শেখ হাসিনার বিতর্কিত ‘রাজাকারের নাতি’ উক্তি নিয়ে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের মিডটার্মে প্রশ্ন
মুক্তিযোদ্ধা ও রাজাকারের স্বজন নিয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর করা উক্তি উদাহরণ হিসেবে ব্যবহার করে প্রশ্ন এসেছে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (ববি) বাংলা বিভাগের ভাষাবিজ্ঞান কোর্সের প্রথম মিডটার্ম পরীক্ষায়।
বুধবার (২৮ আগস্ট) অনুষ্ঠিত তৃতীয় বর্ষের পরীক্ষায় উক্তিটি ব্যবহার করা হয়। প্রশ্নে এমন উদাহরণ ব্যবহার করায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে।
'স্বরতরঙ্গের' ব্যাখ্যা চেয়ে প্রশ্নে উল্লেখ করা হয়েছে, "'মুক্তিযোদ্ধার সন্তান নাতি পুতিরা কেউ মেধাবী না? যত রাজাকারের বাচ্চা নাতি পুতিরা মেধাবী?' এতে বাক্যিক ব্যবহারের ক্ষেত্রে স্বরতরঙ্গের সাধারণ, উঁচু ও নিচু তিনটি অবস্থান বর্ণনা করে বুঝিয়ে দাও।"
বাংলা বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ইউসুফ আলম বলেন, 'বাক্যটি স্বরতরঙ্গ বিষয়ের বাস্তবিক উদাহরণ। এই উদাহরণ ব্যবহার করে স্বরতরঙ্গ নিয়ে আমরা নতুন করে ভাবতে পারছি। বিশ্ববিদ্যালয় তো নতুন নতুন জ্ঞান আহরণ, সৃজন, বিতরণের স্থান। গতানুগতিক ধারার বাইরে গিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন নতুন বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে, যাতে শিক্ষার্থীদের চিন্তার জগৎ বৃদ্ধি পায়।'
এছাড়া প্রশ্নে আন্তজার্তিক ধ্বনিতাত্তিক বর্ণমালায় রূপান্তরের জন্য এডিটরস গিল্ডের সভাপতি ও একাত্তর টিভির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোজাম্মেল বাবুর উদ্ধৃতিও উল্লেখ করা--;'আমাদের শিক্ষক ভাইরা যে প্রত্যয় স্কিম নিয়ে আন্দোলন করছে আমরা সাধারণ মানুষ খুব কষ্ট পেয়েছি। এইকারণে আপনি (শেখ হাসিনা) সতেরো কোটি মানুষের জন্য একটা স্কিম দিলেন? সরকারি কর্মচারীরা কোথায় তাদের বেড়ে গেলো কমে গেলো তাতে তারা দুঃখ পাচ্ছে কিন্তু এই ষোল কোটি মানুষ যে পেলো এটাতে তাদের সুখ নাই। তারপরেও আমি বলবো প্রশাসন এবং শিক্ষকদের মুখোমুখি করার একটা চেষ্টা হচ্ছে।'
প্রশ্নের এই অংশেও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উক্তি ব্যবহার করা হয়—'আন্দোলন যারা চালাবি চালাতে থাক, চালাতে চালাতে যখন টায়ার্ড হবে তখন বসবো, তার আগে বসার দরকারটা কী!'
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একটি সংবাদ সম্মেলন থেকে প্রশ্নের এই অংশ নেওয়া হয়েছে।
প্রশ্নপত্রটি প্রণয়ন করেছেন কোর্স শিক্ষক বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সঞ্জয় কুমার সরকার। তিনি বলেন, 'স্বরতরঙ্গে সাধারণত বাক্যে কোন শব্দের ওপরে জোর প্রয়োগ করতে—এমন শব্দের ব্যবহার করা হয়ে থাকে। যেমন, এখানে রাজাকার শব্দটির ওপরে জোর প্রয়োগ করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা প্রচলিত ধারার বাইরে গিয়ে বাস্তবিক উদাহরণে বিষয়টি নিয়ে চিন্তা করবে, বাস্তব যেকোনো বিষয়কে স্বরতরঙ্গের মাধ্যমে ব্যাখা করতে পারবে, সেই জায়গা থেকেই প্রশ্নে উক্তিটির উল্লেখ করা হয়েছে।'