রুশ সেনাদের বিরুদ্ধে নিষিদ্ধ মাইন ব্যবহার করছে ইউক্রেন
রুশ সেনাদের বিরুদ্ধে ইউক্রেন নিষিদ্ধ ল্যান্ডমাইন ব্যবহার করছে বলে প্রমাণ পেয়েছে নিউইয়র্ক ভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)। সংস্থাটির নতুন এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
এইচআরডব্লিউ'র দাবি, ২০২২ সালে ইউক্রেন আক্রমণকারী রুশ সেনাদের বিরুদ্ধে ইউক্রেনীয় বাহিনী কর্তৃক নির্বিচারে নিষিদ্ধ 'অ্যান্টি-পার্সোনাল' ল্যান্ডমাইন ব্যবহারের নতুন প্রমাণ পেয়েছে তারা।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচের আর্মস ডিরেক্টর স্টিভ গুজ এক বিবৃতিতে বলেছেন, "নিষিদ্ধ অ্যান্টি-পার্সোনেল মাইন ব্যবহারের তদন্ত করার যে প্রতিশ্রুতি ইউক্রেন সরকার দিয়েছে, তা বেসামরিক মানুষের নিরাপত্তার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।"
এর আগে, এ ধরনের নিষিদ্ধ অস্ত্র ব্যবহার না করা, ব্যবহারের বিষয়ে তদন্ত করা এবং দোষী ব্যক্তিদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার বিষয়ে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল ইউক্রেন সরকার। এইচআরডব্লিউ কিয়েভকে সেই প্রতিশ্রুতি মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছে।
তবে গত মে মাসে এক চিঠিতে নিষিদ্ধ মাইন ব্যবহারের বিষয়টি ইউক্রেন সরকারকে অবহিত করা হলেও এইচআরডব্লিউ'র ওই চিঠির জবাব দেয়নি কিয়েভ।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বার্তাসংস্থা রয়টার্সের অনুরোধে তাৎক্ষণিক কোনো সাড়া দেয়নি ওয়াশিংটনে ইউক্রেনের দূতাবাস।
এদিকে, সংঘাতের শুরু থেকেই রাশিয়ার অভিযোগ, নিষিদ্ধ মাইন ব্যবহার করছে ইউক্রেন। এমনকি চলতি বছরের জানুয়ারিতে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে এইচআরডব্লিউও একই অভিযোগ আনে। তখন বিষয়টি ইউক্রেনীয় কর্তৃপক্ষকে জানানো হলে, তদন্ত করার আশ্বাস দিয়েছিল তারা।
উল্লেখ্য, ১৯৯৭ সালে ল্যান্ডমাইনের ব্যবহার নিষিদ্ধে 'অ্যান্টি পার্সোনাল ল্যান্ডমাইন' সংক্রান্ত একটি আন্তর্জাতিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। চুক্তি অনুযায়ী, সম্মত দেশগুলোর জন্য মাইন ব্যবহার নিষিদ্ধের পাশাপাশি অস্ত্রের মজুদ ধ্বংস বাধ্যতামূলক করা হয়। ওই চুক্তিতে ২০০৫ সালে স্বাক্ষর করে ইউক্রেন। ফলে এ ধরনের অস্ত্র ব্যবহারের এখতিয়া নেই দেশটির।
এদিকে, রাশিয়া আন্তর্জাতিক ওই চুক্তিতে স্বাক্ষর করেনি।
এইচআরডব্লিউ'র প্রতিবেদন বলছে, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে আক্রমণ শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত ইউক্রেনজুড়ে কমপক্ষে ১৩ ধরনের অ্যান্টি-পার্সোনাল মাইন ব্যবহার করেছে রুশ বাহিনী। এতে বহু বেসামরিক লোক নিহত ও আহত হয়েছে।
রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাত শুরু হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত এ সংক্রান্ত ৪টি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ। সংস্থাটির প্রতিবেদনগুলোতে নিষিদ্ধ অস্ত্র ব্যবহারের তথ্য-প্রমাণ উঠে এসেছে।