একজন আহত ইমরান খান, উদ্বিগ্ন জেনারেলের দল আর রাজনৈতিক নৈরাজ্যের পটভূমি
হত্যাচেষ্টা থেকে প্রাণে বেঁচে হাসপাতালে রয়েছেন পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। তার নিবেদিপ্রাণ বিক্ষুদ্ধ সমর্থকরা সড়কে বদলা চেয়ে স্লোগান দিচ্ছে, বিক্ষোভ করছে। বিশ্লেষণ দ্য ডনের।
এদিকে, সরকারের নেতৃত্বে রয়েছে ইমরানের ঘোর বিরোধী শরীফ পরিবার। অরাজক এই পরিস্থিতি কীভাবে মোকাবেলা করা যায়, তা নিয়ে তাদের মন্ত্রী এবং দেশের জেনারেলরা রয়েছেন এক বিষম সংকটে। জনাব খানকে হত্যাচেষ্টার ফলে তাদের চরম রাজনৈতিক মূল্য দিতে হচ্ছে।
হত্যাচেষ্টার নেপথ্যের পরিকল্পনাকারী হিসেবে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রানা সানাউল্লাহ এবং পাকিস্তানের সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা- আইএসআই- এর একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তার নাম উচ্চারণ করে ইমরান যুদ্ধই ঘোষণা করেছেন।
এ ধরনের অভিযোগের মাধ্যমে সরকারকে আরও দুর্বল করতে চান তিনি। একইসাথে, ইস্টাব্লিশমেন্টকে (পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর পোশাকি নাম দেশটিতে) রাজনৈতিক যুদ্ধের ময়দানে টেনে আনতে চান।
অথচ বেশিদিন আগের কথা নয়, যখন ক্ষমতায় ছিলেন ইমরান। আর তার সরকার পেয়েছিল ইস্টাব্লিশমেন্টের নজিরবিহীন সমর্থন। আগের কোনো বেসামরিক সরকারই যা কখনো পায়নি।
ইমরান খানের প্রতিষ্ঠার ইতিহাস
৯০ এর দশকে পর পর নওয়াজ শরীফ ও বেনজির ভুট্টো পরিবারের নেতৃত্বাধীন সরকার উৎখাতের পর রাজনীতির ময়দানে রোলারকোস্টার রাইডের মতোন উত্থানপতনের পরিক্রমা দেখে পাকিস্তান; জনগণের চোখে যা ছিল সামরিক বাহিনীর হস্তক্ষেপেরই ফসল।
ওই দশকের অন্ত আসে ১৯৯৯ সালে নওয়াজ শরীফের সরকারকে জেনারেল পারভেজ মোশাররফের নেতৃত্বে এক রক্তপাতহীন সামরিক অভ্যুত্থানের মধ্যে দিয়ে। ওই সময়ে মনে হয়েছিল, শরীফ বা ভুট্টো পরিবারের আর কখনোই ক্ষমতায় ফেরা মেনে নেবে না সামরিক বাহিনী। এই দুটি পরিবারের রাজনীতিকদের বিদেশে নির্বাসনে কাটাতে হয়। অন্যদিকে, সন্ত্রাস-বিরোধী যুদ্ধে সহযোগী হিসেবে পশ্চিমা বিশ্বের প্রিয় হয়ে ওঠেন জেনারেল মোশাররফ।
কিন্তু, রাজনীতির বাতাস দিক-বদলায় যখন জাতীয় জরুরি অবস্থা জারি করেন মোশাররফ। স্থগিত করেন সংবিধান এবং ফিকে হয়ে আসে তার জনপ্রিয়তা। বিচার বিভাগের পুনর্বহালের দাবিতে তার বিরুদ্ধে এক শক্ত আন্দোলন গড়ে ওঠে। ফলে তার বিরোধীদের সাথে তাদের ক্ষমতায় ফেরার আপোষ আলোচনা শুরুতে বাধ্য হন এ জেনারেল।
উপসাগরীয় একটি দেশের বিলাসবহুল প্রাসাদে বেনজির ভুট্টোর সাথে সাক্ষাৎ করেন মোশাররফ। এই বৈঠকের কারিগর ছিলেন তারই এক ঘনিষ্ঠ সহযোগী, এবং তৎকালীন আইএসআই প্রধান জেনারেল পারভেজ আশফাক কায়ানি। যিনি ছিলেন, বেনজির ভুট্টো প্রধানমন্ত্রী থাকার সময় তার সামরিক সচিব। পরবর্তীতে কায়ানি সামরিক বাহিনীতে মোশাররফের স্থলাভিষিক্ত-ও হন।
অভ্যুত্থানের পর সৌদি আরবে নির্বাসনে চলে যান নওয়াজ শরীফ। সৌদি রাজপরিবারের চাপে এক সময় নওয়াজকেও দেশে ফিরতে দিতে রাজি হন মোশাররফ।
