পাকিস্তানে রাজনৈতিক সমাবেশে বিস্ফোরণে নিহত কমপক্ষে ৪০, আহত ১৩০
পাকিস্তানে একটি ইসলামি দলের সমাবেশে বিস্ফোরণে অন্তত ৪০ জন নিহত ও ১৩০ জনের বেশি আহত হয়েছেন। খবর রয়টার্স-এর।
রোববার (৩০ জুলাই) দেশটির উত্তর-পশ্চিম বাজাউর জেলায় জামিয়াত উলেমা-ই-ইসলাম-ফজল (জেইউআই-এফ) -এর এক সভায় ওই বিস্ফোরণ ঘটে।
পুলিশ এখনো বিস্ফোরণের কারণ জানতে পারেনি। জেলা পুলিশ কর্মকর্তা নাজির খান রয়টার্সকে বলেন, 'জেইউআই-এফ বাজাউরের খার শহরে একটি কর্মী সম্মেলনের আয়োজন করেছিল।'
তিনি বলেন, বাজাউর ও পার্শ্ববর্তী এলাকার হাসপাতালে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে। এসব হাসপাতালে বেশিরভাগ আহতদের নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
গত বছর তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি) এবং ইসলামাবাদের মধ্যে অস্ত্রবিরতি ভেঙ্গে যাওয়ার পর থেকে পাকিস্তানে ইসলামপন্থী জঙ্গিদের আক্রমণের পুনরুত্থান দেখা গেছে।
হতাহতের বিষয়টি নিশ্চিত করে দেশটির তত্ত্বাবধায়ক সরকারের তথ্যমন্ত্রী ফিরোজ শাহ জামাল বলেন, বাজাউর ও পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের হাসপাতালগুলোকে সর্বোচ্চ সতর্কতায় রাখা হয়েছে।
জিও নিউজ-এর সঙ্গে কথা বলার সময় তিনি বলেন, 'আমরা হেলিকপ্টারের মাধ্যমে গুরুতরভাবে আহত রোগীদের পেশোয়ার এবং অন্যান্য হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছি।'
'এ মুহূর্তে আমাদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার আহতদের চিকিৎসা প্রদান করা। বিস্ফোরণের স্থানটি ঘেরাও করে রাখা হয়েছে। পাকিস্তান সেনাবাহিনী এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠান আমাদেরকে সহায়তা করছে,' জামাল বলেন।
এদিকে, বাজাউর জেলা জরুরি কর্মকর্তা সাদ খান ডন ডটকমকে জানিয়েছেন, খার তহসিল এলাকার জেইউআই-এফ আমির মাওলানা জিয়াউল্লাহ জানও বিস্ফোরণে মারা গেছেন।
অন্যদিকে বাজাউর জেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ফয়সাল কামাল জানান, গুরুতর আহতদের সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টারের মাধ্যমে পেশোয়ারের লেডি রিডিং হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হচ্ছে।
বিস্ফোরণস্থলে উপস্থিত ডন ডটকম-এর প্রতিবেদক জানান, আহতদের মধ্যে একজন স্থানীয় সাংবাদিকও রয়েছেন।
টেলিভিশনের ফুটেজে বিস্ফোরণের পর অ্যাম্বুলেন্সে করে আহতদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সময় আতঙ্কিত লোকজন ঘটনাস্থলে জড়ো হতে দেখা গেছে। পরে পুলিশের বড় একটি দল এলাকাটি ঘিরে ফেলে।
রহিম শাহ নামক একজন প্রত্যক্ষদর্শী ডন ডটকমকে বলেন, বিস্ফোরণের সময় সম্মেলনে ৫০০ জনেরও বেশি মানুষ উপস্থিত ছিলেন। 'আমরা সবাই বয়ান শুনছিলাম। হঠাৎ শক্তিশালী বিস্ফোরণে আমি অজ্ঞান হয়ে পড়ি,' তিনি বলেন।
শাহ জানান, জ্ঞান ফিরে তিনি সব জায়গায় রক্ত দেখতে পান। 'মানুষ চিৎকার করছিল এবং এমনকি গুলিও ছোড়া হয়েছিল,' বলেন তিনি।
হামলার নিন্দা
জেইউআই-এফ-এর মিডিয়া সেল থেকে জারি করা এক বিবৃতিতে দলটির প্রধান মাওলানা ফজলুর রহমান এই ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছেন। তিনি প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ এবং খাইবার পাখতুনখোয়ার সরকারের কাছে হামলার তদন্ত দাবি করেন।
'আল্লাহ শহীদদের মর্যাদা বৃদ্ধি করুন,' রেহমান বলেন। এছাড়া তিনি আহতদের দ্রুত আরোগ্যের জন্য প্রার্থনা করছেন।
তিনি জেইউআই-এফ-এর কর্মীদের অবিলম্বে হাসপাতালে গিয়ে রক্তদানের জন্য আবেদন জানান।