মূদ্রাস্ফীতি রোধ ও আর্থিক খাতকে স্থিতিশীল করাকে অগ্রাধিকার দেবেন নতুন গভর্নর
মুদ্রাস্ফীতি রোধ ও আর্থিক খাতে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে কাজ করবেন বাংলাদেশ ব্যাংকের নবনিযুক্ত গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর। গতকাল মঙ্গলবার রাতে তিনি সংবাদ সংস্থা ইউএনবিকে এক সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেন।
ড. মনসুর ইউএনবিকে বলেন, স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে ও এর ভিত্তিকে শক্ত করতে আর্থিক খাতের সব স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে কাজ করবেন তিনি।
গত ১৩ বছরের মধ্যে এ জুলাইয়ে সর্বোচ্চ মুদ্রাস্ফীতি ১১.৬৬ হওয়া সত্ত্বেও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক প্রশাসন এটি নিয়ন্ত্রণে মনোযোগ দেয়নি বলে অভিযোগ করেন গভর্নর। মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ যে কোনো কেন্দ্রীয় ব্যাংকের জন্য শীর্ষ অগ্রাধিকার হওয়া উচিত বলে মনে করেন তিনি। তবে, অর্থ সরবরাহ, বিনিময় হারের স্থিতিশীলতা এবং মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ- সবগুলোই গভর্নরের সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করে।
এছাড়া জীবনযাত্রার মান, আন্তর্জাতিক বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান অনেকটাই নির্ভর করে যেকোনো দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সিদ্ধান্তের ওপর।
ড. মনসুরকে গভর্নর হিসেবে নিয়োগ দিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আইন মন্ত্রণালয় তড়িঘড়ি করে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর পদে নিয়োগে ৬৭ বছরের বয়সসীমা তুলে দেয়। উল্লেখ্য, অর্থনীতিবিদ মনসুরের বয়স এখন ৭২ বছর।
সর্বশেষ ২০২০ সালের জুলাইয়ে তৎকালীন গভর্নর ফজলে কবিরকে পুনর্নিয়োগ দিতে বয়সসীমার বিধান ৬৫ বছর থেকে ৬৭ বছর করা হয়েছিল।
ড. মনসুর ১৯৭৬ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগে প্রভাষক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। ওই বছরই তিনি অর্থনীতিতে উচ্চতর পড়াশোনার জন্য কানাডা যান। গ্র্যাজুয়েট ও রিসার্চ অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে কানাডার ওয়েস্টার্ন অন্টারিও বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক পর্যায়ে নিয়মিত অর্থনীতি কোর্স করান তিনি (১৯৭৮-৮১)।
ড. মনসুর ১৯৮১ সালে ইকোনমিস্ট প্রোগ্রামের অধীনে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলে যোগদান করেন এবং তারপরে ১৯৮২ সালে ওয়েস্টার্ন অন্টারিও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে (সাধারণ ভারসাম্য বিশ্লেষণ) পিএইচডি অর্জন করেন।
আইএমএফের দীর্ঘ কর্মজীবনে ড. মনসুর মধ্যপ্রাচ্য, এশিয়ান, আফ্রিকান এবং মধ্য আমেরিকার দেশগুলোতে কাজ করেছেন। তিনি আইএমএফের গুরুত্বপূর্ণ ফাংশনাল বিভাগ (রাজস্ব বিষয়ক এবং নীতি পর্যালোচনা ও উন্নয়ন বিভাগ) এবং অঞ্চল বিভাগে (মধ্যপ্রাচ্য এবং মধ্য এশিয়া ও এশিয়া বিভাগ) কাজ করেছেন।
এছাড়াও ১৯৯৮-০১ সাল পর্যন্ত পাকিস্তানে আইএমএফের সিনিয়র আবাসিক প্রতিনিধি এবং বাংলাদেশ সরকারের অর্থমন্ত্রীর আর্থিক উপদেষ্টা (১৯৮৯-৯১) হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন তিনি।