ আছে। তবে কারফিউ এর সময়ে এটিএম বুথগুলো
রিফিল করার ক্ষেত্রে শুধু ব্রাঞ্চের নিচে থাকা বুথগুলোতেই রিফিল করা সম্ভব হয়। দূরের বুথগুলোতে টাকা পরিবহন করা কঠিন হয়ে পড়ে। কারণ এখানে টাকার নিরাপত্তা ছাড়াও ব্যাংক কর্মকর্তাদের নিরাপত্তার বিষয়টিও আমাদের ভাবতে হয়। তবে গ্রাহকদের সর্বোচ্চ সেবা নিশ্চিত করতে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টাটা করবো।"