এরপর, বেনজির ভুট্টোর ট্র্যাজিক হত্যাকাণ্ডের প্রেক্ষাপটে মোশাররফকে উৎখাত করা সম্ভব হয়। ওই সময়, পাকিস্তানের রাজনৈতিক অঙ্গনে একটি গুঞ্জন জোরালো হয় যে, শরীফদের পিএমএল-এন বা ভুট্টোদের পিপিপি'র মোকাবিলায়- তৃতীয় একটি রাজনৈতিক শক্তি চায় ইস্টাব্লিশমেন্ট।
ইমরান সেসময় রাজনীতির ময়দানে বিশেষ সুবিধা করতে পারছিলেন না। ফলত, জেনারেলদের সুদৃষ্টি পড়ে তারই দিকে। তিনিই হয়ে ওঠেন সেই বিকল্প তৈরির উপায়।
তাকে আদর্শ রাজনীতির নায়ক হিসেবে নেপথ্যে সমর্থন যোগায় আইএসআই। ক্রিকেটার ও সমাজসেবক হিসেবে তার খ্যাতিকে কাজে লাগিয়েই এই নায়কোচিত ভাবমূর্তি গড়ে তোলা হয় সযত্নে। শুধু ১৯৯২ সনের বিশ্বকাপ জয়ী ক্রিকেটার হিসেবেই নয়, লাহোরে ক্যান্সার হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করে তিনি পাকিস্তানীদের সমর্থন লাভ করতে থাকেন। তাদের চোখে হয়ে ওঠেন একজন অপরিহার্য সমাজ সংস্কারক।
পরিবর্তনের এজেন্ট
সামরিক বাহিনীর সমর্থন লাভের পর আরও প্রস্ফূটিত হয়- ইমরানের রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। ২০১৩ সালের নির্বাচনেই তিনি একটি প্রধান শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হন। প্রচলিত রাজনীতিবিদদের নিয়ে ক্ষুদ্ধ, হতাশ অগণিত তরুণ পাকিস্তানীকে আকর্ষণ করেন তিনি।
এর পরের বছরগুলোয় ইমরানের ভাগ্য আরও সুপ্রসন্ন হয়- যখন সিনিয়র জেনারেলদের পাশ কাটিয়ে জেনারেল বাজওয়াকে সামরিক বাহিনীর প্রধান পদে নিয়োগ দেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফ।
জেনারেল বাজওয়া নিজেও ক্রিকেটপ্রেমী হিসেবে খ্যাত, ইতোমধ্যেই ছিলেন ইমরানের ক্রিকেটীয় ক্যারিয়ারের গুণমুগ্ধ। এই জেনারেলের উৎসাহেই দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার হন ইমরান, দেশের স্থিতিশীলতার জন্য দুর্নীতি নির্মুল দরকার– ইমরানের এই দৃষ্টিভঙ্গিও জেনারেল বাজওয়াকে তার প্রতি আরও আকৃষ্ট করে। জনপরিসরেও দুর্নীতি বিরোধী এই মন্ত্র আলোচিত হতে থাকে।
তারপর দুইয়ে মিলিয়ে চার হতে লাগেনি সময়। পাকিস্তানের নিয়ত রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার আবহে, কোনোকিছুই দীর্ঘকাল এক থাকে না। ফলে তাদের অংশীদারিত্বেও একদিন চিড় ধরে। বিশ্বাসের জায়গা দখল করে অবিশ্বাস, আর ভঙ্গ হয় একে-অন্যকে দেওয়া প্রতিশ্রুতি।
সম্পর্কের অবসান
জেনারেল বাজওয়া যখন দুর্নীতিবিরোধী স্বচ্ছ রাজনীতির আরেক ঘোর সমর্থক লেফটেনেন্ট জেনারেল ফায়েজ হামিদকে আইএসআই প্রধানের পদ থেকে সরিয়ে পেশোয়ার কোরের প্রধান পদে নিয়োগ করতে চাইলেন তখনই ইমরানের সাথে তার মতপার্থক্য সামনে চলে আসে।
ইমরান শুধু এর বিরোধিতাই করেননি, বরং এই প্রক্রিয়াকে ধীরও করে দেন। সাফ সাফ জানান, নতুন আইএসআই প্রধান নিয়োগ সাংবিধানিক ক্ষমতাবলে তার সংরক্ষিত অধিকার। এর আগে তার মেয়াদে দু'বার আইএসআই প্রধান নিয়োগের সময় কিন্তু হস্তক্ষেপ করেননি জনাব খান। কিন্তু, সেবার করায় বাজওয়া এই বার্তাই পেলেন যে, ফায়েজকে নিজস্ব রাজনৈতিক লক্ষ্যপূরণেই আইএসআই প্রধান পদে ধরে রাখতে চান ইমরান। আর পরবর্তীতে তাকেই করবেন সেনাপ্রধান।
