আশুলিয়ায় লাশ পোড়ানোর ঘটনায় সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে পুলিশ কর্মকর্তা কাফী আটক
৫ আগস্ট আশুলিয়ায় ছাত্র-জনতাকে হত্যার পর তাদের দেহ আগুনে পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে ঢাকা জেলার সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অবস) আব্দুল্লাহিল কাফীকে বিমানবন্দর থেকে আটক করা হয়েছে।
দেশ ছাড়ার চেষ্টার সময় সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) রাতে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে আটক হন তিনি।
শেখ হাসিনার পতনের দিন আশুলিয়ায় ছাত্র-জনতা হত্যার ঘটনায় তার সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার রবিউল হোসেন ভূঁইয়া।
এর আগে পুলিশের সূত্র জানায়, সেনাবাহিনীর সদস্যরা আব্দুল্লাহিল কাফীকে আটক করেছেন।
ইউএনবি'র খবর অনুযায়ী, রোববার আশুলিয়া থানা পরিদর্শন শেষে ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) আহমদ মুঈদ ভ্যানে লাশ স্তূপ করে রাখার ঘটনায় জড়িত পুলিশ কর্মকর্তাদের শনাক্ত করা হয়েছে বলে জানান।
তিনি বলেন, 'পরবর্তী পদক্ষেপের জন্য আমরা নাম প্রকাশ করছি না। খুব শিগগিরই তা আপনাদের জানানো হবে।'
তিনি আরও বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া ভিডিওর ঘটনা তদন্তে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও ডিবির কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার রাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এক মিনিট ১৪ সেকেন্ডের একটি ভিডিওতে দেখা যায়, দুজন পুলিশ সদস্য একটি মরদেহের হাত-পা ধরে আগে থেকেই লাশবোঝাই একটি ভ্যানের ওপর ছুড়ে মারছেন।
পরে এএফপি'র বাংলাদেশ অফিসের ফ্যাক্টচেকার কদর উদ্দিন শিশির এটিকে আশুলিয়া থানার কাছে একটি জায়গা বলে চিহ্নিত করেন।
এছাড়া গুগলের জিওলোকেশন উপাত্ত ও আশপাশের ছবি বিশ্লেষণ করার পর পুলিশ-সূত্র ভিডিওটির তারিখ ও অবস্থান নিশ্চিত করে।
স্থানীয় পুলিশ ও বাসিন্দারা দুই পুলিশ সদস্যের মধ্যে একজনকে ঢাকা উত্তর গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক হিসেবে শনাক্ত করেন। তারা আরও বলেন, সাধারণ পোশাক ও পুলিশের হেলমেট-বুলেটপ্রুফ ভেস্ট পরা অন্যান্য পুলিশ সদস্য বেশিরভাগই পুলিশের একই শাখার।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে জানা গেছে, ৫ আগস্ট হাসিনার পতনের পর বাইপাইল এলাকায় বিজয় মিছিল নিয়ে আশুলিয়া থানা ঘেরাও করে থানার ফটক ভাঙার চেষ্টা করে জনতা।
পুলিশ প্রথমে বিক্ষোভকারীদের শান্ত করার চেষ্টা করলেও ব্যর্থ হয়। এক পর্যায়ে পুলিশ গুলি চালালে বেশ কয়েকজন আহত হন।
ফাহিমা আক্তার নামক একজন প্রত্যক্ষদর্শী দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, পুলিশ একটি ভ্যানে নিথর দেহ বোঝাই করার দৃশ্য তিনি দেখেছেন।
রকি আহমেদ নামক একজন পোশাককর্মী পুলিশ সাতটি দেহকে একটি রিকশা ভ্যানে তুলে থানার পার্কিং এলাকায় নিয়ে যেতে দেখেছেন বলে জানান।
রকি বলেন, 'মরদেহগুলো পোড়ানো হয়। এরপর পুলিশ থানা থেকে গুলি চালাতে চালাতে বের হয়ে যায়। একজন আহতকে তখনো হাতকড়া পরা অবস্থায় আগুনের মধ্যে দেখা যায়।'