ইরানে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ, বিক্ষোভে মৃত্যু বেড়ে ১৩৩
রোববার (২ অক্টোবর) ইরানের একটি স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে সেদেশের পুলিশ। গণমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ঘটনার সময় তেহরানের শরিফ বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের গাড়ি পার্কিং এলাকায় আটকা পড়েন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য করে গুলি ছুড়ছেন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। আর শিক্ষার্থীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে পালানোর চেষ্টা করছেন।
সেপ্টেম্বরে ইরানের নৈতিকতা বিষয়ক পুলিশের হাতে আটক মাহসা আমিনির মৃত্যুর ঘটনায় দেশটিতে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ শুরু হয়।
২২ বছর বয়সী আমিনিকে ইরানের নৈতিকতা বিষয়ক পুলিশ পর্দাবিধি লঙ্ঘনের দায়ে গত ১৩ সেপ্টেম্বর গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারের কয়েক ঘণ্টা পরেই হেফাজতে থাকাকালীন অসুস্থ হয়ে পড়েন ওই তরুণী। এরপর তাকে হাসপাতালে ভর্তি হলে ৩ দিন কোমায় থাকার পর ১৬ সেপ্টেম্বর সেখানেই মৃত্যু হয় তার।
পুলিশের দাবি, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন আমিনি। অন্যদিকে পরিবারের দাবি, আগে কখনোই হৃদরোগ ছিলনা তার।
এদিকে বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আমিনির মাথায় লাঠি দিয়ে আঘাত করার চিহ্ন পাওয়া গেছে। তবে, ইরানের পুলিশ এমন অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছে।
এ ঘটনার পরপরই ইরানের বিভিন্ন শহরে মাহসা আমিনির মৃত্যুর প্রতিবাদে বিক্ষোভে নামেন দেশটির সাধারণ জনগণ।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আসা ভিডিওগুলোতে দেখা যায়, শরিফ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা বাহিনীর কাছ থেকে দৌড়ে পালাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা; আর দূর থেকে শোনা যাচ্ছে গুলির শব্দ।
আরেকটি ভিডিওতে দেখা যায়, গাড়িতে বসা এক যাত্রী ঘটনার ভিডিও ধারণ করছেন। ওই গাড়িকে লক্ষ্য করে মোটরসাইকেলে থাকা নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যা গুলি চালাচ্ছেন।
বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, নরওয়েভিত্তিক এনজিও ইরান হিউম্যান রাইটস বলছে, এখন পর্যন্ত বিক্ষোভে ১৩৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এরপরেও দেশটির বিভিন্ন শহরে সরকার বিরোধী অন্দোলন বাড়ছেই।
এদিকে, বিক্ষোভকারীকদের বিরুদ্ধে কঠোর হচ্ছে সরকার। কর্তৃপক্ষের দাবি, বহিঃশত্রুর ইন্ধনে পরিকল্পিতভাবে নাশকতা চালানো হচ্ছে দেশটিতে।
- সূত্র: বিবিসি