এই সুযোগ নিয়ে, ইমরানের সাথে সামরিক বাহিনীর বিভাজন বাড়ানোর সুযোগ পেয়ে যায় বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো। তাদেরও ভয় ছিল, ফায়েজ সেনাপ্রধান হলে, তিনি ইমরানের দল পিটিআই'কে নির্বাচনে জিতিয়ে দেবেন। ফলে ইমরানের শাসনকাল স্থায়ী হবে অন্তত ১০ বছর। আর এরই পরিপ্রেক্ষিতে শুরু হয় গোপন যোগসাজশ এবং তাকে উৎখাত করতে পার্লামেন্টে অনাস্থা ভোটের প্রক্রিয়া।
বিরোধ যখন চরমে
ক্ষমতা হারানোর পর পরই দেশজুড়ে ক্ষমতাচ্যুতির বিপক্ষে ব্যাপক বিক্ষোভ সমাবেশ শুরু করেন ইমরান। তিনি সামনে আনেন, বিদেশি শক্তির মদদে সরকার বদলের 'কথিত' ষড়যন্ত্রকে। সেভাবেই সাজান প্রচারণার কৌশল। যদিও এ ধরনের কোনো অপচেষ্টার প্রমাণ নাকি পায়নি সামরিক বাহিনী ও শাহবাজ শরীফ সরকার প্রভাবিত জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদ। তবুও ইমরানের ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তাকে সমাজের সকল রন্ধ্রে রন্ধ্রে পৌঁছে দেয়। জনপ্রিয়তায় নতুন জোয়ারে আসে। তার সমাবেশ ও জনসভায় দেখা যেতে থাকে জনতার উপচে পড়া ভিড়। দিন দিন এই জনঢল বাড়তে থাকে বহুগুণে। এরই ধারাবাহিকতায় উপ- নির্বাচনে রাজনৈতিক বিরোধীদের হারায় তার দল।
সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী সাম্প্রতিক সময়ে সত্যিই অর্জন করেছেন বিপুল জনসমর্থন। যদিও তা করতে গিয়ে, তার আগ্রাসী বক্তব্যে ধবংস হয়েছে সামরিক বাহিনীর সাথে তার যেটুকু সংযোগের সেতু অবশিষ্ট ছিল তাও। হোক সে সাংবাদিক আরশাদ শরীফকে হত্যা, সাম্প্রতিক সময়ে অনুষ্ঠিত উপ-নির্বাচনগুলো বা নিরাপত্তা বাহিনীর হেফাজতে তার ঘনিষ্ঠ সহযোগী শাহবাজ গিলকে নির্যাতনের 'কথিত' অভিযোগ- খান এসবের জন্য দুষেছেন সামরিক বাহিনীর অভ্যন্তরের কিছু সিনিয়র কর্মকর্তাকেই।
ইমরানের অভিযোগগুলোর ধার এতটাই নগ্ন আর তীক্ষ্ম হতে থাকে যে, এক পর্যায়ে খোদ আইএসআই প্রধান আন্তঃবাহিনী গণসংযোগের মহাপরিচালককে সাথে নিয়ে একটি সংবাদ সম্মেলনে হাজির হন এবং অভিযোগগুলো অস্বীকার করে এসব ডাহা মিথ্যা বলে দাবি করেন।
আইএসআই প্রধান এসময় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, তাদের সংস্থার জেষ্ঠ্য কর্মকর্তাদের অধিকাংশই একমত যে, এই সংস্থার বর্তমান ও ভবিষ্যৎ নেতৃত্বকে অবশ্যই অভ্যন্তরীণ রাজনীতির প্রভাবমুক্ত থাকতে হবে। পাকিস্তানী রাজনীতির অনেক ঘনিষ্ঠ পর্যবেক্ষকই মনে করেন, এই সংবাদ সম্মেলন করেছে হিতে-বিপরীতের কাজ। অর্থাৎ, কিনা মানুষের মনে আরও বিশ্বাসযোগ্য করেছে ইমরানের অভিযোগগুলোকে। অন্যরা মনে করেন, এটি ছিল সামরিক বাহিনীর সাথে ইমরানের আনুষ্ঠানিক সম্পর্কচ্ছেদ।
এদিকে, ইমরান যখন তার মূল দাবিগুলোর পক্ষে সামরিক বাহিনীর মনোযোগ আর পাচ্ছিলেন না, তখন নতুন সেনাপ্রধান নিয়োগের আর কয়েক সপ্তাহ বাকি থাকতেই তিনি ইসলামাবাদের উদ্দেশ্যে লংমার্চ শুরু করেন। ইমরান দাবি করছেন, জনতার ভোটে নির্বাচিত নয়া সরকারই কেবল নতুন সেনাপ্রধান নিয়োগের অধিকার রাখে। তার বর্তমান সরকার বহিঃশক্তির মদদে আমদানিকৃত দুর্নীতিবাজদের জোট।
এরপর কী হবে?
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেব এরদোয়ানকে আদর্শ বলে মানেন ইমরান। আগামী নির্বাচনে দুই- তৃতীয়াংশ ভোটে জিতে এরদোয়ানের মতোই দীর্ঘকাল মসনদে থাকতে চান। সামরিক বাহিনীর সাথে এক মিশ্র সম্পর্ক রাখার জোরালো তাগিদ-ও অনুভব করেন ইমরান।
এখন তিনি ব্যাপক জনসমর্থন আদায়ের মাধ্যমে- সেই রাজনৈতিক বৈধতা অর্জন করতে চান এবং নিশ্চুপ করে দিতে চান তার বিরোধীদের; যারা এতকাল দাবি করেছেন, তার নেই কোনো নিজস্ব ক্ষমতা অথবা জনসমর্থন।
তাই বিক্ষোভ সমাবেশে আরও আগ্রাসী ভূমিকায় অবতীর্ণ হবেন তিনি; এবং এ পর্যন্ত যে ফলাফল তিনি পাচ্ছেন, তাতে বুঝছেন, এই কৌশল তার সমর্থনের ভিতকে মজবুতই করছে।
ইমরানের প্রাণনাশের চেষ্টা তার জন্য জান দেবে এমন সমর্থকদের ক্রুদ্ধ করেছে, ইতোমধ্যেই তারা রাজপথে চালিয়ে যাচ্ছে প্রতিবাদ। এই প্রেক্ষাপটে, দেশের চরম রাজনৈতিক সহিংসতার আশঙ্কা ঘনীভূত হচ্ছে। আর বিক্ষোভ চলাকালেই, হাসপাতাল থেকে হুইলচেয়ারে বসে জনসম্মুখে এসেছেন ইমরান। পায়ে ব্যান্ডেজ বাঁধা অবস্থায় তিনি সমর্থকদের উদ্দেশ্যে বলেছেন, দোষী তিন ব্যক্তি– প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ এবং দুই জেষ্ঠ সামরিক কর্মকর্তা পদত্যাগ করা না পর্যন্ত তারা যেন রাজপথেই থাকে। দাবি পূরণ হলেই যেন কেবল ঘরে ফেরে জনতা।
আহত ইমরান একটি বার্তাও দিতে চেয়েছেন- হয় বিক্ষোভের জনরোষ সামলাও, নাহলে দাও আগাম নির্বাচন। একইসাথে উপরে আলোচিত দাবিকে মেনে নেওয়ার পাশাপাশি স্থগিত রাখতে হবে নতুন সেনাপ্রধান নিয়োগ।
এর মাধ্যমে তিনি সরকারকে আরও বুঝিয়ে দিচ্ছেন, যদি তিনি নিজ পছন্দের ব্যক্তিকে সেনাপ্রধান না করতে পারেন, তাহলে যেন সরকার অন্তত তার পছন্দের বিষয়ে সতর্ক থেকেই এ সিদ্ধান্ত নেয়। তার আরেক উদ্দেশ্য হচ্ছে, এর কোনোটিই নাহলে নতুন সেনাপ্রধান নিয়োগকে বিতর্কিত করে ফেলা।
এদিকে না বর্তমান সরকার, না সেনাবাহিনী কারো কাছেই সঙ্গত কারণেই গ্রহণযোগ্য হবে না ইমরানের দাবিগুলো। ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর ইমরান যে বিপুল জনপ্রিয়তা লাভ করেছেন, তা কারোরই চোখ এড়ায়নি। বিশেষত সরকারের তো নয়ই, তাই তারা আগাম নির্বাচন দিতে চাইবে না। আর সামরিক বাহিনীর বর্তমান অভিভাবকেরাও যাকে সহজে অনুমান করতে তারা পারেন না, সেই অনির্ভরযোগ্য ইমরানের হাতে মসনদের চাবি ছেড়ে দিতে রাজি নন। তারা মনে করেন, ইমরানের বিশ্বাসঘাতকতার শিকার তারা। আর সাবেক প্রধানমন্ত্রী জনতার কাছে এই প্রতিষ্ঠানের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করার চেষ্টায় লিপ্ত।
সব মিলিয়ে বলা যায়, ইমরান, সামরিক বাহিনী ও সরকার– সবাই নিয়েছে চরম মুখোমুখি অবস্থান। ফলে আপাতত সমঝোতার কোনো অবকাশই নেই, আর পাকিস্তানও অবধারিতভাবে রাজনৈতিক নৈরাজ্যের দিকে এগিয়ে চলেছে।